বিদ্যুৎ কিনতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে চুক্তি করবে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ কিনতে প্লান্ট পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (এনপিসিবিএল)- এর সঙ্গে পাওয়ার পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট (পিপিএ) করবে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি)। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র।
রূপপুর প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. জাহেদুল হাসান জানান, "রূপপুরে উৎপাদিত বিদ্যুৎ বিক্রির লক্ষ্যে পিপিএ করতে সম্প্রতি সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রণালয়। এ লক্ষ্যে টেকনিক্যাল ডেভেলপমেন্ট ডকুমেন্ট তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। রূপপুর প্রকল্প অফিস থেকে ডকুমেন্টটির খসড়া তৈরি করে পরমাণু শক্তি কমিশনে পাঠানো হয়েছে। কমিশন এটি পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে।"
তবে বিদ্যুৎ মূল্যের বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়ের (মেইনটেনেন্স কস্ট) মূল্যায়ন না হওয়া পর্যন্ত রূপপুর প্রকল্পের বিদ্যুতের মূল্য নির্ধারণ সম্ভব নয়। বর্তমানে মেইনটেনেন্স কনট্রাক্টের মূল্যায়নের কাজ চলছে। এ কাজ শেষ হলেই পিডিবির সঙ্গে এনপিসিবিএলের চুক্তি সই হবে।
এদিকে, টেকনিক্যাল ডেভেলপমেন্ট ডকুমেন্ট প্রস্তুত হওয়ায় গত শুক্রবার (২ মে) রূপপুর প্রকল্প সাইট অফিসে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন এনপিসিবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রকল্প পরিচালক ড. জাহেদুল হাসান। টেকনিক্যাল ডকুমেন্ট তৈরিতে অবদান রাখায় তিনি সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান।
সভায় ড. জাহেদুল হাসান বলেন, "সম্প্রতি রূপপুর প্রকল্পের বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি (পিপিএ) নিয়ে কিছু বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় যথার্থ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এনপিসিবিএলের সঙ্গেই পিপিএ হবে।"
তিনি আরও বলেন, "২০১৫ সালের নিউক্লিয়ার অ্যাক্ট অনুযায়ী এনপিসিবিএল প্রতিষ্ঠিত হয়। সেখানে উল্লেখ রয়েছে, রূপপুর প্রকল্পের কাজ শেষ হলে এর সব সম্পদ ও দায়-দায়িত্ব এনপিসিবিএলের কাছে হস্তান্তর করা হবে। প্রতিষ্ঠানটি একটি অপারেটিং অর্গানাইজেশন হিসেবে এলএনডিসি ম্যানেজমেন্ট থেকে শুরু করে অপারেশন, রক্ষণাবেক্ষণ ও রেডিওঅ্যাকটিভ ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট—সব দায়িত্ব পালন করবে। ফলে, বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তিও এনপিসিবিএলের সঙ্গেই হওয়া যৌক্তিক।"
সভায় এনপিসিবিএলের চিফ ইঞ্জিনিয়ার হাসমত আলী বলেন, "ড. জাহেদুল হাসান প্রকল্প পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে প্রকল্পে গতি এসেছে, শতভাগ গুণগত মান নিশ্চিত হয়েছে এবং কার্যকর সিদ্ধান্তের মাধ্যমে প্রকল্প এগিয়েছে।"
তিনি জানান, ডিজাইন, কোয়ালিটি ও কমিশনিং টিম পুনর্বিন্যাস করে এবং প্রকল্প ব্যবস্থাপনায় সফটওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে কার্যক্রম ট্র্যাকিং ও বিতরণ নিশ্চিত করা হয়েছে। রাশিয়ান পার্টনারদের সঙ্গে সফলভাবে কমিশনিং টেস্ট সম্পন্ন হওয়ায় তিনি ড. জাহেদুলের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।