জসিমের হুংকার আর লাভলীর জিনস দিয়ে যেভাবে দর্শক মাতিয়েছিল দোস্ত দুশমন
জ্যাম্বস প্রোডাকশন্সের অধিকর্তারা বেশ দ্বিধায় ছিলেন—ওয়েস্টার্ন প্যাটার্নের একটি ছবি পরিচালনার দায়িত্ব ছেলেটি ঠিকঠাক সামলাতে পারবে তো? দেশে এর আগে এমন ছবি আর একটিও হয়নি, তাই দুশ্চিন্তাটা একটু বেশিই ছিল। দেওয়ান নজরুলের বয়স তখন ছাব্বিশ, তাগড়া জোয়ান। মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছেন, অংশ নিয়েছেন সম্মুখসমরে। বুকভরা সাহস তার। যুদ্ধের কলাকৌশল অনেকটাই আয়ত্তে; বোমা-গুলির হালহকিকতও বেশ ভালো জানা। তার ওপর ফোক-ফ্যান্টাসি ছবির রাজা বলে পরিচিত পরিচালক ইবনে মিজানের প্রধান সহকারী তিনি। তাই নিজের ওপর তার আত্মবিশ্বাস ছিল যে তিনি পারবেন।
চুমকি টাঙ্গাওয়ালি
গল্পটির সন্ধান দিয়েছিলেন চিত্রগ্রাহক অরুণ রায়। মুম্বাইয়ের (তৎকালীন বোম্বে) ছবি 'শোলে' তখন সারা ভারত কাঁপাচ্ছে। গল্পটি শুনিয়ে অরুণ রায় বললেন, 'তুমি যে ধরনের ছবি বানাতে চাও, এটি অনেকটাই সেরকম।' নজরুলের মনে পড়ে গেল, হলিউডেরও এই ধারার একটি ছবি তার দেখা আছে, নাম 'দ্য ম্যাগনিফিসেন্ট সেভেন'। গুলিস্তানের নাজ অথবা মধুমিতা হলে দেখেছিলেন ছবিটি। গল্প মনে গেঁথে চিত্রনাট্য লিখতে বসে গেলেন। প্রথমে ছবির বাংলা নাম ঠিক করলেন 'দোস্ত দুশমন'। কারণ, এখানে নারী-পুরুষের প্রেম নয়, বরং বন্ধুর প্রতি বন্ধুর ভালোবাসাই প্রধান বিষয়; আর দুই বন্ধুর প্রতিপক্ষ এক ভয়ংকর ডাকাত।
'দোস্ত দুশমন'-এ 'শোলে'র ডাকাত গব্বর সিং চরিত্রটির বাংলায়ন করা হয়েছিল 'গাফফার খান' নামে। প্রধান দুই চরিত্র অমিতাভ বচ্চন ও ধর্মেন্দ্র, পর্দায় যারা জয় ও ভিরু নামে হাজির হয়েছিলেন, তাদের আদলে ওয়াসিম ও সোহেল রানা অভিনীত চরিত্র দুটির নাম রাখা হলো রাজা ও জনি।
'শোলে'র নায়িকা হেমা মালিনীর চরিত্রের নাম ছিল বাসন্তী, তার জায়গায় শাবানার নাম হলো চুমকি। এই নাম দিয়ে দেওয়ান নজরুল যে গানটি লিখেছিলেন—'চুমকি চলেছে একা পথে', তা আজও শ্রোতাদের শিহরিত করে। ছবির সংগীত পরিচালক আলম খানকে তিনি নিয়ে গিয়েছিলেন ফুলবাড়িয়া রেলস্টেশনের ধারের টাঙ্গাওয়ালাদের ডেরায়। ঘোড়ার চলার ছন্দ ও খুরের আওয়াজ গানটিতে ব্যবহার করা হয়েছিল।
ছবিটিতে শাবানা 'টাঙ্গাওয়ালি'র চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। চরিত্রের প্রয়োজনে তাকে রাতে নিয়ে যাওয়া হতো ঢাকা মেডিকেল সংলগ্ন রাস্তায়। তখন সেখানে শালবাগান ছিল, এলাকাটিও ছিল বেশ নীরব। শাবানাকে প্রশিক্ষিত করার জন্য একজন টাঙ্গাওয়ালাকে নিযুক্ত করা হয়েছিল। পরিচালক পাশে বসে থেকে শাবানাকে টাঙ্গা চালানো শিখিয়েছিলেন।
