‘বেবি শার্ক’ গান নকলের অভিযোগ নাকচ, নির্দোষ দক্ষিণ কোরিয়ান প্রযোজকরা

জনপ্রিয় গান 'বেবি শার্ক'-এর প্রযোজকরা মার্কিন সুরকারের কাজ নকল করেছে, এমন অভিযোগ খারিজ করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার সর্বোচ্চ আদালত। এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ছয় বছর ধরে চলা এই আইনি লড়াই শেষ হলো।
শিশুদের প্রিয় এই গানটির 'ডু ডু ডু ডু ডু ডু' অংশসহ ইউটিউবে এটি এখন পর্যন্ত ১৬ বিলিয়নেরও বেশি বার দেখা হয়েছে।
২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের শিশুতোষ গায়ক জোনাথান রাইট এই অংশটির শিশুদের লোকগানভিত্তিক একটি সংস্করণ রেকর্ড করেছিলেন। তারপর, ২০১৬ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার পিঙ্কফং কোম্পানি এর নিজস্ব সংস্করণ প্রকাশ করে।
২০১৯ সালে জোনাথন রাইট, যিনি জনি অনলি নামেও পরিচিত দাবি করেন, তিনি 'বেবি শার্ক'-এর কপিরাইটের মালিক এবং পিংকফং তার গান নকল করেছে। রাইট ২০১৯ সালে নিজের সংস্করণটি ইউটিউবে প্রকাশ করেছিলেন, যেখানে শিশুদের সঙ্গে হাত দিয়ে হাঙরের মুখের ভঙ্গি করে গান গাওয়া হয়েছিল।
তিনি দাবি করেন, পিঙ্কফং-এর সংস্করণ তার কাজের সঙ্গে পুরোপুরি মিলে গেছে এবং এজন্যে তিনি প্রায় ২১ হাজার ৬০০ মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ চান।
কিন্তু পিঙ্কফং এর যুক্তি ছিল, তাদের সংস্করণ মূল লোকগানের একটি সাজানো রূপ, যা সবাই ব্যবহার করতে পারে।
এদিকে আদালত রায় দিয়েছে, রাইটের সংস্করণকে মৌলিক বা সৃজনশীল কাজ বলা যাবে না। কারণ এই গান বহু বছর ধরেই শিশুদের লোকগান হিসেবে প্রচলিত ছিল এবং এতে তেমন কোনো নতুনত্ব নেই।
পিঙ্কফং এর 'বেবি শার্ক' গান ইউটিউবে প্রকাশের পরপরই দ্রুত ভাইরাল হয়ে ওঠে। ভিডিওতে শিশুদের নাচ শেখানোর জন্য হাতের ইশারা দেখানো হয়।
২০২০ সালে, কোভিড মহামারীর সময় 'বেবি শার্ক' ইউটিউবে সবচেয়ে বেশি দেখা ভিডিওতে পরিণত হয় এবং সাত বিলিয়ন ভিউ পায়। এক বছরেরও বেশি সময়ে এটি ইউটিউবে ১০ বিলিয়ন ভিউ অতিক্রম করা প্রথম ভিডিও হয়ে ওঠে।
রাইট জানান, প্রথমে তিনি ভেবেছিলেন গানটি শিশুদের লোকগান হিসেবে প্রচলিত হওয়ায় যে কেউ ব্যবহার করতে পারবে।
কপিরাইট মামলা করার ধারণা তখনই আসে, যখন তিনি জানতে পারেন দক্ষিণ কোরিয়ার বিরোধী রাজনৈতিক দল পিপল পাওয়ার পার্টি-এর প্রচারে 'বেবি শার্ক' ব্যবহারের সময় পিঙ্কফঙ আইনি পদক্ষেপের হুমকি দিয়েছিল।
ধারণা করা হয়, গানটির উৎস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৭০-এর দশকে। তবে 'বেবি শার্ক' বহু বছর ধরে বিভিন্ন দেশে গাওয়া হতো। ২০১০ সালে জার্মানিতে 'ক্লাইনার হাই' নামে এর একটি সংস্করণ ভাইরাল হয়েছিল।
পিঙ্কফং এর সংস্করণের আগে 'বেবি শার্ক'-এর আন্তর্জাতিক সংস্করণও ছিল, যেমন ফরাসি 'বেবে রেকুইন' এবং জার্মান ভাষায় 'লিটল শার্ক'।
২০০৭ সালে ইউরোপে এগুলো ভাইরাল হয়, তবে কোনোটিই পিঙ্কফং এর মতো সাফল্য অর্জন করতে পারেনি।