সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক ভিটা না ভাঙার অনুরোধ ভারতের, সংস্কারে সহায়তার প্রস্তাব

বাংলাদেশে কিংবদন্তি চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষদের স্মৃতিবিজড়িত বাড়িটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। বাংলার তিন প্রজন্মের অন্যতম সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের সাথে জড়িত বাড়িটি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্তে ভারতের সরকার গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
ময়মনসিংহে অবস্থিত শিশু সাহিত্যিক ও প্রকাশক উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরীর পৈতৃক ভিটা এটি। উপেন্দ্রকিশোর ছিলেন কবি সুকুমার রায়ের বাবা এবং কিংবদন্তি চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায়ের দাদা। বর্তমানে বাড়িটির মালিক বাংলাদেশ সরকার।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (এমইএ) বাড়িটি ভেঙে ফেলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে। মন্ত্রণালয়টি বলেছে, এই বাড়িটি বাংলা সাংস্কৃতিক পুনর্জাগরণের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা। বাড়িটি ভেঙে ফেলার পরিবর্তে তা সংরক্ষণ করে একটি সাহিত্য জাদুঘরে রূপান্তর করা যেতে পারে, যা উভয় দেশের যৌথ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে সম্মান জানাবে। মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, যদি এমন কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়, তবে ভারত সরকার প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে প্রস্তুত।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, এত স্মৃতিবিজড়িত একটি স্থাপনা ভেঙে ফেলা 'দুঃখজনক'। তিনি বাংলাদেশের সরকার এবং ভারতের সরকার উভয়কে ঐতিহাসিক এই স্থানটি রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানান। রায় পরিবারকে তিনি বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের 'অগ্রদূত' হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক্স-এ লিখেছেন, তিনি গণমাধ্যমের খবরে জানতে পেরেছেন যে বাংলাদেশের ময়মনসিংহ শহরে প্রখ্যাত লেখক ও সম্পাদক উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর পৈতৃক ভিটা ভেঙে ফেলা হচ্ছে। খবরে বলা হয়েছে, ভাঙার কাজ ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। তিনি এটিকে অত্যন্ত দুঃখজনক খবর হিসেবে বর্ণনা করেছেন। রায় পরিবারকে তিনি বাংলার সংস্কৃতির অন্যতম প্রধান 'অগ্রদূত' হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
বাড়িটি প্রায় এক দশক ধরে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে ছিল এবং জীর্ণদশায় পরিণত হয়েছিল। এক সময় এখানে ময়মনসিংহ শিশু একাডেমি পরিচালিত হতো, তবে পরে তা পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। স্থানীয় গণমাধ্যমকে এক বাংলাদেশি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ওই স্থানে আধা-কংক্রিটের নতুন ভবন নির্মাণ করে পুনরায় শিশু একাডেমির কার্যক্রম শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে।