আগামীকাল সকাল ১১টা পর্যন্ত বাড়ল গোপালগঞ্জে কারফিউ
আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে গোপালগঞ্জে আজ (১৭ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা থেকে আগামীকাল (১৮ জুলাই) দুপুর ১১টা পর্যন্ত ফের কারফিউ জারি করা হয়েছে। দুপুর ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টার জন্য কারফিউ বন্ধ থাকবে। এরপর দুপুর ২টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কারফিউ বহাল থাকবে।
আজ (১৭ জুলাই) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে বুধবার (১৬ জুলাই) রাত ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২২ ঘণ্টার কারফিউ জারি করে প্রশাসন।
বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কারফিউয়ের মধ্যে এ পর্যন্ত ২০ জনকে আটকের খবর নিশ্চিত করেছেন গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মীর মো. সাজেদুর রহমান।

মূলত বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে এই ২০ জনকে আটক করার কথা জানান তিনি।
আটককৃতদের গোপালগঞ্জ সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। আটকদের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে বলে জানান ওসি মীর মো. সাজেদুর রহমান।

গোপালগঞ্জের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে বলেও জানান তিনি।
এছাড়া গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. কামরুজ্জামান জানিয়েছেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।
সংঘর্ষের পর থেকে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে গোপালগঞ্জের যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। যাতায়াত ব্যবস্থা একদম বন্ধ রয়েছে।

নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা গা ঢাকা দিয়েছেন। তারা গ্রেফতারের আতঙ্কে রয়েছেন।
বুধবার এনসিপির সমাবেশকে ঘিরে পুলিশের সঙ্গে এনসিপি নেতাকর্মী এবং আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের কর্মীদের মধ্যে দিনভর সংঘর্ষ হয়। এতে চারজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।
আরও পড়ুন: গোপালগঞ্জে সমাবেশ শেষে এনসিপি নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা, ১৪৪ ধারা জারি
আইন শৃঙ্খলা বাহিনী রাস্তায় টহল দিচ্ছে এবং মাইকিং করে স্থানীয়দের ঘরে থাকার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। আজ সকালে পরিস্থিতি শান্ত মনে হলেও জেলাজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং স্থানীয় মানুষদের মধ্যে এখনো আতঙ্ক রয়েছে।

কারফিউ চললেও খেটে খাওয়া মানুষেরা পেটের দায়ে সকালে রাস্তায় বের হয়েছেন। শহরে সীমিত আকারে রিকশা চলাচল করলেও অন্য কোনো যানবাহন তেমন একটা চলাচল করছে না। শহরবাসীর অনেকেই পরিস্থিতি বুঝতে বাইরে বের হচ্ছেন। ব্যবসায়ীরা আতঙ্কে সব দোকানপাট বন্ধ রেখেছেন।
প্রসঙ্গত, গোপালগঞ্জে সভা শেষে ফেরার পথে এনসিপির গাড়িবহরে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের হামলার পর হামলাকারী ও পুলিশের মধ্যে প্রায় তিন ঘণ্টা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে। এতে বাজার এলাকা থেকে পাচুড়িয়া পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার সড়ক রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।

পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী হামলাকারীদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে নিষিদ্ধ ঘোষিত যুবলীগের এক সদস্যসহ চারজন নিহত হন এবং সাংবাদিক-পুলিশসহ প্রায় ১০০ জন আহত হন।
আরও পড়ুন: গোপালগঞ্জে এনসিপির পথসভায় হামলা: গুলিবিদ্ধ ৪ জন নিহত, এলাকা রণক্ষেত্র
নিহতরা হলেন—জেলা শহরের উদয়ন রোডের যুবলীগ সদস্য দীপ্ত সাহা (২৫), থানাপাড়ার রমজান কাজী (২৪), আড়পাড়ার ইমন তালুকদার (১৮) এবং টুঙ্গিপাড়ার ইদ্রিস মোল্যা।
