সিলেটে পণ্য পরিবহন ধর্মঘট নিয়ে মতবিরোধ, প্রথম দিনে ঢিলেঢালাভাব

পাথর কোয়ারি চালুসহ পাঁচ দফা দাবিতে সিলেটে শুরু হয়েছে পণ্য পরিবহন ধর্মঘট। শনিবার সকাল থেকে এ ধর্মঘট শুরু হয়। তবে ধর্মঘট নিয়ে শ্রমিকদের দুই পক্ষের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। এ কারণে প্রথম দিনে ধর্মঘটে দেখা গেছে ঢিলেঢালাভাব।
সিলেট জেলা পণ্য পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ এই ধর্মঘট আহ্বান করে। তাদের ৫ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- সিলেটের সব পাথর কোয়ারি চালু করা, ক্রাশার মেশিন ধ্বংসে অভিযান বন্ধ করা, পাথর পরিবহনকারী ট্রাক আটকানো বন্ধ, চালকদের হয়রানি ও নির্যাতন বন্ধ এবং বিআরটিএ অফিসে শ্রমিক হয়রানি বন্ধ।
শনিবার দুপুরে সিলেট নগরের হুমায়ুন রশীদ চত্বর, কালিঘাটসহ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সড়কে সড়কে ট্রাক, লরি ও কাভার্ড ভ্যান চলাচল অন্যদিনের তুলনায় অনেকটা কম। তবে কিছু কিছু ট্রাক, লরি চলাচল করছে। অন্য সময় পরিবহন ধর্মঘটে যেসব সড়ক যানবাহন শূন্য হয়ে পড়ে, এমন চিত্র দেখা যায়নি। সড়কে ধর্মঘট আহ্বানকারীদেরও দেখা যায়নি।
জানা যায়, শনিবার ও রোববার সরকারি ছুটি থাকায় শ্রমিকদের একটি পক্ষ এ দুদিন ধর্মঘট পালনের বিরুদ্ধে মত দেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। যদিও সংগঠনের নেতারা ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে অবস্থান নেন।
তবে সিলেট জেলা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. দিলু মিয়া জানান, সিলেট জেলার সব মালিক-শ্রমিক এক হয়ে ধর্মঘটে নেমেছেন। সর্বাত্মভাবেই ধর্মঘট পালিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আমাদের দাবি পুরণ না হলে সোমবার থেকে সব পরিবহন ধর্মঘট কর্মসূচি শুরু হবে।
দিলু মিয়া আরও বলেন, 'পাথর কোয়ারি বন্ধ ও বিভিন্ন গাড়ি বাজেয়াপ্ত করার মাধ্যমে প্রশাসন পরিবহন শ্রমিকদের পেটে লাথি মারছে।'
জানা যায়, আন্দোলনকারীদের দাবির মধ্যে অন্যতম ছিল সিলেটের জেলা প্রশাসকের অপসারণ। তবে শেষ মূহূর্তে এ দাবি থেকে সরে এসেছেন তারা। দাবিনামায় পরিবর্তন করে বিআরটিএ অফিসে শ্রমিক হয়রানি বন্ধের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিলেট জেলা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. দিলু মিয়া।
এ আন্দোলনের সময়সূচি এবং প্রেক্ষাপট নিয়ে ভিন্নমত প্রকাশ করেছেন পাথর মালিক-শ্রমিক সংগঠনের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা। তিনি বলেন, 'শনিবার সরকারি ছুটি এবং রবিবার পবিত্র আশুরা, এমন দুটি দিনে কর্মবিরতি ডাকা অযৌক্তিক। আশুরা মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ দিন। এ দিনে ধর্মঘট বা বিক্ষোভ গ্রহণযোগ্য নয়।'
এর আগে গত বুধবার (২ জুলাই) দুপুরে সিলেট নগরীর কোর্ট পয়েন্টে অনুষ্ঠিত এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এই ধর্মঘট কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
সেখানে এই পক্ষ হুঁশিয়ারি দিয়েছিল, '৪ জুলাইয়ের মধ্যে সরকার যদি দাবি মেনে না নেয়, তাহলে ৫ জুলাই থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট শুরু হবে।' এতে সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরীও একাত্মতা পোষণ করেন।