Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Tuesday
September 23, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
TUESDAY, SEPTEMBER 23, 2025
অর্থনীতিবিদেরা ‘রবিনসন ক্রুসো’কে এত পছন্দ করেন কেন?

আন্তর্জাতিক

দ্য ইকোনমিস্ট
29 December, 2023, 04:10 pm
Last modified: 29 December, 2023, 04:09 pm

Related News

  • চীন যেভাবে ট্রাম্পের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধ মোকাবিলা করছে
  • রাগ যেভাবে আপনার খরচ বাড়িয়ে দেয়—একটি মনস্তাত্ত্বিক ও আর্থিক বিশ্লেষণ
  • ঋণাত্মক আবেগ ও অর্থব্যয়ের মনস্তত্ত্ব—নীরব, কিন্তু গভীরভাবে সংযুক্ত
  • অর্থনীতিতে সব মানুষের অংশগ্রহণের পরিকল্পনা করছে বিএনপি: আমির খসরু
  • অন্তর্বর্তী সরকার কি পথ হারিয়েছে, এই প্রশ্ন এখন সবার মধ্যে: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

অর্থনীতিবিদেরা ‘রবিনসন ক্রুসো’কে এত পছন্দ করেন কেন?

আচরণগত অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, একাধিক পছন্দ থাকা সবসময় ভালো না। মানুষ এমন জিনিস বেছে নেয় যা দীর্ঘমেয়াদে তাদের জন্য মঙ্গলকর নয়। পছন্দ করার পর আবার অনুশোচনা করে অন্য কিছু বাছাই করলো না কেন এটা ভেবে! এই দ্বীপে ক্রুসো যদি একা না থাকতেন তাহলে হয়তো তিনি খুশি মনেই এখানে জীবনযাপন করতেন। কিন্তু একা থাকায় সবসময় ভাবেন অন্য কোথাও থাকলেও হয়তো আরও সুন্দর জীবন উপভোগ করতে পারতেন!
দ্য ইকোনমিস্ট
29 December, 2023, 04:10 pm
Last modified: 29 December, 2023, 04:09 pm
ছবি: অলিভিয়ার হেইলিগার্স/দ্য ইকোনমিস্ট

দীর্ঘ ২৮ বছর দুই মাস ১৯ দিন একটি দ্বীপে অতিবাহিত করার পরও রবিনসন ক্রুসো তার দুঃসাহসিক কাজ করার অদম্য ইচ্ছা হারাননি। তিনি 'নারকীয় নেকড়ে'র আস্তানা পিরেনিস অতিক্রম করেন, চীনের 'আড়ম্বর ও দারিদ্র্য' প্রত্যক্ষ করেন এবং রাশিয়ায় তাতারদের সঙ্গে যুদ্ধও করেন।

তবে আজ আমরা তার এই দুঃসাহসিক অভিযান নয় বরং কথা বলব অর্থনীতির জগতে তার বিচরণ নিয়ে। রবিনসন ক্রুসোর সবচেয়ে অস্বাভাবিক অ্যাডভেঞ্চার হলো অর্থনীতিতে তার ব্যাপক উপস্থিতি। তাকে কার্ল মার্ক্সের 'দাস ক্যাপিটাল', জন মেনার্ড কেইনসের 'সাধারণ তত্ত্ব' এবং মিল্টন ফ্রিডম্যানের 'মূল্য তত্ত্ব'-এর শিকাগোর বক্তৃতায় পাওয়া যায়। এমনকি অর্থনীতির নিউ প্যালগ্রেভ অভিধানে ক্রুসোকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ক্রুসোর উল্লেখ প্রায়শই অর্থনীতির পাঠ্যপুস্তকগুলোতেও দেখা যায়।

