দুর্ঘটনাক্রমে ৮ হাজার মিটার উচ্চতায় উড়ে গিয়েও প্রাণে বাঁচলেন চীনা প্যারাগ্লাইডার

চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে প্যারাগ্লাইডিং করতে গিয়ে দুর্ঘটনাক্রমে ৮ হাজার ৫০০ মিটার (২৭ হাজার ৮০০ ফুট) উচ্চতায় উঠে গিয়েও বেঁচে গেছেন এক প্যারাগ্লাইডার। খবর বিবিসির।
৫৫ বছর বয়সী পেং ইউজিয়াং কিউলিয়েন পর্বতমালার ওপর সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩ হাজার মিটার উচ্চতায় নতুন যন্ত্রপাতি পরীক্ষা করছিলেন। ঠিক তখন একটি বিরল ঊর্ধ্বমুখী বাতাস, যেটি 'ক্লাউড সাক' নামে পরিচিত—তাকে প্রায় ৫ হাজার মিটার ওপরে মেঘের স্তরে নিয়ে যায়।
শনিবারের এই ঘটনা পেং-এর গ্লাইডারে লাগানো ক্যামেরায় ধরা পড়ে। পরে ভিডিওটি চীনের টিকটকের মতো অ্যাপ 'দৌইন'-এ প্রকাশ হলে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
ভিডিওতে দেখা যায়, পেং গ্লাইডারের নিয়ন্ত্রণ ধরে আছেন আর তার মুখ ও শরীরের বড় একটা অংশ বরফে ঢেকে গেছে।
তিনি চায়না মিডিয়া গ্রুপকে বলেন, 'এটা ভয়ংকর ছিল... চারদিকে শুধু সাদা। কিছুই দেখতে পাচ্ছিলাম না। কম্পাস না থাকলে বুঝতেই পারতাম না, কোন দিকে যাচ্ছি। ভাবছিলাম সোজা উড়ছি, কিন্তু আসলে ঘুরপাক খাচ্ছিলাম।'
পেং অল্পের জন্য মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন। কারণ, ওই উচ্চতায় বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ খুবই কম। এভারেস্ট চূড়ার (৮,৮৪৯ মিটার) চেয়ে উচ্চতা সামান্য কম হলেও, সেখানে তাপমাত্রা নেমে যেতে পারে মাইনাস ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত।
পেং বলেন, 'আমি দ্রুত নিচে নামতে চেয়েছিলাম, কিন্তু পারছিলাম না। বাতাস আমাকে ওপরের দিকে তুলছিল, যতক্ষণ না মেঘের ভেতরে ঢুকে যাই।'
চার বছর ছয় মাস ধরে প্যারাগ্লাইডিং করছেন পেং। তিনি বলেন, নামার সময় তিনি হয়ত কিছু সময়ের জন্য অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলেন।
তিনি আরও জানান, পুরো ঘটনার মধ্যে সবচেয়ে ভয়ংকর ছিল গ্লাইডার ঘুরপাক খেতে খেতে সেটাকে আবার নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করা।
চীনা কর্তৃপক্ষ এ ঘটনা তদন্ত করছে। কারণ, এই ফ্লাইটের কোনো অনুমতি ছিল না। এজন্য পেং-কে ছয় মাসের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম 'গ্লোবাল টাইমস'।
গ্লোবাল টাইমস আরও জানায়, ওইদিন আকাশে ওড়ার কোনো পরিকল্পনাই ছিল না পেং-এর। তিনি শুধু মাটিতে দাঁড়িয়ে প্যারাস্যুটের ফিটিং ও আরামদায়কতা পরীক্ষা করছিলেন।
কিন্তু হঠাৎ করে প্রবল বাতাস তাকে মাটি থেকে তুলে নেয়। তারপর বাতাসের গতি আরও বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে একটি শক্তিশালী ঊর্ধ্বমুখী বায়ুপ্রবাহ তাকে সোজা মেঘের মধ্যে তুলে নিয়ে যায়।