দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে রাজধানীজুড়ে জলাবদ্ধতা, ভোগান্তি

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকাল থেকে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পানি জমে যায়। পর্যাপ্ত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী।
সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েন বৃহস্পতিবার অফিস শেষে বাসায় ফেরা মানুষজন। পল্লবীর বাসিন্দা ইকবার হোসেন জানান, সন্ধ্যা ৭টায় অফিস থেকে বের হয়ে রাত ১২টায় বাসায় পৌঁছান তিনি।
তিনি বলেন, 'গতকাল রাতের অর্ধেকটাই কেটেছে রাস্তায়। কাজিপাড়া পৌঁছাতে আড়াই ঘণ্টা লেগেছে। পরে গাড়ির ইঞ্জিনে পানি ঢুকে পড়ে। অন্য গাড়ি দিয়ে টেনে বাসায় আসতে হয়েছে। রাস্তায় ছিল কোমরসমান পানি।'

শুধু পল্লবী নয়, বৃহস্পতিবার বিকাল থেকেই রাজধানীর মিরপুর, মাটিকাটা, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, কাওলা, আব্দুল্লাহপুর, বংশাল, নিউ মার্কেট, পল্টন, সায়দাবাদ, যাত্রাবাড়িসহ বহু এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়।
আজ শুক্রবার (৩০ মে) সাপ্তাহিক ছুটির দিন হলেও জরুরি কাজে বের হওয়া মানুষদেরও পড়তে হয়েছে ভোগান্তিতে। যদিও আজ বৃষ্টি কিছুটা কম; তবু ধানমন্ডি, মিরপুর, নিউ মার্কেট, পল্টনসহ অনেক এলাকার রাস্তায় এখনও পানি জমে আছে।

অনেকে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও পাচ্ছেন না রিকশা বা কোনো যানবাহন। মাঝেমধ্যে দু-একটি রিকশা বা সিএনজি মিললেও গুনতে হচ্ছে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া। কেউ কেউ আবার হাঁটুসমান পানিতে ভিজেই ছুটছেন গন্তব্যে।
বাড্ডা, মুগদা, বাসাবো, মতিঝিল ও কমলাপুরে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। এসব এলাকার সড়ক দুই থেকে তিন ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ঘরমুখো মানুষ যানবাহনের অভাবে বাধ্য হচ্ছেন হাঁটতে। কখনও রিকশা বা সিএনজি পেলে গুনতে হচ্ছে তিন-চারগুণ ভাড়া।

জলাবদ্ধতায় বিপাকে পড়েছেন ফুটপাতের দোকানিরাও। অধিকাংশ দোকান বন্ধ, কিছু খোলা থাকলেও বেচাকেনা নেই বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।
এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় জরুরি ভিত্তিতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কনফারেন্স রুমে দুই সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের নিয়ে কন্ট্রোলরুম স্থাপন করেছে।

কোনো এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিলে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের হটলাইনে ফোন করে তথ্য দিতে অনুরোধ করা হয়েছে নাগরিকদের।
ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ জানিয়েছেন, উত্তরের যেকোনো অঞ্চলে জলাবদ্ধতার খবর পাওয়া গেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পূর্ব প্রস্তুতির কারণে অনেক স্থানে জলাবদ্ধতা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট বিভাগ।