রবিনসন ক্রশোর গল্প শুধু জলদস্যুদের হাত থেকে পালিয়ে যাওয়ার এবং তার নরখাদকদের মুখোমুখি হওয়ার রোমাঞ্চকর মুহূর্ত নয়, তার মূল ফোকাস ছিল অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ — অভাবের বিরুদ্ধে যুদ্ধ। ক্রুসো তার কাছে থাকা সীমিত সম্পদগুলো দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করে সঠিক শ্রমের মাধ্যমে এই সংগ্রামে জয়ী হন। তার মধ্যস্ততা করার এবং দুর্লভ সম্পদের সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করার ক্ষমতা অর্থনৈতিক নীতিগুলো বোঝার একটি কেন্দ্রীয় বিষয় হয়ে ওঠে।

জাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার পর রবিনসন ক্রুসো তার আশ্রয় নেওয়া দ্বীপটিকে বসবাসযোগ্য করে তোলেন। উদ্ধারকৃত সামগ্রী ব্যবহার করে তিনি একটি গুহাকে শক্তিশালী করেন, একটি তাঁবু স্থাপন করেন, ফসল চাষ করেন, ছাগল এবং একটি তোতাপাখিকে পোষ মানান। এছাড়াও কবুতর, কচ্ছপ এবং অন্যান্য খাদ্যও মজুত করে রাখেন।

১৭১৯ সালে ক্রুসোর স্রষ্টা ড্যানিয়েল ডিফোও তার নিজের জীবনে অভাবকে স্বচক্ষে দেখেছেন। তার কর্মজীবন ছিল বৈচিত্র্যময়। ইট, ওয়াইন, আচার, তামাক এবং সিভেট বিড়ালের গ্রন্থির ব্যবসা করেছিলেন তিনি। এমনকি তিনি ঘোড়া-বাণিজ্যের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন। তার আর্থিক অবস্থা ছিল শোচনীয়, দুইবার ঋণ খেলাপিতে আক্রান্ত হন তিনি। ডিফোও নিজেই বলেছেন, 'কোনো মানুষ আমার থেকে বেশি এতবার ধনী ও দারিদ্র্যের স্বাদ উপভোগ করেনি, আমি একাধারে তেরোবার ধনী ও দরিদ্র উভয় ছিলাম।'

ড্যানিয়েল ডিফো কিছু রূপক তৈরি করেছিলেন যা নিস্তেজ অর্থনৈতিক ধারণাকে প্রাণবন্ত চরিত্রে রূপান্তরিত করেছিল। তিনি 'কাউন্ট ট্যারিফ' এবং 'লেডি ক্রেডিট'-এর মতো চরিত্রগুলো তৈরি করেছিলেন। তার বই 'দ্য কমপ্লিট ইংলিশ ট্রেডসম্যান'কে প্রায়ই প্রথম ব্যবসায়িক পাঠ্যপুস্তক বলা হয়।

কিন্তু মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইকেল হোয়াইটের মতে, অন্যসব থেকে রবিনসনের এই দ্বীপ কাহিনীই সবথেকে বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। অর্থনীতিবিদরা তার বিচ্ছিন্নতাকে একটি সহায়ক উদাহরণ হিসাবে ব্যবহার করে মৌলিক আচরণগত নীতিগুলো খুঁজে পেতে পছন্দ করেন যা কেবল সামাজিক পরিস্থিতিতে নয়, সর্বত্র প্রযোজ্য।

উইলিয়াম ফরস্টার লয়েড প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন, অর্থনীতি, বাজার ছাড়াও মূল্য নিয়ে আলোচনা করতে পারে। ১৮৩৪ সালে তিনি উল্লেখ করেছিলেন, ক্রুসো সেসব পণ্যগুলোকে আরও বেশি মূল্য দেন যেগুলোর সরবরাহ কম থাকে। ক্রুসো বলেন, 'আমার কলমের কালি ফুরিয়ে যেতে শুরু করেছে। আমি এটি আরও কম ব্যবহার করতে পেরে নিজেকে সন্তুষ্ট করেছি'। লয়েড এটিকে প্রান্তিক উপযোগিতা হ্রাস করার নীতির প্রমাণ হিসাবে দেখেছিলেন। এই নীতিটি বোঝায় যে, পণ্যের সরবরাহ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এর অতিরিক্ত মূল্য বা উপযোগিতা হ্রাস পায়।

