যুদ্ধবিরতি পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের সামরিক কর্মকর্তাদের বৈঠক আজ

সীমান্তে যুদ্ধবিরতির পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করতে আজ সোমবার (১২ মে) কথা বলবেন ভারত ও পাকিস্তানের সামরিক প্রধানরা। পরমাণু শক্তিধর দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে গত তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘর্ষের পর এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
শনিবার (১০ মে) ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেওয়ার পর সীমান্তে পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, রোববার ছিল সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সীমান্তে প্রথম শান্তিপূর্ণ রাত। তবে সীমান্তসংলগ্ন কিছু এলাকায় এখনও স্কুল বন্ধ রয়েছে।
শনিবার হিমালয়ের বিতর্কিত এলাকায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর আগে চারদিন ধরে চলেছিল তীব্র গোলাগুলি, কূটনৈতিক তৎপরতা এবং ওয়াশিংটনের চাপ।
ভারতের সামরিক বাহিনী রোববার পাকিস্তানকে 'হটলাইন' বার্তা পাঠায়, যেখানে আগের দিনের যুদ্ধবিরতির শর্ত ভঙ্গের কথা জানানো হয় এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটলে পাল্টা জবাব দেওয়ার ইঙ্গিত দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক শীর্ষ কর্মকর্তা।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সোমবার ভারতীয় সময় দুপুর ১২টায় (গ্রিনিচ সময় সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে) দুই দেশের সামরিক অভিযানের প্রধানরা ফোনে আলোচনা করবেন। তবে পাকিস্তান এ নিয়ে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলেনি।
সাম্প্রতিক সংঘর্ষে উভয় দেশ একে অন্যের সামরিক স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়। এতে বহু বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারান। ভারত দাবি করেছে, পাকিস্তান সমর্থিত এক হামলায় কাশ্মিরের পেহেলগামে ২৬ জন পর্যটক নিহত হয়। পাকিস্তান অভিযোগ অস্বীকার করে নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।
ভারত আরও দাবি করেছে, তারা পাকিস্তান ও পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে নয়টি 'সন্ত্রাসী অবকাঠামো' লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। তবে ইসলামাবাদের ভাষ্য, হামলাগুলোর লক্ষ্য ছিল বেসামরিক এলাকা।
ইসলামাবাদ যুক্তরাষ্ট্রকে যুদ্ধবিরতিতে সহায়তার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছে এবং ট্রাম্পের কাশ্মীর ইস্যুতে মধ্যস্থতার প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে। তবে ভারত এখনো এই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। ভারতের অবস্থান, পাকিস্তানের সঙ্গে সব বিরোধ শুধু দ্বিপাক্ষিকভাবে সমাধানযোগ্য এবং তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ গ্রহণযোগ্য নয়।
হিন্দু-সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারত ও মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ পাকিস্তান—দুটি দেশই হিমালয়ের কাশ্মীর অঞ্চলের অংশবিশেষ শাসন করে। তবে উভয়েই পুরো এলাকাটির মালিকানা দাবি করে।
ভারত বলছে, ১৯৮৯ সালে কাশ্মীরে যে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু হয়, তার পেছনে পাকিস্তানের ভূমিকা রয়েছে।
অন্যদিকে পাকিস্তান বলছে, তারা কেবল কাশ্মীরি জনগণকে নৈতিক, রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সমর্থন দিয়ে থাকে।