ঢাকা কলেজ আর সিটি কলেজের নিত্য লড়াইয়ের নেপথ্যে কী?

জাহাঙ্গীর আলম পড়েছেন মহাবিপদে। সাইন্সল্যাব এলাকায় একটি আয়নার দোকান আছে তার। আর সে নিয়ে তাকে প্রায়ই থাকতে হয় আতঙ্কে। এই বুঝি ঢিল লেগে ভেঙে গেল সব মালপত্র!
তার এ আশঙ্কার কারণ দোকানের দু'পাশের দুটি কলেজ, আর তাদের নিত্য লড়াই! "মারামারিকে ওরা ডাল-ভাত বানিয়ে ফেলেছে," বললেন জাহাঙ্গীর।
গণমাধ্যম কিংবা সামাজিক মাধ্যমে চোখ রাখা যে কেউ-ই একমত হবেন তার সঙ্গে। ঢাকা কলেজ আর সিটি কলেজের সংঘর্ষ এখন নিয়মিত ঘটনা। সামান্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে মাঝেমধ্যেই রণক্ষেত্রে পরিণত হয় সাইন্সল্যাব। আর এ সংঘর্ষের কারণে ঢাকাবাসীর প্রাণ ওষ্ঠাগত! বিশেষ করে জাহাঙ্গীরের মতো মানুষ, যাদেরকে জীবিকার জন্য ব্যবহার করতে হয় সাইন্সল্যাব এলাকা।
মারামারি যখন নিত্য ঘটনা
২১ এপ্রিল, মঙ্গলবার। সকাল থেকে উত্তেজনা ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে। আগের দিন তাদের এক সহপাঠীর ওপর হামলা হয়েছে। তাদের ধারণা, এর সঙ্গে জড়িত সিটি কলেজের ছাত্ররা। তাই এখন হামলা চালাতে হবে সিটি কলেজের ওপর, নিতে হবে প্রতিশোধ!
বেলা সাড়ে এগারোটার সময় ঢাকা কলেজের একদল শিক্ষার্থী এগিয়ে গেলেন সিটি কলেজের দিকে। শুরু হলো সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। ঘণ্টাখানেকের চেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলো পুলিশ। দুপুর দুইটায় আবারও সংঘর্ষ। শেষে ব্যবসায়ীসহ আহত হলেন অনেকে।
আর এতেই কি মিটে গেলো সব? না, সাইন্সল্যাব-নিউ মার্কেট এলাকার বাসিন্দারা জানেন, এ মারামারি শেষ হবার নয়! গত ৮ মাসে তাদের অভিজ্ঞতা তো তা-ই বলছে! এ অল্প সময়ে ১৩ বারের বেশি সংঘর্ষে জড়িয়েছে এ এলাকার তিনটি কলেজে। আর সবচেয়ে বেশি মারামারি করেছে ঢাকা আর সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা।
সর্বশেষ পাল্টাপাল্টি ধাওয়া আর সংঘর্ষ হয়েছিল গত ১৫ এপ্রিল। এর একসপ্তাহ না যেতেই আবারও মুখোমুখি হয় দুই কলেজ।
সওয়া যায় না
গত বছরের নভেম্বরে সংঘর্ষে জড়িয়েছিল ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা। নতুন বছর শুরু হতে না হতেই ফের মারামারি। জানুয়ারির শেষদিকে দু'দফায় সংঘর্ষ হয়, ফেব্রুয়ারিতে ঘটে চারবার। এরপর একের পর এক একই ঘটনা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইট-পাটকেল নিক্ষেপ, কলেজের নামফলক খুলে নেওয়া। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন শত শত মানুষ।