অনেক অর্থনীতিবিদ রবিনসন ক্রুসোর গল্পটি একটি তত্ত্ব প্রমাণ করার জন্য নয় বরং ব্যাখ্যা করার জন্য ব্যবহার করেন। উদাহরণস্বরূপ, পাঠ্যপুস্তক লেখকরা 'রবিনসন ক্রুসো' অর্থনীতিকে সহজতম দৃশ্যকল্পে, সরবরাহ এবং চাহিদার মূল বিষয়গুলো শেখানোর জন্য ব্যবহার করেন।

গুগলের প্রধান অর্থনীতিবিদ হ্যাল ভেরিয়ানের একটি পাঠ্যপুস্তকে এক ব্যক্তির 'রবিনসন ক্রুসো' অর্থনীতির একটি দৃশ্য রয়েছে। ক্রুসোকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কীভাবে তার সারাদিনকে নারকেল সংগ্রহ করা এবং ট্যানে কাজ করার মধ্যে ভাগ করা যায়। প্রান্তিক উপযোগিতা হ্রাস করার ধারণা অনুসরণ করে, প্রতিটি অতিরিক্ত নারকেল আগেরটির চেয়ে কম মূল্যবান।

ক্রুসো যদি নারকেল সংগ্রহের জন্য আরও বেশি সময় ব্যয় করে তাহলে প্রতিটি অতিরিক্ত ঘণ্টা কাজ করলে আগের ঘণ্টার তুলনায় কম নারকেল পাওয়া যাবে। এটি এই ধারণাটিকে প্রতিফলিত করে যে, উৎপাদনশীলতার সীমাবদ্ধতা রয়েছে এবং সংস্থান/সম্পদ যত বেশি ব্যবহার করা হয়, অর্জিত অতিরিক্ত আউটপুট কম হয়। এটি অর্থনীতিতে একটি মৌলিক ধারণা যা ব্যয় এবং সুবিধা বিশ্লেষণের উপর ভিত্তি করে সম্পদের যৌক্তিক বরাদ্দ এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণকে ব্যাখ্যা করতে সহায়তা করে।

ক্রুসোর এই এক-ব্যক্তি অর্থনীতিতে কিছু সুবিধা রয়েছে। কোনো অপচয় নেই কারণ অতিরিক্ত নারকেলের প্রয়োজন না হলে তা সংগ্রহ করা হবে না, সরবরাহ তার নিজস্ব চাহিদার সঙ্গে মেলে। বেকারত্বও নেই, ক্রুসো যদি অতিরিক্ত নারকেলকে তার অবসর সময়ের চেয়ে বেশি মূল্য দেন তবে তিনি নিজেই তা সংগ্রহ করবেন। তবে কেইনস উল্লেখ করেছেন, এ ধরনের অর্থনীতি ১৯৩০-এর দশকে দেখা মন্দার অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে না, যখন মানুষ তাদের আয়ের যথেষ্ট পরিমাণ অর্থব্যবস্থার উৎপাদিত পণ্যের জন্য ব্যয় করতে ব্যর্থ হয়।

পাঠ্যপুস্তকগুলো আরও জটিল অর্থনীতির মূল্যায়নের জন্য ক্রুসোর এক-ব্যক্তি অর্থনীতিকে একটি মানদণ্ড হিসাবে ব্যবহার করে। প্রশ্ন হলো, এর সামঞ্জস্য প্রতিলিপি করা যায় কি না, বিশেষ করে যখন সিদ্ধান্ত গ্রহণ বিকেন্দ্রীকৃত হয় এবং ভোক্তা ও উৎপাদকদের একই মানসিকতা থাকে না। উত্তর হল, হ্যাঁ। নমনীয় মূল্য এবং মজুরির মাধ্যমে লোকেরা দক্ষতার সঙ্গে একত্রে কাজ করার উপায় খুঁজে পেতে পারে।

