ইউক্রেনকে 'আক্রমণাত্মক' অস্ত্র দেওয়ার পরিকল্পনা ট্রাম্পের

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার ইউক্রেনকে অস্ত্র দেওয়ার একটি নতুন পরিকল্পনা ঘোষণা করবেন, যাতে আক্রমণাত্মক অস্ত্রও থাকতে পারে বলে 'অ্যাক্সিওস'-কে জানিয়েছেন দুইজন সংশ্লিষ্ট সূত্র।
ট্রাম্প এতদিন যুদ্ধ বাড়ার আশঙ্কায় ইউক্রেনকে শুধু প্রতিরক্ষামূলক অস্ত্র দেওয়ার কথাই বলে এসেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র, ইউক্রেন ও ইউরোপীয় কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, নতুন এই অস্ত্র যুদ্ধের গতি বদলে দিতে পারে এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করতে পারে।
অ্যাক্সিওসকে ওই দুই সূত্র আরও জানান, পরিকল্পনায় এমন দীর্ঘ-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র থাকতে পারে যেগুলো রাশিয়ার গভীরে আঘাত হানতে সক্ষম, এমনকি মস্কোতেও। তবে তারা কেউই নিশ্চিতভাবে জানাতে পারেননি, এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে কি না।
সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম অ্যাক্সিওস-কে বলেন, 'পুতিনের ওপর ট্রাম্প খুবই ক্ষুব্ধ। তিনি যেটা ঘোষণা করতে যাচ্ছেন, সেটা অনেক আক্রমণাত্মক হবে।'
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুত্তের বৈঠকের পর নতুন এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী, ইউরোপীয় দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি অস্ত্র কিনে তা ইউক্রেনকে দেবে।
হোয়াইট হাউস এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
দুই সপ্তাহ আগে ন্যাটো সম্মেলনের সময় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি প্রথম প্রস্তাবটি দিয়েছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জানান, সেই সম্মেলনে ট্রাম্প ও জেলেনস্কির বৈঠকটি এখন পর্যন্ত তাদের মধ্যে সবচেয়ে ভালো আলোচনা।
একজন মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, 'জেলেনস্কি এবার স্বাভাবিক মানুষের মতো এসেছিলেন, পাগলের মতো না। উনি ন্যাটোতে থাকার মতো পোশাক পরে এসেছিলেন। তার সঙ্গে যারা ছিলেন, তারাও স্বাভাবিক মানুষ বলে মনে হয়েছে। ফলে ভালো কথা হয়েছে।'
২০২২ সালের পর এই প্রথমবার সম্মেলনে জেলেনস্কিকে স্যুট পরিহিত অবস্থায় দেখা যায়।
গত দুই সপ্তাহে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন যুদ্ধবিরতির দিকে না গিয়ে বরং কিয়েভসহ বিভিন্ন শহরে হামলা বাড়ানোয় ডোনাল্ড ট্রাম্প অনেক বিরক্ত হয়ে পড়েছেন।
৩ জুলাই ট্রাম্পের সাথে ফোনালাপে যুদ্ধ আরও তীব্র করার পরিকল্পনার কথা স্পষ্টভাবে জানান পুতিন। এ কথোপকথন ট্রাম্পকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দিকে ঠেলে দেয়।
পুতিন জানান, আগামী ৬০ দিনের মধ্যে ইউক্রেনের যেসব অঞ্চলে রাশিয়ার শক্তিশালী অবস্থান রয়েছে, সেখানে প্রশাসনিক সীমা পর্যন্ত দখল নেওয়ার চেষ্টা চালাবেন তিনি।
এ সম্পর্কে অবগত এক সূত্র জানান, ফোনালাপের পর ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁকে ট্রাম্প বলেন, 'ও (পুতিন) সবটা দখল করতে চায়।'
এরপর ট্রাম্পের নতুন অস্ত্র পরিকল্পনা শুধু চিন্তার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, তা বাস্তব রূপ নিতে শুরু করে।
রোববার সন্ধ্যায় ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ইউরোপের দেশগুলোর মাধ্যমে তিনি ইউক্রেনে অত্যাধুনিক কিছু অস্ত্র পাঠাবেন। এর মধ্যে থাকবে প্যাট্রিয়ট আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও থাকবে।
তিনি আরও বলেন, 'এই অস্ত্রের দাম ইউরোপের দেশগুলো আমাদের শতভাগ পরিশোধ করবে। এটা আমাদের জন্য ব্যবসা হবে।'
ট্রাম্প জানান, শান্তি চাওয়ার কথা বলার পরও পুতিন হামলা বাড়িয়েছেন। এ জন্য তিনি পুতিনের ওপর 'খুবই হতাশ'।