আন্দোলনের মুখে সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ পর্যালোচনায় কমিটি করতে যাচ্ছে সরকার

'সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫' বাতিলের দাবিতে কর্মচারীদের লাগাতার আন্দোলনের মধ্যে এ অধ্যাদেশ পর্যালোচনায় একটি কমিটি গঠন করতে যাচ্ছে সরকার।
আইন ও বিচার বিভাগের সচিব শেখ আবু তাহেরকে প্রধান করে ১৩ সদস্যের এই কমিটি গঠন করা হবে বলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
কমিটিতে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সাতজন সচিব ও আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তিনজন প্রতিনিধিকে রাখা হবে।
সূত্র জানায়, সচিবালয়ে কর্মচারীদের লাগাতার আন্দোলনের মধ্যে মঙ্গলবার সকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশিদ বেশ কয়েকজন সচিবকে নিয়ে জরুরি সভা করেন। ওই সভায় সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ পর্যালোচনায় কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।
আন্দোলনরত কর্মচারীরা কর্মবিরতিতে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন, এমন খবর প্রকাশের পর এ কমিটি গঠন ও সচিবদের সাথে বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয় বলে জানা গেছে।
এদিকে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ আন্দোলনরত কর্মচারী নেতাদের আজ বেলা ২টায় বৈঠকে ডেকেছেন।
এ বিষয়ে কর্মচারীদের নেতা বাদিউল কবীর টিবিএসকে বলেন, 'ওই বৈঠকে ভূমি সচিব ছাড়াও আরো সাতজন সচিব উপস্থিত থাকবেন বলে আমাদের জানানো হয়েছে। সচিবদের সঙ্গে বৈঠকে ফলপ্রসূ আলোচনা হলে আমরা আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহার করব।'
এর আগে আজ মঙ্গলবার (২৭ মে) সকাল ১১টার দিকে সচিবালয়ের ৬ নম্বর ভবনের পাশে বাদামতলায় জড়ো হয়ে 'সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫' বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
তাদের প্রতিবাদ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সচিবালয়ে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছ। প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্রে আজ বিশেষায়িত বাহিনী সোয়াটের পাশাপাশি পাশাপাশি দায়িত্বে আনা হয়েছে বিজিবি সদস্যদের। মোতায়েন করা হয়েছে র্যাব সদস্যও।
সচিবালয়ের বাইরে দুটি আর্মড পার্সনেল ক্যারিয়ার (এপিসি) দাঁড় করিয়ে রাখতে দেখা গেছে।
সচিবালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলন কর্মসূচির মধ্যে আজ সচিবালয়ে দর্শণার্থী প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সচিবালয়ের গেটগুলোতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গণমাধ্যম কর্মীদেরও সচিবালয়ে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
সরকারি কর্মচারীদের আন্দোলনের মধ্যেই রোববার সরকারি কর্মচারী আইন সংশোধন করে নতুন অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। এর ফলে চার ধরনের অপরাধের জন্য সরকারি কর্মচারীদের শুধু নোটিশ দিয়েই চাকরিচ্যুত করা যাবে। কর্মচারীরা এর প্রতিবাদে গত শনিবার থেকে সচিবালয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু করেছেন।