ভ্যারিয়ানের থিসিস উপদেষ্টা অর্থনীতিবিদ ড্যানিয়েল ম্যাকফ্যাডেন ক্রুসোর আরেকটি গল্প সম্পর্কে জানান। এ গল্পে ক্রুসো নারকেলের পরিবর্তে ইয়াম সংগ্রহ করেন এবং ফ্রাইডে নামক ম্যানেজারের অধীনে কাজ করেন। ফ্রাইডে ক্রুসোকে পারিশ্রমিক হিসেবে ইয়াম প্রদান করেন এবং অতিরিক্ত ইয়াম তাকে লভ্যাংশ হিসেবে দিয়ে দেন। এই ধরনের নমনীয় ব্যবস্থা অর্থনীতিকে আরও সামঞ্জস্যপুর্ণ করে তোলে।া

ম্যাকফ্যাডেন ব্যাখ্যা করেন, ঘণ্টাপ্রতি নির্দিষ্ট মজুরি ক্রুসোর দ্বীপে শ্রম ও ইয়াম উভয়ের চাহিদা ও সরবরাহকে ভারসাম্যে রাখে। তবে মজুরি যদি ভুলভাবে প্রদান করা হয় তাহলে সমস্যা দেখা দিতে পারে। মজুরি বেশি পেলে ক্রুসো হয়তো বেশিক্ষণ কাজ করতে চাইবেন না। অতিরিক্ত এক ঘণ্টায় তিনি যে ইয়াম সংগ্রহ করতে পারতেন তা থেকে তার অবসর সময় বেশি মূল্য পাবে। কিন্তু তার প্রত্যাশিত মজুরি যদি আরও বেশি হয় তবে ফ্রাইডে হয়তো তাকে আর অতিরিক্ত কাজের জন্য নিয়োগ দেবেন না। এতে দ্বীপে চাহিদা ও যোগানের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে এক ধরনের মন্দার সৃষ্টি হবে। দ্বীপে অতিরিক্ত ইয়ামের চাহিদা এবং অব্যবহৃত শ্রমসংস্থানের শঙ্কা দেখা দেবে।

ফ্রাইডে যদি উদ্বিগ্ন হন যে, তিনি তার উৎপাদিত সমস্ত ইয়াম বিক্রি করতে পারবেন না, তাহলে তিনি তার শ্রম নিয়োগ সীমিত করে দেবেন। যার ফলে ক্রুসোর হাতে যেভাবে কাজ কমে যাবে ঠিক সেভাবে ফ্রাইডের কাছেও অতিরিক্র ইয়াম অবিক্রিত অবস্থায় পড়ে থাকবে। এখানে দুজনই পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল। শিকাগো অর্থনীতিবিদ ফ্র্যাংক নাইটের মতে, এই সরলীকৃত গল্পগুলো খুব অবাস্তব, খানিকটা কার্টুনের মতো। তবে এ ধরনের সরলীকরণ আমাদের কিছু ধারণা বুঝতে সাহায্য করতে পারে। ম্যাকফ্যাডেনের গল্প থেকে বোঝা যায় যে, মন্দা প্রয়োজনীয় বা উপকারী নয় বরং অযৌক্তিক এবং অদক্ষ।

