শান্তি চুক্তির ‘অনেকটা কাছে’ চলে এসেছে রাশিয়া ও ইউক্রেন: মার্কো রুবিও

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানিয়েছেন, গত তিন বছরে প্রথমবারের মতো রাশিয়া ও ইউক্রেন শান্তি চুক্তির সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থানে এসেছে। তবে সংঘাত বন্ধে এখনো দুই পক্ষের মধ্যে নানা মতপার্থক্য দূর করার প্রয়োজন রয়েছে বলে সতর্ক করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১ মে) ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রুবিও বলেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেন সংকট সমাধানে যেসব চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, সেগুলোর ফল মিলতে শুরু করেছে।
রুবিও বলেন, 'একশ দিনের বেশি সময় ধরে তিনি শান্তি আনার চেষ্টা করে যাচ্ছেন... দেখুন, আমরা এখন অনেকটা কাছে চলে এসেছি। গত তিন বছরে এমনটি হয়নি। এই প্রথমবার আমরা কিছুটা বুঝতে পারছি, ইউক্রেনকে থামাতে কী দরকার হবে। আমরা দেখতে পাচ্ছি, রাশিয়াকে থামাতে কী প্রয়োজন।'
তবে এখনো কিয়েভ ও মস্কোর মধ্যে তীব্র মতপার্থক্য রয়ে গেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'তারা কাছাকাছি এসেছে, কিন্তু এখনো অনেক দূরে। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে শিগগিরই বড় ধরনের অগ্রগতি না এলে প্রেসিডেন্টকে (ট্রাম্প) হয়ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে, এই প্রক্রিয়ায় আরও কত সময় দেওয়া হবে।'
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস সম্প্রতি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকলেও 'বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে ছুটে গিয়ে' মধ্যস্থতা করার পরিকল্পনা তাদের নেই। বরং তিনি জানিয়েছেন, এখন রাশিয়া ও ইউক্রেনের দায়িত্ব 'সংঘাতের অবসান কীভাবে সম্ভব' সে বিষয়ে স্পষ্ট ও বাস্তবধর্মী প্রস্তাব দেওয়া এবং তা নিয়ে এগিয়ে যাওয়া
গত মাসে ট্রাম্প প্রশাসন ইঙ্গিত দিয়েছিল, যদি শান্তি আলোচনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির কোনো পরিষ্কার লক্ষণ না পাওয়া যায়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র পুরো প্রক্রিয়া থেকেই সরে দাঁড়াতে পারে।
এর আগে কিছু সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, যুক্তরাষ্ট্র একটি শান্তি প্রস্তাব দিয়েছিল যাতে ক্রিমিয়ায় রুশ সার্বভৌমত্ব স্বীকার, বর্তমান ফ্রন্ট লাইনের ওপর সংঘাত 'স্থগিত' রাখা এবং রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে থাকা চারটি সাবেক ইউক্রেনীয় অঞ্চলের অধিকারের স্বীকৃতি অন্তর্ভুক্ত ছিল। ওই খসড়া চুক্তিতে ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগ না দেওয়ার নিশ্চয়তা এবং ধাপে ধাপে রাশিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের কথাও বলা হয়েছিল।
রাশিয়া আগেই জানিয়ে এসেছে, যেকোনো শান্তিচুক্তিতে 'মাঠের নতুন ভূখণ্ড বাস্তবতা'-কে স্বীকৃতি দিতে হবে। একই সঙ্গে ইউক্রেনের নিরস্ত্রীকরণ ও 'ডিনাজিফিকেশন' [উগ্র জাতীয়তাবাদ বা নাজি-সদৃশ আদর্শ থেকে মুক্ত করা] নিশ্চিত করতে হবে এবং কিয়েভকে ন্যাটো থেকে দূরে রাখার নিশ্চয়তা দিতে হবে।
তবে ইউক্রেন শুরু থেকেই তার হারানো অঞ্চলগুলোকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছে।