মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড: ৫ দিনের রিমান্ডে আসামি টিটন গাজী

রাজধানীর পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতাল এলাকায় ভাঙাড়ি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ (৩৯) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেপ্তার মো. টিটন গাজীকে ৫ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত।
শনিবার (১২ জুলাই) বিকালে শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাসিব উল্লাহ গিয়াসের আদালত এই আদেশ দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. নাসির উদ্দিন আসামি টিটন গাজীকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।
এ সময় আসামি পক্ষের কোনো আইনজীবিকে আদালতে দেখা যায়নি।
রিমান্ড আবেদন অনুযায়ী, টিটন গাজী হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত ছিল এবং তাকে অন্যান্য সন্দেহভাজন ব্যক্তিরা চেনে। পুলিশ জানিয়েছে, এজাহারে উল্লিখিত অজ্ঞাতনামা আসামিদের শনাক্ত করতে এবং হামলার পরিকল্পনা ও ব্যবহৃত অস্ত্র খুঁজে বের করতে টিটন গাজীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা অত্যন্ত জরুরি।
আজ মধ্যরাত আনুমানিক ১টার দিকে কোতোয়ালি থানা এলাকার জিন্দাবাহার এলাকা থেকে টিটনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে, এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এ পর্যন্ত পাঁচজন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে তিনজনকে ইতিমধ্যেই রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই), ঢাকার একটি আদালত মাহমুদুর হাসান মহিন (৪১) এবং তারেক রহমান রবিনকে (২২) পৃথক মেয়াদে রিমান্ডে রাখার নির্দেশ দেন, যা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল রানার আদালত নিশ্চিত করেছেন।
মহিন ও রবিনকে এর আগে পুলিশ আটক করেছিল, অপরদিকে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) আলমগীর (২৮) এবং মনির (৩২) নামে আরও দুই সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করে।
এর আগে আজ সকালে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরিত করা হবে। তিনি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি পোস্টে লিখেন, 'এই ঘটনার সাথে জড়িত পাঁচজনকে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।'
লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ কেরানীগঞ্জের পূর্ব নামাবাড়ির ইউসুফ আলী হাওলাদারের ছেলে। তিনি পুরান ঢাকার রজনী বোস লেনে বহু বছর ধরে ভাঙারির ব্যবসা চালাচ্ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, বুধবার (৯ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টার দিকে একদল হামলাকারী মিটফোর্ড হাসপাতালের ৩ নম্বর গেটের কাছে সোহাগকে পাথর ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করে জনসম্মুখেই তাকে হত্যা করে।
হামলার সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় হামলাকারীরা নৃশংসভাবে ভুক্তভোগীর মৃত লাশের ওপরও আক্রমণ করছে।
পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে এবং মরদেহ মর্গে পাঠায়।
সোহাগের বোন মঞ্জুয়ারা বেগম কোতোয়ালি থানায় ১৯ জন নামীয় এবং ১৫-২০ জন অজ্ঞাতনামা সন্দেহভাজনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।