যারা রবিনসন ক্রুসোর গল্প পছন্দ করেন তাদের কাছে এই আলোচনার লক্ষণীয় ব্যাপার হলো, এই গল্প ডিফোর মূল গল্প থেকে অনেকখানি আলাদা। মূল গল্পে কোনো নারকেল বা ইয়াম নেই। সেখানে সূর্য উপভোগ করার পরিবর্তে ক্রুসো একটি অস্থায়ী ছাতা ব্যবহার করে তা থেকে নিজেকে এড়িয়ে রাখেন। আর দ্বীপটিও দক্ষিণ সাগরে নয়, ত্রিনিদাদের কাছে। ফ্রাইডে এবং ক্রুসো শ্রমের বিপরীতে দর কষাকষি করেন না এবং ক্রুসো ফ্রাইডেকে উদ্ধার করার পর, ফ্রাইডে ক্রুসোকে 'মালিক' হিসেবে মান্য করতে থাকেন।

স্রেফ রুটি বানানোও কষ্টসাধ্য কাজ!

ডিফোর মূল গল্পে অনেক অর্থনৈতিক ঘটনা এবং রেফারেন্স রয়েছে যা অর্থনীতিবিদদেরকে আরও উদ্ঘাটনে উৎসাহিত করবে। গল্পে ক্রুসো উপলব্ধি করেন যে, রুটি উৎপাদন থেকে শুরু করে সরবরাহ পর্যন্ত অনেক ছোট ছোট জিনিসের প্রয়োজন। শুরু থেকে রুটি তৈরি করতে গিয়ে তিনি বোঝেন একটি সহজতম পণ্য উৎপাদনের জন্যও অনেকগুলো পদক্ষেপের প্রয়োজন পড়ে। এটি লিওনার্ড রিডের 'আই, পেন্সিল' প্রবন্ধের মতো, যেটি ওরেগন, শ্রীলঙ্কা এবং ইন্দোনেশিয়ার মতো বিভিন্ন স্থানের উপকরণ ব্যবহার করে একটি সাধারণ পেন্সিল তৈরির জটিল যাত্রার কথা বলে, যা তাদের নিজস্ব জটিল মেশিন দ্বারা প্রক্রিয়া করা হয়।

ক্রুসোর রুটি তৈরি সম্পর্কে জানার পর অর্থনীতিবিদরা তার মাটির পাত্র তৈরি করার দিকে নজর দিতে পারেন। ফসল সঞ্চয় করার জন্য দুটি বড় বয়াম তৈরি করতে তার প্রায় দুই মাস সময় লাগে। আর শস্য সংরক্ষণ করাও সহজ ব্যাপার না, কীট পতঙ্গের আক্রমণে তার উৎপাদিত ফসল নষ্ট হয়ে যায়। ১৯১৬ সালে সিলভিও গেসেলের বই 'দ্য ন্যাচারাল ইকোনমিক অর্ডার'-এ তিনি কল্পনা করেন যে, ফ্রাইডের মতো কাউকে তিনি তার অতিরিক্ত খাবার দিতে পারলে কতটা না খুশি হতেন। ফ্রাইডে এর বিনিময়ে অর্থ প্রদান না করলেও ক্রুসো খুশি থাকতেন কারণ খাবারগুলো অন্তত নষ্ট হওয়া থেকে বেঁচে যাবে, নিরাপদে থাকবে। যারা বর্তমানের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা পছন্দ করেন না, তাদের জন্য এটি একটি ভালো উদাহরণ। অনেক সমস্যা থাকার পরও এই ব্যবস্থা সহজে মানুষকে তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে নিরাপদে টাকা রাখার সুবিধা দেয়, কোনো অদ্ভুত বয়ামে রাখা লাগে না।

পাঠ্যবইয়ে ক্রুসো একজন যুক্তিবাদী মানুষ। ডিফোর গল্পে ক্রুসো আরও অপ্রত্যাশিত এবং বিরোধপূর্ণ। এটি তাকে নতুন, মনোবিজ্ঞান-ভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের তত্ত্বগুলোর জন্য উপযুক্ত করে তোলে। তাকে 'আচরণগত অর্থনীতির' প্রতীক হিসাবে দেখা যেতে পারে।

