এনবিআর সংস্কারে প্রস্তাবিত খসড়া অধ্যাদেশ বাতিলের দাবি আয়কর কর্মকর্তাদের

এনবিআরের কাঠামো পরিবর্তনের প্রস্তাবিত খসড়া অধ্যাদেশ বাতিলের দাবি জানিয়েছেন আয়কর ক্যাডারের কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, অংশীজনদের মতামত নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
শনিবার (৩ মে) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনবিআর প্রধান কার্যালয়ে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) ট্যাক্সেশন অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত এক্সট্রা-অর্ডিনারি জেনারেল মিটিংয়ে (ইজিএম) এ দাবি জানানো হয়।
২০২৫ সালের খসড়া 'রাষ্ট্রীয় নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ'-এ প্রস্তাবিত পরিবর্তনের মাধ্যমে বর্তমান এনবিআর কাঠামো বিলুপ্ত করে প্রশাসন ক্যাডারের অধীনে দুটি পৃথক বিভাগ—রাজস্ব নীতি বিভাগ এবং রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ—গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে। খসড়া অধ্যাদেশটি বর্তমানে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।
সভায় আয়কর ও কাস্টমস অ্যাসোসিয়েশন যৌথভাবে শিগগিরই আরেকটি ইজিএম আয়োজন করবে বলেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় এনবিআর সংস্কার কমিটির প্রস্তুতকৃত প্রতিবেদনটি জনসমক্ষে প্রকাশেরও দাবি জানানো হয়।
রাজস্ব খাত সংস্কারের লক্ষ্যে এর আগে সরকার এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি পরামর্শক কমিটি গঠন করে। কমিটিতে দুই ক্যাডারের প্রতিনিধিরাও মতামত দেন। তবে কমিটি কয়েক মাস আগে প্রতিবেদন জমা দিলেও তা আজও জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়নি বলে অভিযোগ।
এরপর তড়িঘড়ি করে 'রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫'-এর একটি খসড়া তৈরি করা হয়, যা বর্তমানে আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের অপেক্ষায় রয়েছে।
আয়কর ও কাস্টমস ক্যাডারের কর্মকর্তাদের অভিযোগ, খসড়া অধ্যাদেশ এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে নতুন দুটি বিভাগ প্রশাসন ক্যাডারের হাতে চলে যাওয়ার পথ তৈরি হয়। এতে করে রাজস্ব প্রশাসনের মূল নিয়ন্ত্রণ প্রশাসন ক্যাডারের অধীনে চলে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। ফলে কর্মকর্তাদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।
তারা আরও অভিযোগ করেন, খসড়ায় দুই বিভাগকে স্বাধীন বলা হলেও রাজস্ব আদায় কার্যক্রম নীতিনির্ধারক বিভাগ, অর্থাৎ রাজস্ব নীতি বিভাগ, পরিবীক্ষণ করবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এর ফলে মূলত রাজস্ব আদায় ব্যবস্থাও নীতির আওতায় চলে যাবে।
জানা গেছে, গত বুধবার ঢাকার সব ট্যাক্স, ভ্যাট ও কাস্টমস অফিসের কর্মকর্তারা এনবিআর প্রধান কার্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। ওই দিন এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান অফিসে আসেননি।
পরিস্থিতি নিয়ে ট্যাক্স ও কাস্টমস কর্মকর্তারা অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করলেও সেখানে কোনো আশাব্যঞ্জক সাড়া মেলেনি বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।