‘সম্পর্কের সময়’ জানতে পারি পারভিন বিবাহিত, স্বামী পাকিস্তানে চলে গেছেন: মহেশ ভাট

বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী পারভিন ববি এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা মহেশ ভাট ৭০ থেকে ৭৮০'র দশকে চুটিয়ে প্রেম করেন। মহেশ ও পারভিনের সম্পর্কের কথা যখন প্রকাশ্যে এসেছিল, তখন মহেশ ছিলেন বিবাহিত। প্রথম স্ত্রী কিরণ ভাটের সঙ্গে সংসার করছেন তিনি। তবে পরে সেই প্রেম ভেঙে যায়।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে পারভিনের সঙ্গে তার সম্পর্ক নিয়ে খোলাখুলি কথা বলেছেন বর্ষিয়ান এই নির্মাতা।
৭০ ও ৮০'র দশকে হিন্দি চলচ্চিত্র জগতের অন্যতম হাটথ্রব তারকা ছিলেন পারভিন ববি। তবে ব্যক্তিগত জীবনে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি। জড়িয়েছিলেন একাধিক সম্পর্কে।
তেমন একটি সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল চলচ্চিত্র নির্মাতা মহেশ ভাটের সঙ্গে। সম্পর্কের কথা জানাজানি হয়ে যাওয়ার কয়েক মাস পর মহেশ এবং পারভিনের সম্পর্ক ভেঙে যায়।

তিনি জানান, সম্পর্কে থাকাকালীন জানতে পারেন পারভিন লুকিয়ে বিয়ে করেছিলেন। তবে তিনি যাকে বিয়ে করেছিলেন তিনি পাকিস্তানে চলে যান।
সম্প্রতি বিবিসি নিউজ হিন্দিতে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে মহেশ ভাট বলেন, 'আমরা তখন সম্পর্কে ছিলাম। সম্পর্কে থাকাকালীন জানতে পারি ও একবার লুকিয়ে বিয়ে করেছিল।'
তিনি বলেন, 'তখন ওর (পারভিন ববি) মা জুনাগড় থেকে এসে আমাদের সঙ্গে থাকতেন। ওর মায়ের মুখে শুনেছিলাম এই বিয়ের কথা। তখনই জানতে পেরেছিলাম। তবে লোকটি পরবর্তী সময়ে পাকিস্তানে চলে যায়।'
মহেশ ভাট বলেন, 'একবার আমি কারা চলচ্চিত্র উৎসবে যোগ দিতে পাকিস্তানে গিয়েছিলাম। উৎসবের মাঝেই একজন আমাকে বলেন, এক ভদ্রলোক আমার সঙ্গে দেখা করতে চান। যিনি নিজেকে পারভিনের স্বামী বলে পরিচয় দিয়েছিলেন। যদিও পরবর্তীকালে আমার আর ওর সঙ্গে দেখা হয়নি, যদিও সেটা ইচ্ছাকৃতভাবে নয়, সময়ের অভাবে হয়ে ওঠেনি।'
তিনি বলেন, 'আমি এমন কোনো মানুষ না যে ইচ্ছাকৃতভাবে মানুষের সঙ্গে দেখা করবে না। তবে সেদিন আর তার সঙ্গে দেখা করার সুযোগ হয়ে ওঠেনি।'
পারভিন ববির ক্যারিয়ার

১৯৭২ সালে মডেল হিসাবে ক্যারিয়ার শুরু করেন পারভিন। মডেলিং করতে করতেই রুপোলি পর্দায় নিজেকে মেলে ধরার সুযোগ পেয়ে যান তিনি। পরের বছর ১৯৭৩ সালে 'চরিত্র' সিনেমার হাত ধরে বলিউডে হাতেখড়ি হয় পারভিনের। বক্স অফিসে ওই ছবি না চললেও পারভিনের উপস্থিতি নজর কাড়েন।
১৯৭৫ সালে মুক্তি পেয়েছিল 'দিওয়ার'। অমিতাভ বচ্চন, শশী কপূরের সঙ্গে এই ছবিতে অনিতা চরিত্রে দেখা গিয়েছিল পারভিনকে। এই ছবির হাত ধরেই বলিউডের প্রথম সারির নায়িকা হিসাবে নিজের জায়গা করে নেন। 'দিওয়ার' ছবির সাফল্যের পর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি পারভিনকে। অমর আকবর অ্যান্টনি, সুহাগ, কালা পাথ্থার, দ্য বার্নিং ট্রেন, শান, ক্রান্তির মতো ছবিতে অভিনয় করেছেন।
বলিপাড়ায় প্রথমে অভিনেতা-পরিচালক ড্যানি ডেনজংপার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন পারভিন। তবে কখনই এই সম্পর্ক নিয়ে মুখ খোলেননি ড্যানি। ড্যানির পর অভিনেতা কবীর বেদীর প্রেমে পড়েছিলেন পারভিন। তবে সেই প্রেমও টেকেনি। এরপরই মহেশ ভাটের প্রেমে পড়েন পারভিন।
মহেশ ও পারভিনের সম্পর্ক
১৯৭৭ সালে মহেশ ও পারভিনের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পারভিন তখন ক্যারিয়ারের শীর্ষে। মহেশ তখন বিবাহিত, অন্যদিকে পারভিন তখন সদ্য কবির বেদির সঙ্গে সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে এসেছেন। মহেশ ও পারভিনের প্রেমকাহিনি বলিপাড়ার অন্যতম চর্চিত বিষয়।

মহেশের প্রেমে পাগল ছিলেন বলিউডের সুপারস্টার এই অভিনেত্রী। একসময় লিভ-ইনও করেছেন তারা। সেই সময় । মহেশ এবং পারভিন ৩ বছর সম্পর্কে ছিলেন। পরে সেই সম্পর্কও ভেঙে যায়।
জানা যায়, স্কিৎজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন পারভিন।
পারভিনের মৃত্যুর পর তার জীবন নিয়ে একটি চলচ্চিত্র বানান মহেশ ভাট। চলচ্চিত্রটি প্রযোজনাও করেছিলেন তিনি। ২০০৬ সালে মুক্তি পায় 'ও লমহে' নামের সেই চলচ্চিত্র। সিনেমাটিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন কঙ্গনা রানাওয়াত।
প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালে মুম্বইয়ের নিজ ফ্ল্যাট থেকে পারভিন বাবির মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। মৃত্যুর সময় তার বয়স ছিল ৫৫ বছর।