যা আছে তা নিয়েই কৃতজ্ঞ থাকা

ক্রুসো তার নিকট থাকা সামান্য কালি দিয়েই তার বিদ্যমান অবস্থার বর্ণনা লিখে রাখতেন। তিনি দ্বীপে ভালো-মন্দের একটি তালিকা তৈরি করেন। যেমন দ্বীপটি খালি আছে, কিন্তু কোনো প্রয়োজনীয় বস্তু নেই। কোনো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নেই আবার আশেপাশে কোনো ভয়ংকর প্রাণীও নেই। জাহাজের ধ্বংসাবশেষ থেকে কাউকে জীবিত না পেলেও কিছু খাবারের ব্যবস্থা করতে পেরেছিলেন তিনি।

পুরষ্কারপ্রাপ্ত মনোবিজ্ঞানী ড্যানিয়েল কাহনেম্যান বলেন, লোকেরা যখন তাদের জীবন সম্পর্কে চিন্তা করে, তারা প্রায়শই জিনিসগুলোকে কিছু নিরপেক্ষ বিন্দুর সঙ্গে তুলনা করে, সামগ্রিকভাবে কতটা ভালো বা খারাপ তা বোঝার জন্য।

আচরণগত অর্থনীতির আইকন রুশো

তবে ক্রুসো তার ভালমন্দের তালিকা তৈরি করার সময় অন্যান্য সম্ভাবনার কথাও ভাবেন। জাহাজডুবির পর আটকে থাকাকে তার আপাতদৃষ্টিতে বড় ক্ষতি মনে হলেও ডুবে মারা যাওয়া কিংবা কোনো বিপজ্জনক তীরে হারিয়ে যাওয়ার থেকে তা যথেষ্ট ভালো। মি. কাহনেম্যান এবং টোভারস্কি ব্যাখ্যা করেন, মানুষ যখন অন্যান্য সম্ভাবনাসমূহকে চিন্তা করে তখন তারা একটি নিয়ম অনুসরণ করে। তারা তাদের কোনো অপ্রত্যাশিত বা আশ্চর্যজনক ঘটনাকেই উপেক্ষা করে তাদের পরিস্থিতিকে তুলনা করে, চিন্তা করে।

ক্রুসো ধ্বংসপ্রাপ্ত জাহাজটি ফেলে আসার পরেও এটি স্রোতের কারণে তীরের নিকট চলে আসে। ফলে জাহাজ থেকে তার সবকিছু আবার দ্বীপে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়। ক্রুসো জানান, এই ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা লাখে একবার ছিল। ফলে তিনি সহজেই আরেকটি দৃশ্যের কথা ভাবতে পারেন যেখানে তিনি জাহাজ থেকে কিছুই রক্ষা করতে পারেনি। এটা ভাবার পর ক্রুসো কিছুটা ভালো অনুভব করেন নিজের এই পরিস্থিতি নিয়ে।

আচরণগত অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, একাধিক পছন্দ থাকা সবসময় ভালো না। মানুষ এমন জিনিস বেছে নেয় যা দীর্ঘমেয়াদে তাদের জন্য মঙ্গলকর নয়। পছন্দ করার পর আবার অনুশোচনা করে অন্য কিছু বাছাই করলো না কেন এটা ভেবে!

এই দ্বীপে ক্রুসো যদি একা না থাকতেন তাহলে হয়তো তিনি খুশি মনেই এখানে জীবনযাপন করতেন। কিন্তু একা থাকায় সবসময় ভাবেন অন্য কোথাও থাকলেও হয়তো আরও সুন্দর জীবন উপভোগ করতে পারতেন!