পরিচালক গানটির দৃশ্যধারণ করেছিলেন ড্রাইভার মনসুরের গাড়ির চাকার হাওয়া অর্ধেক ছেড়ে দিয়ে। মনসুরের এই 'মুড়ির টিন' মার্কা বাসটি শুটিংয়ের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত 'দোস্ত দুশমন' ইউনিটের সঙ্গে ছিল। 'চুমকি' গানের দৃশ্যে দেখা যায়, শাবানা টাঙ্গা চালিয়ে যাচ্ছেন আর সাইকেলে করে তার পিছু নিয়েছেন ওয়াসিম। তখন ক্যামেরা বসানো ছিল সেই মুড়ির টিন বাসের ছাদের ওপর। বাসের চাকায় পুরো হাওয়া ভরা থাকলে টাঙ্গার গতির সঙ্গে তাল মেলাতে ঝাঁকুনিতে সমস্যা হতো, তাই চাকার হাওয়া অর্ধেক ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল।
স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে জনাব নজরুল বলছিলেন, 'সেকালে, মানে ১৯৭৭ সালের কথা আজকে চিন্তাও করা যাবে না। সবকিছুই ছিল ম্যানুয়াল। ফিতা দিয়ে দৈর্ঘ্য মেপে ব্যক্তি বা বস্তুর ফোকাস ঠিক করতে হতো। ক্রেনের এক প্রান্তে ৫-৬ জন মিলে চেপে ধরে অন্য প্রান্তে ক্যামেরাসহ ক্যামেরাম্যানকে ওপরে ওঠাতে হতো, তবেই না নেওয়া যেত ওভারহেড শট। মাঝেমধ্যে কেরোসিন দিয়েও মনসুরকে গাড়ি চালাতে দেখেছি। যারা বোমা ফোটাত, তারা হারমোনিয়ামের মতো একটি বোর্ড ব্যবহার করত। তাদের আঙুলে তার বাঁধা থাকত, বোর্ডে রাখা সুইচে আঙুল পড়লে বোমা ফুটত। তারা ছিল খুবই দক্ষ, ভুল আঙুল ভুল সুইচে ফেলত না; নইলে সর্বনাশ হয়ে যেত। সে আমলে শুটিং ইউনিটের সবাই তাৎক্ষণিক প্রয়োজনে কিছু না কিছু আবিষ্কার করে নিত।'
পেরেক ঠুকে জিনস গাঁথতে হয়েছিল
ঢাকাই চলচ্চিত্রের ইতিহাসে প্রথম জিনস কাপড় ব্যবহৃত হয় 'দোস্ত দুশমন' ছবিতেই। জিনসগুলো খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল বায়তুল মোকাররমের লাভলি স্টোরে। স্টোরের মালিক সেগুলো বিনামূল্যেই দিয়েছিলেন। ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছিল না বলে দীর্ঘদিন সেগুলো দোকানে পড়েই ছিল।
তবে গোল বাঁধল প্যান্ট-জ্যাকেট বানাতে গিয়ে। ওগুলো সেলাই করার মতো শক্ত সুই আর সেলাই মেশিন তখন ছিল না। শেষে পল্টনের এশিয়ান টেইলার্সের এক দর্জি বুদ্ধি বের করলেন। পেরেক দিয়ে ঠুকে ঠুকে ছিদ্র করে তার ভেতর দিয়ে নাইলনের সুতা ঢুকিয়ে সেলাই করে দিয়েছিলেন। এক পোশাকেই পুরো ছবিতে নায়ক-নায়িকারা অভিনয় করেছেন। টাঙ্গাওয়ালি চরিত্রে শাবানা পরেছিলেন ঘাগড়া ও ব্লাউজ।
ওয়াসিম, সোহেল রানা, শাবানা ছাড়াও ছবিতে ছিলেন আজিম, সুচরিতা প্রমুখ। সবাই সেকালের নামী অভিনয়শিল্পী। নতুন এক পরিচালকের ছবিতে তাদের রাজি করানো কি সহজ ছিল? দেওয়ান নজরুল বললেন, 'ছবিটির বিষয়বস্তু অভিনয়শিল্পীদের আকৃষ্ট করেছিল। সেকালে বেশিরভাগ ছবি হতো সামাজিক বা রোমান্টিক। ওয়েস্টার্ন ঘরানার একটি ছবিতে তাই নিজেকে হাজির করতে চাইছিলেন, বলা যায় পরীক্ষামূলকভাবেই। সে কারণে নায়ক-নায়িকাদের রাজি করাতে বেশি বেগ পেতে হয়নি।'
পরচুলা ছিল সবার
নায়ক ও ভিলেন—সবার জন্যই তৈরি করা হয়েছিল পরচুলা। জামান নামের এক মেকআপম্যান কাজটি করেছিলেন অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে। দর্শকরা বুঝতেই পারেননি যে এগুলো আসল চুল নয়। রাইফেল-পিস্তল তৈরি করে দিয়েছিলেন নুরু।
দেওয়ান নজরুল তার প্রশংসা করে বললেন, 'একজন জাত শিল্পী ছিল নুরু। মাটির মূর্তি তৈরিতে তার সমকক্ষ খুব বেশি কেউ ছিল না। মাটি দিয়েই প্রথমে সে রাইফেল, পিস্তল ও চাহিদামতো আরও আগ্নেয়াস্ত্র তৈরি করে দিয়েছিল। পরে সেগুলো কাঠমিস্ত্রির কাছে পাঠিয়ে কাঠ দিয়ে বাট, বডি ও ব্যারেল তৈরি করিয়ে নেওয়া হয়।'
'এছাড়া ডাকাত বাহিনীর কোমরে কারতুজ রাখার মোটা বেল্ট তৈরি করিয়েছিলাম পুরান ঢাকা থেকে চামড়া কিনে এনে। সৃষ্টির উল্লাসে আমরা তখন মত্ত। রাত নেই, দিন নেই; ছুটোছুটি করেছি।'
কিন্তু প্রযোজকদের দ্বিধা তবু কাটে না। শেষে দেওয়ান নজরুল বলতে গেলে জামানত হিসেবে ৩৫ হাজার টাকা ধার দিলেন প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানকে। এর মধ্যে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে ৩০টি ঘোড়া ভাড়া চেয়ে আবেদন করা হয়েছিল। আবেদন মঞ্জুর হলে শুটিংয়ের দিনক্ষণ নির্ধারণ করা হলো। এফডিসির ২ নম্বর ফ্লোরের পেছনে ছন ও বাঁশ-বেড়া দিয়ে ত্রিশটি ঘর তৈরি করা হয়েছিল। আধাপাকা একটি মসজিদও বানানো হয়।
গল্পে গাফফার খান ঘোড়া চালিয়ে এই গ্রামটিতেই হামলা চালায় এবং নিয়ন্ত্রণ নেয়। গ্রামের সব মানুষ তার কাছে জিম্মি। পুলিশ অফিসার আজিম তাকে ধরার চেষ্টা করেন। কিন্তু গাফফার খান এতটাই শক্তিশালী যে, সে পুলিশ অফিসারের দুটি হাত কেটে নেয়। তখন আজিম প্রতিশোধ নিতে বদ্ধপরিকর হন।
ওয়াসিম ও সোহেল রানা ছবিতে চোরের অভিনয় করেন। একপর্যায়ে তাদের বন্ধুত্ব গাঢ় হয়। আজিম তাদের প্রতিশোধ নেওয়ার কাজে লাগান এবং সফল হন। মোটামুটি এই হলো ছবির কাহিনি। মাঝখানে আছে শাবানা আর ওয়াসিমের কিছু দুষ্টু-মিষ্টি প্রেম।
