বাংলায় কথা বলতে পারে রোবট রবিন

অত্যাধুনিক রোবট রবিন। সে বাংলা ও ইংরেজি দুই ভাষাতেই কথা বলতে পারে। শুধু তাই নয়; রোবট রবিন বলতে পারে তাকে সৃষ্টি করা ক্ষুদে বিজ্ঞানীর নাম, দেশের নাম, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির নাম। সে অকপটে যে কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে।
এছাড়া কৃষকের জমিতে কখন কী পরিমাণ কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে তা সে নিজে থেকেই বলে দিতে পারে। এমনকি চিকিৎসা সংক্রান্ত যেকোন তথ্য ও শিক্ষা বিষয়ক তথ্যের উত্তর দিতে পারে রোবটটি। এছাড়া তার আশপাশে আগুন লাগলে সে খবর দিতে পারবে ফায়ার সার্ভিসকে। গুগল ম্যাপেও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তার অবস্থান দেখতে পাবেন।
রবিন নামের অত্যাধুনিক এ রোবটি আবিষ্কার করেছে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলা কালুপাড়া গ্রামের ব্যবসায়ী সন্তোষ কর্মকার ও গৃহিনী দীপ্তি কর্মকারের ছেলে স্কুলছাত্র শুভ কর্মকার। মা-বাবার দুই সন্তানের মধ্যে শুভ বড়। সে সরকারি গৈলা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র।
ছোটবেলা থেকেই বিজ্ঞান মেলায় অংশগ্রহণ করতো বিজ্ঞান বিষয়ক আগ্রহ থেকেই। শুধু অংশই নিতো তা নয়, সেসব প্রতিযোগিতায় পুরস্কারও জিতে নিয়েছে শুভ। আর এসব কাজে থাকতে থাকতে একসময় তার মনে হলো সে একটা রোবট বানাতে পারবে। তবে তার রোবট হবে গতানুগতিক রোবট থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। আর সেলক্ষ্য নিয়েই ২০১৮ সালের মে মাসে রোবট তৈরির কাজ শুরু করে শুভ। যা প্রাথমিকভাবে শেষ করে গত জানুয়ারিতে। আর রোবটের নাম রাখা হয় রবিন।
শুভ কর্মকার জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের একটি কার্টুন শোর সুপার হিরোর নামানুসারে তার আবিষ্কার করা রোবটটির নামকরণ করা হয়েছে।
এ ক্ষুদে বিজ্ঞানী জানায়, ইন্টারনেট থেকে বিভিন্ন তথ্য নিয়ে এবং ইউটিউব থেকে বিভিন্ন ভিডিও দেখে রোবট রবিনকে তৈরি করা হয়েছে। আগামীতে রবিনকে আরও উন্নত করার কাজ করছি। বর্তমানে তার দৃষ্টিশক্তি নেই- আগামীতে সে সবাইকে দেখতে পারবে। সেই সঙ্গে কারো সঙ্গে একবার পরিচিত হলে তাকে পরবর্তী সময়ে দেখলে চিনতে পারবে এবং বিভিন্ন সমস্যা নিজে দেখে সমাধান করতে পারবে।
শুভ বলে, সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে আমার এই রোবট অনেক কিছু নিজে নিজেই শিখতে পারে। এজন্য কোনো কোডিংয়ের প্রয়োজন হয় না অর্থাৎ কিছুটা সেল্ফ লার্নিং আয়ত্ব করে নিয়েছে।
ক্ষুদে বিজ্ঞানী শুভ কর্মকার ইতোমধ্যে উপজেলা, জেলা ও ঢাকায় বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে অসংখ্য সম্মাননা পেয়েছে।
এ ব্যাপারে আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র দাস জানান, শুভ শুধু উপজেলার নয় গোটা বরিশালের গর্ব। সে যে বাংলায় ও ইংরেজিতে কথা বলা রোবট তৈরি করেছে- এটা পুরো বাংলাদেশের জন্য একটি সাফল্য। তার এ কাজের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।