এই উদাহরণগুলো অর্থনীতিবিদদের রবিনসন ক্রুসোর গল্প থেকে অনেক প্রয়োজনীয় জিনিস শেখার অনুপ্রেরণা দেয়। একইভাবে, অর্থনীতি অধ্যয়ন সাহায্য করেছে ডিফোর কাজের বিভিন্ন দিক বুঝতে ও উপলব্ধি করতে। অর্থনীতি সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান ডিফোর কিছু লেখাও আরও আকর্ষণীয় ও স্পষ্ট করে তোলে আমাদের কাছে।

Related Topics

টপ নিউজ

রবিনসন ক্রুসো / অর্থনীতি / অর্থনীতিবিদ / ড্যানিয়েল ডিফো

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • ছবি: রয়টার্স
    এইচ-১বি ভিসা: সময়সীমা শেষ হওয়ার ভয়ে ৮ হাজার ডলার খরচ করে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরলেন ভারতীয়
  • বিরল ইয়েলো ফ্ল্যাপশেল টার্টল। ছবি: সৌজন্যে প্রাপ্ত
    ওয়াইল্ডলাইফ ইন্সপেক্টর: ছদ্মবেশী, সন্ধানী অসীম মল্লিকের গল্প
  • ছবি: সংগৃহীত
    লাকি আলী: কৈশোরে ঘর ছেড়েছেন, করেছেন কার্পেট পরিষ্কারের ব্যবসা, ‘অসম্মানের’ কারণে ছেড়েছেন বলিউড 
  • ছবি: এই সময়
    নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিকে চান ফখরুল
  • ফাইল ছবি: সংগৃহীত
    দর স্থিতিশীল রাখতে নিলামে আরও ১৩০ মিলিয়ন ডলার কিনল বাংলাদেশ ব্যাংক
  • প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী। ফাইল ছবি: বাসস
    ‘শুধু গত ১৫ বছরে নয়, আমাদের ডিএনএ দূষিত হয়ে গেছে’: প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান

Related News

  • চীন যেভাবে ট্রাম্পের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধ মোকাবিলা করছে
  • রাগ যেভাবে আপনার খরচ বাড়িয়ে দেয়—একটি মনস্তাত্ত্বিক ও আর্থিক বিশ্লেষণ
  • ঋণাত্মক আবেগ ও অর্থব্যয়ের মনস্তত্ত্ব—নীরব, কিন্তু গভীরভাবে সংযুক্ত
  • অর্থনীতিতে সব মানুষের অংশগ্রহণের পরিকল্পনা করছে বিএনপি: আমির খসরু
  • অন্তর্বর্তী সরকার কি পথ হারিয়েছে, এই প্রশ্ন এখন সবার মধ্যে: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

Most Read

1
ছবি: রয়টার্স
আন্তর্জাতিক

এইচ-১বি ভিসা: সময়সীমা শেষ হওয়ার ভয়ে ৮ হাজার ডলার খরচ করে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরলেন ভারতীয়

2
বিরল ইয়েলো ফ্ল্যাপশেল টার্টল। ছবি: সৌজন্যে প্রাপ্ত
ফিচার

ওয়াইল্ডলাইফ ইন্সপেক্টর: ছদ্মবেশী, সন্ধানী অসীম মল্লিকের গল্প

3
ছবি: সংগৃহীত
বিনোদন

লাকি আলী: কৈশোরে ঘর ছেড়েছেন, করেছেন কার্পেট পরিষ্কারের ব্যবসা, ‘অসম্মানের’ কারণে ছেড়েছেন বলিউড 

4
ছবি: এই সময়
বাংলাদেশ

নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিকে চান ফখরুল

5
ফাইল ছবি: সংগৃহীত
অর্থনীতি

দর স্থিতিশীল রাখতে নিলামে আরও ১৩০ মিলিয়ন ডলার কিনল বাংলাদেশ ব্যাংক

6
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী। ফাইল ছবি: বাসস
অর্থনীতি

‘শুধু গত ১৫ বছরে নয়, আমাদের ডিএনএ দূষিত হয়ে গেছে’: প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net