ইরানের তেল কিনলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ব্যবসা করতে পারবে না কোনো দেশ: ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার বলেছেন, ইরান থেকে কেউ তেল বা পেট্রোকেমিক্যাল কিনলে ওই দেশ বা ব্যক্তি আর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো ধরনের ব্যবসা করতে পারবে না।
তার এই ঘোষণায় তৎক্ষণাৎ প্রভাব পড়েছে তেলের বাজারে। মার্কিন অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১.০৩ ডলার বা ১.৭৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৯.২৪ ডলারে। বৈশ্বিক বেঞ্চমার্ক ব্রেন্ট তেলের দামও ১.০৭ ডলার বা ১.৭৫ শতাংশ বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ৬২.১৩ ডলারে পৌঁছেছে।
উল্লেখ্য, ইরান ওপেকের অন্যতম বৃহৎ তেল উৎপাদনকারী দেশ।
ট্রাম্প তার সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে-এ লিখেছেন: 'কোনো দেশ বা ব্যক্তি ইরান থেকে যেকোনো পরিমাণ তেল বা পেট্রোকেমিক্যাল কিনলে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের ওপর সেকেন্ডারি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। তাদের আর কোনোভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ব্যবসা করার সুযোগ থাকবে না।'
ফেব্রুয়ারিতে ইরানের ওপর 'সর্বোচ্চ চাপ' প্রয়োগের নীতি ঘোষণা করেছিলেন ট্রাম্প। লক্ষ্য ছিল, ইসলামি প্রজাতন্ত্রটির তেল রপ্তানি সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া।
বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে দেওয়া বক্তব্যে ইরানের বিরুদ্ধে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোকে অর্থ জোগানোর অভিযোগও তুলেছেন ট্রাম্প।
এপ্রিলে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে ওমানে আলোচনা শুরু করেন ট্রাম্প। ফেব্রুয়ারিতে তিনি বলেছিলেন, ইরান যাতে পারমাণবিক বোমা তৈরি করতে না পারে, সেটি তিনি নিশ্চিত করতে চান। তেহরান অবশ্য এমন কোনো অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করার কথা অস্বীকার করেছে।
ফেব্রুয়ারিতেই ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি ইরানের সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছাতে আগ্রহী। প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ইরানের সাথে যে পারমাণবিক চুক্তি করেছিলেন, তা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে এনেছিলেন।
কনসাল্টিং প্রতিষ্ঠান র্যাপিডান এনার্জির সিইও এবং সাবেক সিআইএ কর্মকর্তা স্কট মডেল বলেন, ট্রাম্পের এই মন্তব্যের লক্ষ্য মূলত চীন। বর্তমানে ইরান থেকে দৈনিক ১০ লাখ ব্যারেলের বেশি তেল আমদানি করছে দেশটি।
তবে চীনের রাষ্ট্রমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ও অবকাঠামোকে টার্গেট না করলে এসব নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ইরানের তেল চীনে যাওয়া খুব একটা কমানো যাবে না বলে উল্লেখ করেন মডেল।
তিনি আরও বলেন, এই ঘোষণার মাধ্যমে আসলে ট্রাম্প ইঙ্গিত দিলেন, তিনি বলপ্রয়োগ করেই দরকষাকষি করতে চান।
এর আগে এপ্রিলের শুরুতে ট্রাম্প ভেনেজুয়েলা থেকে তেল কেনা দেশগুলোর ওপর 'সেকেন্ডারি ট্যারিফ' আরোপ করেছিলেন। ভেনেজুয়েলাও ওপেকের সদস্য।