মোকাদ্দেছ মাতুব্বর সিটি কলেজের সামনে ভেলপুরি বিক্রি করেন ২৮ বছর যাবত। তিনি ২১ এপ্রিলের একটি ঘটনা বর্ণনা দিলে এভাবে, "একটা ছেলেকে ঘিরে ধরছে ২০০ জন। তারপর মেরেছে। আমি সইতে পারলাম না, গিয়ে বললাম, মামা, অনেক মার খাইছে, আর মাইরেন না, মরে যাবে। আমারে বলে, তুই সর, নইলে তোরেও মারবো।" বছরের পর বছর চোখের সামনে শিক্ষার্থীদের মার খেতে দেখছেন মোকাদ্দেছ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানালেন, কলেজগুলোর সংঘর্ষের সময় শিক্ষার্থীদের বিবেক-বুদ্ধি লোপ পায়। ইট-লাঠি হাতে নিয়ে একে অন্যকে আঘাত করতে ছুটে আসেন তারা। অন্য কলেজের কাউকে হাতের নাগালে পেলে নির্মম হয়ে ওঠেন।

নগরবাসীর ওঠে নাভিশ্বাস
সংঘর্ষে সবচেয়ে বেশি আতঙ্কগ্রস্ত থাকেন পথচারী আর ব্যবসায়ীরা। কখন একটি ইট এসে লাগবে কিংবা কখন তার নিজের ওপর হামলা হবে, কেউ জানেন না। ফলে সংঘর্ষ শুরু হলেই ব্যবসা গুটাতে হয় অনেককেই। বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন খেটে খাওয়া মানুষ।
সাইন্সল্যাব রাজধানীর ব্যস্ততম স্থানগুলোর একটি। শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো সংযুক্ত এ এলাকায়। কলেজ দুটির সংঘর্ষ শুরু হলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বন্ধ থাকে গাড়ি চলাচল। ফলে স্থবির হয়ে পড়ে আসেপাশের সব এলাকা।
সাভার পরিবহনের এক বাস চালক জানালেন, গতবছর এই দুই কলেজের এক মারামারিতে বাস নিয়ে ৪-৫ ঘণ্টা বসেছিলেন তিনি। অনেক সময় পুরো দিনটিই নষ্ট হয় তাদের। বাসে হামলা হয় বলে আতঙ্ক আরও বেশি থাকে।
সাইন্সল্যাবে জাহাঙ্গীর আলম পৈতৃক ব্যবসা ৪৭ বছরের। তিনি নিজে দোকানে আছেন ১৫ বছর হলো। আগেও বছরে দু'একটি মারামারি দেখেছেন। তবে এখন যেন সব মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। বললেন, "মারামারি শুরু হলেই দোকান বন্ধ করে দেওয়া লাগে। আর কোনো উপায় থাকে না। বৃষ্টির মত ঢিল পড়ে।"
দোকানিরা দোকান বন্ধ করতে পারেন, কিন্তু যাদের ব্যবসা ফুটপাতে? তাদের ওঠে নাভিশ্বাস!
ঢাকা কলেজের পাশেই ছবির ফ্রেম বিক্রি করেন ওয়াহাব মোল্ল্যা। বয়স খুব বেশি নয়। তাই মারামারিতে জড়িয়ে যাওয়ার ভয় পান তিনি। বললেন, "শুরু হইলেই দৌড়ানো লাগে। কে কারে মারে, কারে ধরে, ঠিক নাই।"
এক পথচারী বললেন, "দুই কলেজকে দুই প্রান্তে নিয়ে যাওয়া হোক। এদের ১২ মাসে ১৩ অত্যাচার ভালো লাগে না।"
ওয়াহাবের মতো অনেকেই সরাসরি ভুক্তভোগী হচ্ছেন কলেজ দুটির দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্বের। নগরবাসীর ফেসবুক ওয়ালেও পড়ছে সে ছাপ।
নেটিজেনদের ক্ষোভ আর রসিকতা
'ঢাকা কলেজ, সিটি কলেজ বা আইডিয়াল কলেজ যা করে, তা আসলে মারামারি না, বার্ষিক উৎসব!'—ফেসবুকে লিখেছেন সাবেক এক শিক্ষার্থী। তিনি আরও লিখেছেন, '২০১৯ সালে প্রথম বর্ষে পড়ার সময় একবার অংশ নিছিলাম, মারামারির আসল কারণ জানছিলাম তিনদিন পরে!'
