বিশ্বের 'সবচেয়ে কঠিন' পরীক্ষা: ভারত ও চীনের সিভিল সার্ভিস নিয়োগ; পাশ করতে পারবেন?

জার্মান বুদ্ধিজীবী ম্যাক্স ওয়েবার মনে করতেন, বৃহৎ সমাজ সংগঠনের জন্য আমলাতন্ত্রই শ্রেষ্ঠ পদ্ধতি। আর চীন ও ভারতের চেয়ে বড় সমাজ তো আর হয় না—বিশ্বের এক-চতুর্থাংশেরও বেশি মানুষের বাস করে এ দুদেশে। আমলাদের সিদ্ধান্তেই নির্ধারিত হয় দেশ মানুষের জীবনযাত্রা।
গত কয়েক দশকে দেশ দুটির বেসরকারি খাতের প্রসার ঘটলেও সরকারি চাকরির—সিভিল সার্ভিস—কদর কিন্তু এতটুকুও কমেনি। ভারতে সরকারি চাকরি, বিশেষ করে দেশ চালানো কেন্দ্রীয় সরকারি চাকরি, এখনও সমৃদ্ধি, মর্যাদা এবং ভালো বিয়ের নিশ্চিত টিকিট। আর অর্থনীতির গতি খানিকটা কমে যাওয়ায় চীনে উচ্চ পদের সরকারি চাকরি ফের জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এমনকি ফ্যাশনেও জায়গা করে নিয়েছে এই প্রবণতা—অনেক তরুণ-তরুণী এখন আমলাদের অনুকরণে 'ক্যাডার-স্টাইলে'র পোশাক পরচেন—যেমন হালকা রঙের উইন্ডব্রেকার ও উঁচু কোমরের স্যুটের প্যান্ট।
তবে এ দুই দেশের আমলাতন্ত্রের মধ্যে সবচেয়ে বড় মিল সম্ভবত তাদের প্রার্থী বাছাইয়ের পদ্ধতির কঠোরতায়। নির্মম ও পরিশ্রমসাধ্য পরীক্ষা দিয়ে উঠে আসতে হয় কর্মকর্তাদের। এই পরীক্ষাগুলো কতটা কঠিন, তার একটু ধারণা দিতে 'দি ইকোনমিস্ট' চীনের সিভিল সার্ভিসের প্রথম ধাপের পরীক্ষার একটি প্রশ্ন তুলে ধরেছে:
কবি বাই জুয়ি-র একটি কবিতায় আছে:
'ঘরে বানানো মদের ওপর সবুজ পিপঁড়ে, লাল মাটির উনুনে আগুন জ্বলছে। সন্ধ্যার আকাশে তুষার জমার আভাস, আজ রাতে এক পেয়ালা চলবে না?'
এই কবিতা নিয়ে নিচের কোন বক্তব্যটি সঠিক?
ক) মদ তৈরি নির্ভর করে গাঁজন প্রক্রিয়ার ওপর
খ) 'সবুজ পিপঁড়ে' বলতে মদে ভোজ্য রং মেশানো বোঝানো হয়েছে
গ) উনুন জ্বলার ফলে অভ্যন্তরীণ শক্তি রাসায়নিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়
ঘ) তুষার গলে পানি হওয়ার প্রক্রিয়ায় তাপ উৎপন্ন হয়
এ ধরনের প্রশ্ন আসলে বিশাল এক প্রক্রিয়ার সামান্য একটি অংশমাত্র। ভারতে যারা মে বা জুন মাসে প্রথম ধাপের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়, তাদের বছরের শেষদিকে দ্বিতীয় পরীক্ষায় বসতে হয়। দ্বিতীয় পরীক্ষায় ৯টি আলাদা পত্রে (পেপার) মোট ২৭ ঘণ্টার পরীক্ষা দিতে হয়।
চীনে লিখিত পরীক্ষা একদিনেই সম্পন্ন হয়, নভেম্বর বা ডিসেম্বরের শুরুর দিকে। সেখানে প্রার্থীরা প্রথমে বহুনির্বাচনী প্রশ্নে (এমসিকিউ) পরীক্ষা দেন। এরপর একাধিক প্রবন্ধ লিখতে দিয়ে নীতিনির্ধারণী বিষয়ে প্রার্থীর জ্ঞান ও লেখার দক্ষতা যাচাই করা হয়। শেষ ধাপে চূড়ান্ত বাছাইয়ের জন্য দুই দেশেই সশরীরে মৌখিক পরীক্ষার আয়োজন করা হয়।
এই কঠিন অগ্নিপরীক্ষায় উৎরাতে পারেন সামান্য কয়েকজনই। গত বছর ভারতের শীর্ষ স্তরের সিভিল সার্ভিসে যোগ দিতে আবেদন করেছিলেন ১১ লাখ মানুষ। কিন্তু চাকরি পান মাত্র ১ হাজার প্রার্থী—অর্থাৎ মাত্র ০.২ শতাংশ।
চীনে গত বছর জাতীয় সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার জন্য রেকর্ড ৩৪.১ লাখ মানুষ নিবন্ধন করে প্রাথমিক বাছাইয়ে উত্তীর্ণ হয়—যা ২০১৪ সালের দ্বিগুণেরও বেশি। তবে গত বছর চাকরি পান মাত্র ৩৯ হাজার ৭০০ জন—অর্থাৎ মোট প্রার্থীর মাত্র ১.৫ শতাংশ।
