হাদিকে হত্যাচেষ্টা: ফিলিপের সহায়তায় দেশ ছেড়েছেন শুটার ফয়সাল, রিমান্ডে সিবিয়ন ও সঞ্জয়
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান ওরফে শুটার ফয়সালকে অবৈধ পথে ভারতে পালিয়ে যেতে সহায়তা করেছেন ফিলিপ নামের এক ব্যক্তি।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রিমান্ড শুনানিকালে আদালতের জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার সিবিয়ন দিউ ও সঞ্জয় চিসিম এই দাবি করেন।
এদিন সন্ধ্যায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির মতিঝিল জোনাল টিমের পুলিশ পরিদর্শক ফয়সাল আহম্মেদ আসামিদের আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জশীতা ইসলামের আদালত প্রত্যেকের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
শুনানির শুরুতে তদন্ত কর্মকর্তা সাত দিনের রিমান্ড চাওয়ার স্বপক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, 'বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, ফয়সালের সঙ্গে সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন এ দুই আসামি। ফয়সাল হয়তো দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। তাকে পলায়নে সহায়তা করেছেন এই আসামিরা। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আসামিদের সাত দিন হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।'
এরপর শুনানিতে অংশ নিয়ে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, 'এই দুজন আসামির বাড়ি হালুয়াঘাট। তারা আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি জুয়েল আরেংয়ের ভাগ্নে। ফয়সালকে পালিয়ে যেতে তাদের সহযোগিতার বিষয়টি সাক্ষ্য-প্রমাণে পাওয়া যায়। আসামিদের সাত দিনের রিমান্ড প্রার্থনা করছি।'
এদিন আসামিপক্ষে কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না।
আদালতে আসামি সিবিয়ন দিউ বলেন, 'ফিলিপের সঙ্গে আমার শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) আলাপ হয়। একটা পেইজে ওনার নাম দেখার পর।'
বিচারক তখন প্রশ্ন করেন, 'আপনি ফিলিপকে আগে থেকেই চিনতেন?'
উত্তরে সিবিয়ন বলেন, 'হ্যা, চিনতাম। উনি আমার পার্শ্ববর্তী এলাকারই। উনার নাম দেখে উনাকে ফোন দিলাম। বললাম, তোমার নাম আসছে। সে বললো, দাদা, আমি তো জানি না, কেন কীভাবে নাম আসছে? আমি বললাম, তুমি জানো না, ঢাকাতে দুজন লোককে খুঁজছে। পরে সে বললো, হ্যা, আমি দুটো লোককে পার করেছি।'
এ সময় ফিলিপ কোথায় আছে জানতে চাইলে তিনি সেটা জানেন না বলে আদালতকে জানান।
সিবিয়ন দিউয়ের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আরেক আসামি সঞ্জয় চিসিম তখন বলেন, 'ফিলিপের সঙ্গে আমার ফোনে কথা হয়। এ ঘটনা সম্পর্কে আমি কিছু জানি না। ওইদিন রাতে ফোন দিয়ে রাস্তায় দাঁড়ানোর কথা বলে। পরে ফোন দিয়ে জানায়, তার কাজ হয়ে গেছে, আমি যেন বাসায় ফিরে যায়। যেদিন পুলিশ আমারে ধরছে, সেদিন বুঝতে পারছি বিষয়টা এটা।'
উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচারক তাদের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে, গত ১৭ ডিসেম্বর ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট ও ধোবাউড়া থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এখন পর্যন্ত এই মামলায় মোট ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