কলেজগুলোর মারামারি নিয়ে ফেসবুকে রসিকতা, ব্যঙ্গ আর ক্ষোভ জানিয়ে পোস্ট করেছেন অনেকেই। এদের মধ্যে অগ্রগামী কলেজ দুটির সাবেক শিক্ষার্থীরা।

লেখক শোয়েব সর্বনাম 'গ্যাঞ্জামে' নাগরিক ক্ষয়ক্ষতি ঠেকাতে বেশ কয়েকটি টোটকা দিয়েছেন! তিনি প্রস্তাব করেছেন, 'গ্যাঞ্জামে আগ্রহী কলেজগুলো একটা ডেট ফিক্সড করে সিটি কর্পোরেশনের কোনো ময়দান বা উদ্যান রণক্ষেত্র হিসেবে ভাড়া নিতে পারে। লাঠিসোটা ছাড়া অন্যান্য অস্ত্রপাতি নিষিদ্ধ করতে হবে। লাঠিসোটার মাপ ও ওজন ঠিক করে দেবে এবং কোয়ালিটি কন্ট্রোল করবে বুয়েটের গবেষকরা। কাছাকাছি মেডিকেল ক্যাম্প রাখতে হবে।'
রসিকতা করে তিনি আরও লিখেছেন, 'একেক কলেজের পোলাপানদের একেক কালারের টি শার্ট ও ট্রাউজার স্পন্সর করা যেতে পারে। যারা জিতবে তাদেরকে এওয়ার্ড দিতে হবে। যে বছর যে কলেজ জিতবে সেই বছর তাদের সামনে অন্য কলেজের পোলাপানরা বিড়ি খাইতে পারবে না। তাছাড়া দেখা হলে সালাম দেবে, ভাই বলবে।'
তিনি এই দুই কলেজের মারামারির 'ঐতিহ্য' নিয়ন্ত্রণের জন্য বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে একটা উচ্চস্তরের কমিটি গঠন করার প্রস্তাবও দিয়েছেন।
তবে অনেকেই হালকাভাবে নিচ্ছেন না প্রায় প্রথা হয়ে যাওয়া এই মারামারিকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন ফেসবুকে লিখেছেন, 'তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুদিন পরপর ঢাকা কলেজ আর সিটি কলেজের মারামারি। শুধু এই দুটি কলেজ না, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই হলের ছাত্রদের মাঝেও দিনভর বা রাতভর মারামারিও আমরা দেখেছি।…'
'দিন দিন এইসব বাড়ার অর্থ হলো আমরা দিন দিন অসভ্যতার দিকে ধাবিত হচ্ছি। এ থেকে উত্তরণের পথ খুঁজতে আমাদেরকে গভীরভাবে ভাবতে হবে,' লেখেন তিনি।
কেন এই বিবাদ
ঢাকা কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী জনি রহমান। এ মাসেই মাস্টার্স শেষ করলেন তিনি। তার মতে, দুই কলেজের শিক্ষার্থীরা ব্যক্তিগত কারণে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে, আর এরাই পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করে ফেলে। এভাবেই শুরু হয় সংঘর্ষ।
"ধরেন, ঢাকা কলেজের কোনো ছেলে গেছে সিটি কলেজের সামনে। সেখানে পূর্ব শত্রুতার জন্য তাকে মারা হইছে। সে তখন ঢাকা কলেজে এসে, হলে কিংবা ফেসবুকে জানাচ্ছে যে সিটি কলেজের এক ছেলে ঢাকা কলেজ দেখে তাকে মারছে। সবাই তো কলেজ নিয়ে ইমোশনাল। তখন সবাই মিলে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য ছোটে," বললেন জনি।
তিনি মনে করেন, বিভিন্ন উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডের কারণেই পুরাতন শত্রুতা মাঝেমধ্যেই জেগে ওঠে। "ধরেন, মারামারি শেষ, ঢাকা কলেজের একটা বাস যাচ্ছে সাইন্সল্যাব দিয়ে। তখন কেউ একজন ইট মেরে বাসে গ্লাস ভেঙ্গে দিলো। এ খবর তখন ছড়িয়ে পড়ে। আবারও কলেজ উত্তপ্ত হয়ে যায়।"
তার মতে, কলেজগুলোর সংঘর্ষের ৬০ শতাংশই এমন ধরণের ঘটনার কারণে হয়ে থাকে।

একইরকম মনে করেন সিটি কলেজের শিক্ষার্থী সাদিয়া রহমান (ছদ্মনাম)। শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ প্রাতিষ্ঠান নিয়ে অহংকার পোষণ করা থেকেই অনেক সহিংসতার জন্ম হয় বলে তার ধারণা।
"পাশাপাশি কলেজ, কেউ কাউকে সহ্য করতে পারে না। ধরেন একজন আরেকজনকে চেনে না, কিন্তু যদি শোনা যে ঢাকা কলেজ বা সিটি কলেজ, তখনই পরিবেশ গরম হয়ে যায়," যোগ করেন তিনি।
তবে এসব মারামারির পেছনে সদ্য মাধ্যমিক পাশ করা উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের অতি আবেগকেও দায়ী করলেন সাদিয়া। "মারামারি করেই ইন্টারের পোলাপানগুলা। বিশেষ করে সেকেন্ড ইয়ারের ছেলেরা। এরা নিজেদের ক্ষমতা দেখাতে গিয়ে মারামারি লাগায়।"
প্রেম থেকে দ্বন্দ্ব
