চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন গোপালগঞ্জে গুলিবিদ্ধ রমজান, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫

গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ সমর্থকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হওয়া আরেক ব্যক্তি মারা গেছেন। এ নিয়ে ওই সংঘর্ষে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল পাঁচজনে।
মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম রমজান মুন্সী। তিনি সদর উপজেলার থানাপাড়া এলাকার আকবর মুন্সীর ছেলে ও পেশায় একজন রিকশাচালক ছিলেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মাসুদ আলম বিষয়টি টিবিএসকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১টা ৪৫ মিনিটে রমজান মারা যান। তার মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে এ ঘটনায় নিহত হন, নিষিদ্ধ যুবলীগ সদস্য দীপ্ত সাহা (২৫), থানাপাড়া এলাকার রমজান কাজী (২৪), সদর উপজেলার আড়পাড়ার ইমন তালুকদার (১৮), এবং টুঙ্গিপাড়া এলাকার ইদ্রিস মোল্লার ছেলে সোহেল মোল্লা (৪১)।
নিহতের ভাই হীরা মুন্সী ইউএনবি-কে জানান, 'বুধবার ঘটনার দিন গোপালগঞ্জ সদর এলাকায় একটি সিনেমা হলের কাছে যাত্রী নামিয়ে বাড়ি ফেরার পথে সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে রমজান। এ সময় গুলিবিদ্ধ হন তিনি।'
পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাতেই তাকে ঢামেকে স্থানান্তর করা হয়।
উল্লেখ্য, বুধবার গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় এনসিপির পূর্বঘোষিত সমাবেশকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ, নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ কর্মী এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এতে পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ৫০ জন আহত হন।
এ ঘটনায় ৭৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ৫০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে অন্তত ৪৫ জনকে।
বুধবার পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় স্থানীয় প্রশাসন প্রথমে সদর উপজেলায় ১৪৪ ধারা জারি করে এবং পরে বুধবার রাত ৮টা থেকে পরবর্তী ২২ ঘণ্টার জন্য কারফিউ ঘোষণা করে।
বৃহস্পতিবার কারফিউ শেষ হওয়ার আগে তা আবারও অনির্দিষ্টকালের জন্য বাড়ানো হয়। তবে প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টার জন্য তা শিথিল রাখা হচ্ছে।
গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুক্রবার সকাল ১১টা পর্যন্ত এবং এরপর দুপুর ২টা থেকে পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত কারফিউ বহাল থাকবে বলে জানায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
কারফিউ চলাকালে গোপালগঞ্জ শহরে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাব সদস্যদের টহল জোরদার করা হয়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষকে ঘর থেকে না বের হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এদিকে সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনা তদন্তে সরকারের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।