গ্রামে ডাকাত দলের হানার দৃশ্যে দেওয়ান নজরুল চারটি ক্যামেরা আর অনেকগুলো পেট্রলবোমা ব্যবহার করেছিলেন। পরের শুটিংটি হয় তৎকালীন প্রাইভেট স্টুডিও 'বারি স্টুডিও'-তে। সেখানে ড্রাম, বাক্স ইত্যাদি দিয়ে গুহার মতো ডাকাত সর্দারের অস্থায়ী আস্তানা তৈরি করা হয়েছিল। শরফুদ্দিন ভুঁইয়া ছিলেন ছবির শিল্প নির্দেশক।
লালমাই পাহাড়ে এক মাস
এরপর পুরো ইউনিট নিয়ে জনাব নজরুল চলে যান কুমিল্লার লালমাই পাহাড়ে। জায়গাটি আগেই দেখা হয়ে গিয়েছিল তার। তাই কোথায় কোন শট নেওয়া হবে, তাও চিত্রনাট্যে দাগানো হয়ে গিয়েছিল।
লোকেশনটি ছিল এককথায় অনবদ্য। কুমিল্লা শহর থেকে সাত কিলোমিটার পশ্চিমে কোটবাড়িতে এর অবস্থান। বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বার্ড) ছাড়াও এখানে আছে বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ কারণে জায়গাটি নিরাপদও ছিল। অভিনয়শিল্পী ও কলাকুশলীদের থাকার ব্যবস্থাও হয়েছিল প্রতিষ্ঠানগুলোর রেস্টহাউসে।
প্রতিদিন ভোরে বাবুর্চিকে সঙ্গে নিয়ে মনসুরের গাড়ি চলে যেত কুমিল্লা শহরে। প্রয়োজনমতো বাজার সেরে তাড়াতাড়ি ফিরে আসত। সকালের নাশতায় দেওয়া হতো ডিম, নানরুটি ও ভাজি। দুপুরে মুরগি ও গরুর মাংস, সবজি, ডাল। শাবানা শুঁটকি, বেগুনভর্তা ও মাছভর্তা পছন্দ করতেন। সন্ধ্যায় কেক বা বিস্কুটের সঙ্গে চা দেওয়া হতো।
একে তো অ্যাকশন ছবি, তার ওপর পাহাড়ি এলাকা হওয়াতে শুটিংয়ে সবারই খুব খাটুনি যেত। অ্যাকশন দৃশ্যে নায়ক ও ভিলেনের সঙ্গে ক্যামেরাম্যানও গড়িয়ে পড়তেন। শরীরের এখানে-সেখানে কেটে যেত, ব্যথাও হতো। সেগুলো সারাতে ওষুধ খেতে হতো। সন্ধ্যার নাশতা শেষ হতে না-হতেই অনেকে ঘুমিয়ে পড়তেন, দশটার দিকে রাতের খাবারের জন্য ডেকে ডেকে তুলতে হতো।
টানা এক মাস শুটিং হয়েছিল 'দোস্ত দুশমন'-এর। খুব বেশি ফুরসত কেউ পাননি। সময় পাওয়া গেলে ব্যাডমিন্টন বা তাস খেলা হতো। শুটিংয়ে সহযোগিতা করেছিলেন কুমিল্লা সেনানিবাসের তৎকালীন জিওসি মেজর জেনারেল (অব.) আমজাদ খান চৌধুরী।
দেওয়ান নজরুল তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বললেন, 'জনাব চৌধুরীর চলচ্চিত্রের প্রতি আগ্রহ ছিল। তিনি অনেক রকম সহযোগিতা আমাদের দিয়েছিলেন। সেনাসদস্যদের বুটজুতাও আমরা ধার নিয়েছিলাম। ছবির প্রায় শেষ দিকে একটি বিস্ফোরণের দৃশ্য পুরোটাই বাস্তবায়ন করেছিলেন সেনাসদস্যরা। কৃত্রিমভাবে একটি কাঠের সেতু বানিয়েছিলাম; প্রতিপক্ষ যেন সেতু পার হতে না পারে, তার জন্য সোহেল রানা সেতুটি উড়িয়ে দেন। আর এর পুরোটাই সম্পন্ন হয়েছিল সেনাবাহিনীর সহায়তায়।'
