বাঁশখালীতে লবণের মাঠ নিয়ে বিরোধে গুলিবিনিময়, আহত ২২

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে লবণের মাঠ নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ২২ জন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুপুর ২টার দিকে উপজেলার সরল ইউনিয়নের উত্তর সরল গ্রামের নতুন বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে লবণের মাঠের দখল নিয়ে 'কবির গ্রুপ' ও 'মনসুর গ্রুপ' নামক দুটি পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। ওই উত্তেজনার জের ধরেই কবির গ্রুপের সদস্যরা মানসুর গ্রুপের লোকজনের ওপর অতর্কিত গুলি চালায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
এ ঘটনায় আহতদের সবাই মনসুর গ্রুপের সদস্য বলে জানা গেছে। তারা সবাই ছররা গুলিতে আহত হন এবং তাদের বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. সুশমিতা চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, আহতদের মধ্যে চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। গুরুতর আহত ফরকান, জমির উদ্দিন, নূর হোসেন ও মাহিমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, 'সবাই ছররা গুলিতে আহত হয়েছেন। আমাদের হাসপাতালে ছররা অপসারণের জন্য প্রয়োজনীয় শল্যচিকিৎসা সুবিধা না থাকায় পর্যায়ক্রমে আরও রোগী চমেকে পাঠাতে হতে পারে।'
ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি রক্তাক্ত অবস্থায় দাঁড়িয়ে থেকে সাহায্যের জন্য আকুতি জানাচ্ছেন। মাথায় টুপি পরা ওই ব্যক্তি বলেন, 'দেখতেছেন তো? গুলি করছে আমাদের দিকে। অনেকজনকে গুলি করছে।'
তিনি আরও বলেন, 'আমি শুধু চা খেতে বাজারে এসেছিলাম। হঠাৎ করে ওরা গুলি করল। আমার হাত ও পায়ে গুলি লেগেছে। ওরা লুকিয়ে লুকিয়ে গুলি করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাহায্য দরকার।'
ভিডিওতে আরও দেখা যায়, আশপাশের দোকানপাট বন্ধ, গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে, এবং এক ব্যক্তি আগ্নেয়াস্ত্র হাতে একটি দেয়ালের আড়ালে সরে যাচ্ছেন।
তবে বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম গুলির ঘটনার কথা অস্বীকার করে বলেন, 'উভয় পক্ষই ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল, আমিও ছিলাম। দাঙ্গায় জড়িতদের ধরতে অভিযান চলছে।'
স্থানীয়দের মতে, বাঁশখালীর উপকূলীয় সরল এলাকা দীর্ঘদিন ধরেই লবণের মাঠ ও জমির দখল নিয়ে সংঘর্ষপ্রবণ।