পাকিস্তানে দেয়াল টপকে নারী ও দুই শিশুর ওপর পোষা সিংহের হামলা, গ্রেপ্তার মালিক

পাকিস্তানের লাহোর শহরে একটি পোষা সিংহ বাড়ির ওয়াল টপকে পালিয়ে যায় এবং পথে এক নারী ও দুই শিশুকে আক্রমণ করে। এ ঘটনায় সিংহের মালিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার জোহান টাউন এলাকায় একটি খামার থেকে পালিয়ে সিংহটি গলির ভেতরে ওই নারী এবং ৫ ও ৭ বছর বয়সী দুই শিশুকে আঘাত করে। তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
পুলিশ প্রকাশিত সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, সিংহটি কংক্রিটের দেয়াল থেকে লাফিয়ে পেছন থেকে এক নারীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং তাকে মাটিতে ফেলে দেয়। এক ব্যক্তি সিংহ পালিয়ে যাওয়া খামার থেকে হাতে কিছু নিয়ে বেরিয়ে এসে সিংহটিকে নারীর কাছ থেকে তাড়িয়ে দেন। এরপর সিংহটি আরও দূরে গিয়ে সেখানে থাকা দুই শিশুকে আক্রমণ করে।
অ্যাসোসিয়েট প্রেস সংবাদ সংস্থার খবর অনুযায়ী, সিংহের আক্রমণে ওই নারী ও দুই শিশুর মুখমণ্ডল এবং বাহুতে আঘাত লেগেছে, তবে তাদের অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল।
লাহোর পুলিশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে জানিয়েছে যে, সিংহটি খামারের একটি খোলা খাঁচা থেকে পালিয়ে গিয়েছিল। মালিকরা সিংহটিকে ধরে নিয়ে যান, দ্রুত একটি গাড়িতে তুলে অন্য জেলায় লুকিয়ে পড়েন।
লাহোর পুলিশের অপারেশনসের ডেপুটি ইনস্পেক্টর জেনারেল মুহাম্মদ ফয়সল কামরান বলেছেন, শুক্রবার সকালে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সিংহটিকে উদ্ধার করে বন্যপ্রাণী কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
লাহোর পুলিশ তিনজনকে পুলিশ সেলে আটকানো অবস্থায় একটি ছবি এবং সিংহটিকে খাঁচায় রাখা ভিডিও প্রকাশ করেছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে যে, সিংহটির মালিকের সিংহ পালনের লাইসেন্স ছিল না এবং তাদের বিরুদ্ধে বন্যপ্রাণী আইনের আওতায় মামলা করা হবে। এই আইনের আওতায় তাদের সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড বা প্রায় ১৭ হাজার ৫০০ ডলারের জরিমানা হতে পারে।
পাঞ্জাবের বন্যপ্রাণী ও পার্ক বিভাগ এর চীফ রেঞ্জার সৈয়দ কামরান বুখারী সিএনএন-কে বলেন, বিভাগ তিনজনের বিরুদ্ধে "সবচেয়ে কঠোর শাস্তি" চাইছে। বুখারী বলেন, তারা সম্পূর্ণ অবৈধভাবে সিংহটিকে বন্দি করে রেখেছিল।
পাকিস্তানে বন্য বিড়াল, যেমন সিংহ, পোষা প্রাণী হিসেবে রাখা একটি সামাজিক মর্যাদার প্রতীক হিসেবে দেখা হয় এবং এটি অস্বাভাবিক নয়। তবে সিংহ পালনের জন্য লাইসেন্স থাকা বাধ্যতামূলক এবং বড় বিড়ালগুলোকে শহরের বাইরে রাখতে হয়।
পুলিশের ডেপুটি ইনস্পেক্টর কামরান বলেন, এই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনাটি দেখায় কিভাবে বন্যপ্রাণী অনেক সময় লাইসেন্স বা অনুমতি ছাড়াই বেআইনিভাবে রাখা হয়, যার ফলে অনেক মানুষের জীবন ঝুঁকিতে পড়ে।
পাঞ্জাব সরকার রোববার ঘোষণা দিয়েছে, প্রদেশব্যাপী লাইসেন্স ছাড়া সিংহ পালনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলবে। এ পর্যন্ত ১৮টি সিংহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং ৫ জনকে বন্যপ্রাণী আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।