দুই দেশেই এই পরীক্ষাগুলো প্রার্থী বাছাইয়ের সবচেয়ে ন্যায্য ও নিরপেক্ষ পদ্ধতি হিসেবে বিবেচিত। ভারতে এই পরীক্ষা ব্যবস্থা চালু করেছিল ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসকেরা। আগের তোষণভিত্তিক নিয়োগব্যবস্থা নিয়ে ভারতীয়দের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিলে এ ব্যবস্থা চালু হয়েছিল।
চীনে 'গুওকাও' নামে পরিচিত এই পরীক্ষা নেওয়া হয় প্রাচীন 'কেজু' ব্যবস্থার আদলে, যার গোড়াপত্তন হয়েছিল ৫৮৭ সালে। তুলনামূলকভাবে দুর্নীতিমুক্ত ও মেধাভিত্তিক পরীক্ষাপদ্ধতি হওয়ার কারণে কেজু প্রশংসিত ছিল।
কিছু শিক্ষাবিদ বলেন, এই পরীক্ষার মাধ্যমে সমাজে ওপরে ওঠার সুযোগ এতটাই সমাদৃত হয়ে উঠেছিল যে ১৯০৫ সালে কেজু ব্যবস্থা বন্ধ হওয়ার পর দাঙ্গা বেধে যায়। তার জেরেই কয়েক বছর পর চীনের শেষ রাজবংশ কিং সাম্রাজ্যের পতন ঘটে।
চীনের এই সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা দেশটির বিবর্তনে গভীর প্রভাব রেখেছে। কেজু নিয়ে একটি বই লেখা অর্থনীতিবিদ ইয়াশেং হুয়াং একে বলেছেন 'চীনের একনায়কতন্ত্রের নোঙর'। এই পরীক্ষা ছিল অকল্পনীয় রকমের কঠিন—প্রয়োজন হতো আজীবনের মনোনিবেশ ও অধ্যবসায়ের। কেউ কেউ পাঁচ বছর বয়স থেকেই শুরু করতেন প্রস্তুতি। ফলে সমাজের সবচেয়ে মেধাবী ও উচ্চাকাঙ্ক্ষী ব্যক্তিরা নতুন কোনো চিন্তার জন্ম দেওয়ার সুযোগ পেতেন না। ১৬ শতকের সাহিত্যিক গুই ইউগুয়াং কয়েক দশকের ব্যর্থতার পর অবশেষে ৫৯ বছর বয়সে এ পরীক্ষার চূড়ান্ত পর্বে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। এবং এর কিছুদিন পরই তার মৃত্যু ঘটে।
বর্তমান গুওকাও পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩৫ বছর। এ নিয়োগপদ্ধতি রাষ্ট্রের জন্য এখনও গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। ১৯৭০-এর দশকে চীন বাজারমুখী সংস্কার শুরুর পর জটিল ও উন্মুক্ত সমাজে আমলাতন্ত্র আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। ফলে প্রার্থীদের আইন ও নীতিমালা-সংক্রান্ত জ্ঞান যাচাই করতে গুওকাওয়ের কাঠামোও বদলাতে শুরু করে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরীক্ষার প্রশ্ন আরও বাস্তবমুখী হয়ে ওঠে। যুক্তিবোধ ও সংখ্যাতাত্ত্বিক দক্ষতায় যাচাই শুরু হয়। কিন্তু গত কয়েক বছরে গুওকাও দলীয় আনুগত্যের পরীক্ষাও হয়ে উঠেছে। পরীক্ষায় শি জিনপিংয়ের চিন্তাধারা নিয়ে প্রশ্নের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।
চীনের সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার প্রবন্ধ রচনার প্রশ্ন:
'নিজের কাজের ক্ষেত্রে নিজেকে সমর্পণ করুন, অবিরাম "পরিমার্জন" ও "সংস্কার" করুন, এবং নীরবে মানুষের জন্য উষ্ণ ও স্থিতিশীল জীবনব্যবস্থা গড়ে তুলতে অবদান রাখুন, আর এই পথেই অবিচলভাবে এগিয়ে চলুন।'—এই উক্তির আলোকে বাস্তব উদাহরণ ও অভিজ্ঞতা দিয়ে নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি ও শিরোনাম দিয়ে একটি প্রবন্ধ লিখুন।
• অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ আইন বাস্তবায়নের সাফল্য, সীমাবদ্ধতা এবং উন্নতির জন্য পরামর্শ নিয়ে একটি প্রতিবেদন লিখুন।
• প্রশাসনিক আইন প্রয়োগের তিনটি মাত্রা—'ক্ষমতা', 'যুক্তি' ও 'স্বার্থ'—গভীর বিশ্লেষণ করুণ। বাস্তবজীবনের অভিজ্ঞতা ও উদাহরণ দিয়ে নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি ও শিরোনামসহ প্রবন্ধ লিখুন।
বিপরীতে ভারতের সিভিল সার্ভিস তুলনামূলকভাবে অরাজনৈতিকই থেকে গেছে। ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পরও দেশটির নেতারা ব্রিটিশ আমলের ইম্পেরিয়াল সিভিল সার্ভিস-এর 'ইস্পাত কাঠামো' (স্টিল ফ্রেম) ধরে রাখার সিদ্ধান্ত নেন; তবে আমলাদের ভূমিকায় পরিবর্তন আনেন। ঔপনিবেশিক শাসন টিকিয়ে রাখার পরিবর্তে আমলাদের ভূমিকা হয়ে ওঠে দেশের উন্নয়ন নিশ্চিত করা। ১৯৭৯ সাল নাগাদ এই চাকরিতে প্রবেশের প্রতিযোগিতা এতটাই তীব্র হয়ে ওঠে যে, প্রার্থীদের জ্ঞানের ব্যাপ্তি যাচাইয়ে দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষা চালু হয়। ২০১২ সালে পরীক্ষায় যুক্ত হয় 'নৈতিকতা'-বিষয়ক আলাদা পত্র। তবে ভারতের সিভিল সার্ভিসে মর্যাদা আর কদর যেমন আছে, তেমনি দুর্নীতির অভিযোগও পিছু ছাড়েনি। এই যেমন, সম্প্রতি উড়িষ্যা রাজ্যে এক তরুণ আমলার বিরুদ্ধে একজন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ১০ লাখ রুপি ঘুস নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। (তিনি অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন)।
ভারতের সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা প্রবন্ধ রচনার প্রশ্ন:
• নৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে আইন, নিয়ম ও বিধির চেয়ে বিবেকই কি নির্ভরযোগ্য চালিকাশক্তি? আলোচনা করুন।
• শিশুদের জড়িয়ে ধরা বা আদর করার জায়গা এখন দখল করে নিচ্ছে মোবাইল ফোন। শিশুর সামাজিকীকরণে এর প্রভাব কী, আলোচনা করো।
• চিন্তা করা একটি খেলার মতো; প্রতিপক্ষ দল না থাকলে এ খেলা শুরুই হয় না। আলোচনা করুন।
দুই দেশেই এ পরীক্ষায় সাফল্যের জন্য প্রয়োজন অমানুষিক পরিশ্রম। বহু পরীক্ষার্থী পরীক্ষার আগের এক বছর, কখনও কখনও কয়েক বছর, কোনো কাজই করেন না। যারা চাকরি করেন, তারা পড়াশোনা করেন খুব ভোরে অথবা গভীর রাতে। হাজার হাজার প্রার্থী কোচিং সেন্টারের সাহায্য নেন। সেরা কোচিং সেন্টারগুলোতে পূর্ণকালীন থাকা-খাওয়া ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও আছে।
উদাহরণস্বরূপ, ভারতের মধ্যাঞ্চলের ছোট শহর থেকে দিল্লিতে পাড়ি জমিয়েছেন শিখা সিং—শুধু অন্য পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে থেকে পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য। তিনবার পরীক্ষায় ব্যর্থ হওয়ার পরও তিনি দমে যাননি। প্রত্যেক পরীক্ষার পর বাড়িয়েছেন পরিশ্রম। সম্প্রতি চতুর্থবার পরীক্ষা দেওয়ার আগে শিখা দিনে দশ ঘণ্টা করে পড়েশোনা করেছেন। তবু তার ভয়, এতেও কি পরীক্ষার বিস্তৃত বিষয়ের সবটুকু আয়ত্ত হবে?
চীনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় জিয়াংসি প্রদেশের সম্ভাব্য সিভিল সার্ভিস প্রার্থী ঝং-ও প্রায় একই পথে হেঁটেছেন। ২০২৩ সালে চাকরি ছেড়ে বাবা-মায়ের কাছে ফিরে এসে দিনরাত পড়াশোনা চালিয়ে গেছেন তিনি। তবু তার মনে সংশয়: যে পরীক্ষায় 'সহজাত মেধা' যাচাই করা হয়, সেখানে শুধু প্রস্তুতিই হয়তো যথেষ্ট হবে না।
কিন্তু পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও পরিশ্রমের প্রকৃত মূল্য কি মেলে? যারা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন, তারা পান তাৎক্ষণিক ও দীর্ঘমেয়াদি সুবিধা—আবাসন, পেনশন ও (অনেক ক্ষেত্র) আজীবন চাকরির নিশ্চয়তা। চাকরিতে যোগ দেওয়ার পর তারা পান রাজকীয় মর্যাদা। তাদের আদেশ পালনের জন্য থাকে একদল কর্মী এবং তাদের বসার জন্য থাকে সাদা তোয়ালে দিয়ে চিহ্নিত একটি বিশেষ চেয়ার।
ভারতে গবেষণায় দেখা গেছে, পরীক্ষায় ভালো ফলের সঙ্গে আমলাতান্ত্রিক দক্ষতার কিছু সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু দুই দেশেই সমালোচকরা মনে করেন, এই পরীক্ষাগুলো ভুল মানদণ্ডে প্রার্থীদের বাছাই করে। মুখস্থবিদ্যা ও পরীক্ষার ভিত্তিতে প্রার্থীদের বাচাই করতে গিয়ে প্রকৃত নীতিনির্ধারণী দক্ষতা—যেমন ব্যবস্থাপনা, দলগত কাজ কিংবা যোগাযোগ—যাচাই করা হয় না। ফলে আমলাতন্ত্রের পারফরম্যান্স খারাপই থেকে যায়। বিশ্বব্যাংকের সরকারি কার্যকারিতার সূচকে চীন ও ভারত বৈশ্বিকভাবে যথাক্রমে ৭৪তম ও ৬৮তম পার্সেন্টাইলে অবস্থান করছে।
দুই দেশই এখন অন্য উপায়ে কর্মী নিয়োগের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। চীন এখন কিছু প্রার্থীকে পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে নয়, বরং তাদের অভিজ্ঞতা অনুসারে নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য নিয়োগ দিচ্ছে। ভারতও 'ল্যাটারাল এন্ট্রি' নামে একটি স্ক্রিম চালু করেছে, বেসরকারি খাতের বিশেষজ্ঞদের সরকারি চাকরিতে নিয়োগের জন্য। তবে এই উদ্যোগগুলো এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। সরকারি খাতে জনবল নিয়োগের ভিত্তি হয়ে থাকবে সেই পুরোনো পরীক্ষা ব্যবস্থাই।
এ বাছাই প্রক্রিয়ার গুণাগুণ নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে, তবে এর মানবিক ও অর্থনৈতিক খরচ সহজেই পরিমাপ করা যায়। যেসব চাকরিপ্রার্থী ব্যর্থ হন, তারা বারবার চেষ্টা চালিয়ে যান। বারবার আবেদন ও প্রত্যাখ্যানের এই চক্র তাদের মনোবল ভেঙে দেয়। পরীক্ষায় ব্যর্থ হওয়ার হতাশায় দুদেশেই প্রায়ই আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে।
ভারতের শিখা সিং মনে করেন, বারবার ব্যর্থতার কারণে তার সামাজিক মর্যাদা কমে গেছে। চীনা পরীক্ষার্থী ঝংও উদ্বেগে ভুগছেন। তিনি বলেন, 'পরীক্ষায় পাশ তো করেন হাতেগোনা কয়েকজন। আমি ভাবি, যারা ব্যর্থ হন, তাদের কী হয়?'
এই প্রশ্নটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তারুণ্যে বহু বছর ধরে কাজের বদলে শুধু পড়াশোনায় ডুবে থাকাটা দেশের জন্য অর্থনৈতিক ক্ষতি। এসব পরীক্ষা কলেজ থেকে স্নাতক করা তরুণদের চাকরিতে ঢুকতে বিলম্ব ঘটায়, ফলে তাদের দীর্ঘমেয়াদি ভোগ কমে যায়। আর গভীর রাত জেগে দিনরাত এক করে যে বিষয়গুলো মুখস্থ করা হয়, পরীক্ষা শেষ হয়ে গেলে বাস্তবজীবনে সেগুলোর কোনো উপযোগিতা থাকে না বললেই চলে।
বাঘের প্রজাতির খুঁটিনাটি কিংবা শি জিনপিংয়ের চিন্তাধারার বিস্তারিত হয়তো সরকারি চাকরির তোয়ালে-মোড়ানো চেয়ার এনে দিতে পারে, কিন্তু বেসরকারি খাতে সম্ভবত এসবের খুব একটা দাম নেই।