"সিটি কলেজের ছেলেরা চায় এই কলেজের মেয়েরা অন্য কোনো কলেজের ছেলেদের সঙ্গে ডেট (সম্পর্ক) না করুক। ঢাকা কলেজে তো মেয়ে নাই! কিন্তু মেয়েরা তো তিন কলেজেই ডেট (সম্পর্ক) করে। এসব কারণেই লাইগা যায় মারামারি!"—কথা হচ্ছিলো সিটি কলেজের একদল ছাত্রীর সঙ্গে। তারাই বললেন এ কথা। এই মেয়েদের মতে, মারামারির অর্ধেক ঘটনাই ঘটে প্রেমের কারণে।
ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী জনি রহমানও জানালেন, ৪০ শতাংশ মারামারির জন্য প্রেমঘটিত কারণগুলো দায়ী।
স্থানীয় মানুষজনও এই বিষয়টিকে প্রধান করে দেখালেন। এছাড়া, ফেসবুক আক্রমণাত্মক স্ট্যাটাস, স্লেজিং, কলেজ বাস ভাঙচুর, চোরাগোপ্তা হামলাকেও দায়ী করেছেন অনেক শিক্ষার্থী।
অবশ্য সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সংঘর্ষ নিয়ে ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মাসুদ আলম টিবিএসকে বলেছেন, "কেন এই সংঘর্ষ হয়, কেউ জানে না—শুধু আল্লাহ জানেন। এভাবে তো চলতে পারে না। স্থায়ী সমাধান দরকার। দুই কলেজ কর্তৃপক্ষকে নিয়ে বসে এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান খুঁজতে হবে।"

সমাধানের খোঁজে
কলেজ দুটির ছাত্রছাত্রীদের কাছে মারামারি মানেই হয়ে দাঁড়িয়েছে আহত, জখম আর 'হঠাৎ কলেজ বন্ধ'। তবে এভাবে আর কত? প্রশ্ন তুলছেন খোদ শিক্ষার্থীরাই। কেউ কেউ আবার সমাধানও বাতলে দিচ্ছেন।
এক বনে নাকি দুই বাঘ থাকতে পারে না। তাই অনেকে সম্ভাব্য সমাধান খুঁজেছেন 'দুই বাঘকে' আলাদা করার মাধ্যমে! অর্থাৎ, কলেজ স্থানান্তর। জনি রহমানের বক্তব্যও তাই-ই, ঢাকা সিটি কলেজকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া গেলে থেমে যাবে হানাহানি।
ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ পারভীন সুলতানা হায়দার বলেন, "আমরা চাই একটা স্থায়ী সমাধান হোক। সেটা কিন্তু আমাদের একক প্রচেষ্টায় হবে না। সেটা শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক, প্রশাসন, সবার সম্মিলিত চেষ্টা দরকার। দেখা যাক, সামনে আবার বসবো।"
তবে এই দীর্ঘসময় যাবত ঘটতে থাকা মারামারি বন্ধে বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নিয়েছে দুই কলেজ কর্তৃপক্ষ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য আর অভিভাবকদের নিয়েও হয়েছে সভা। কিন্ত থামানো যায়নি সহিংসতা। সর্বশেষ ২৩ এপ্রিল ঢাকা কলেজ, সিটি কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের মধ্যে একটি বৈঠক হয়েছে। এর মূল লক্ষ্য ভবিষ্যতে সংঘাত এড়ানো।
ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানিয়েছেন, "দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে মঙ্গলবার ঘটে যাওয়া সংঘর্ষের সমঝোতার জন্য আমরা বসেছিলাম। সেখানে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপপ্রাপ্ত) অধ্যাপক পারভীন সুলতানা হায়দার ও সিটি কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) এফ এম মোবারক হোসাইনসহ আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। আমরা প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ এড়াতে তারা নিজেদের মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি করবেন।"
"আজই একটা হোয়াটঅ্যাপ গ্রুপ করা হয়েছে, সেখানে এই এলাকার দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্য ও কলেজের ঊর্ধ্বতনরা আছেন। এখানে সংশ্লিষ্ট তথ্য আদান-প্রদান করা হবে। এই তিন কলেজের সঙ্গে বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রব ও বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ কলেজও যুক্ত হবে। আশা করি, এই চুক্তিনামা মেনে চললে সংঘাত হবে না," যোগ করেন তিনি।
এ ধরনের চুক্তিনামা কতখানি ফলপ্রসূ হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেক শিক্ষার্থী। তবে সকলের আশা, মারামারির এই 'ঐতিহ্য' যেন টিকে না থাকে।
যেমনটা বলছিলেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী জাকের হোসেন, "আমরা যেন নির্ভয়ে রাস্তায় চলতে পারি। আমি একটি নির্দিষ্ট কলেজে পড়ি বলে অন্য কলেজের কেউ এসে যেন আমাকে না মারে, এটুকুই চাওয়া।"