'দোস্ত দুশমন' নির্মাণে খরচ হয়েছিল ১২ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা; আর ছবিটি আয় করে প্রায় ১ কোটি টাকা। ৬০ হাজার ফুট ফিল্ম শুট করা হয়েছিল, সম্পাদনা শেষে যা দাঁড়িয়েছিল ১২ হাজার ৬০০ ফুটে। দেশের প্রায় সব বড় সিনেমা হলে চলেছিল 'দোস্ত দুশমন'।
একজন দেওয়ান নজরুল
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ১৯৫০ সালে জন্মগ্রহণ করেন দেওয়ান নজরুল। স্থানীয়ভাবে প্রকাশিত 'যমুনা' পত্রিকায় কবিতা প্রকাশের মাধ্যমে তার লেখালেখি শুরু। ঢাকায় আসেন ১৯৬৯ সালে। 'দৈনিক স্বদেশ' পত্রিকায় সাংবাদিকতা শুরু করেন, সমানতালে চালিয়ে যান কবিতা লেখাও। পরিচালনায় আসার আগেই গীতিকার হিসেবে তিনি সুনাম অর্জন করেন। তার লেখা প্রথম গান ব্যবহৃত হয় 'কে তুমি' চলচ্চিত্রে। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি ৭ নম্বর সেক্টরের অধীনে পাবনা অঞ্চলে যুদ্ধ করেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে ফুফাতো ভাই ইবনে মিজানের 'ডাকু মনসুর', 'নিশান', 'জিঘাংসা', 'বাহাদুর' প্রভৃতি চলচ্চিত্রে তিনি সহকারী বা প্রধান সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেন।
'আসামি হাজির' ছবি দিয়ে তিনি পরিচালনা শুরু করলেও ছবিটি প্রথম দফায় শেষ করতে পারেননি। সেই হিসেবে তার প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি 'দোস্ত দুশমন'।
এটি ছাড়াও তিনি ১৬টি সুপারহিট চলচ্চিত্র দর্শকদের উপহার দিয়েছেন। সেই তালিকায় আছে বারুদ, জনি, কুরবানি, ধর্ম আমার মা, আসমান জমিন, মাটির দুর্গ, মাস্তান রাজা, কালিয়া, দোজখ ইত্যাদি। তার সহকারীদের মধ্যে পরিচালক রায়হান মুজিব, রানা নাসের, সোহানুর রহমান সোহান স্বনামধন্য। অভিনেতা রিয়াজ তার হাত ধরেই যাত্রা শুরু করেন। তার 'জনি' ছবিটি দিয়েই যশোরের মণিহার হলের পর্দা উন্মোচিত হয়।
তার লেখা অনেক জনপ্রিয় গানের মধ্যে 'চুপি চুপি বল কেউ', 'চুমকি চলেছে একা পথে', 'রূপে আমার আগুন জ্বলে', 'আজকে না হয় ভালোবাসো', 'নাচ আমার ময়না', 'পাখির বাসার মতো দুটি চোখ তোমার', 'দুনিয়াটা মস্ত বড়' ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। কবি, গীতিকার ও পরিচালক দেওয়ান নজরুল আজ এই পঁচাত্তর বছর বয়সেও সজীব ও প্রাণবন্ত।