Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Sunday
September 28, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
SUNDAY, SEPTEMBER 28, 2025
মশক-কাহিনি: নতজানু চেঙ্গিস! মৃত্যুবাহক কলম্বাস!!

ইজেল

সৈয়দ মূসা রেজা
28 August, 2023, 08:05 pm
Last modified: 28 August, 2023, 08:05 pm

Related News

  • আইজ্যাক বাবেলের গল্প | বুড়ো শ্লয়মি
  • সোভিয়েতরা কীভাবে হেমিংওয়েকে গুপ্তচর বানাল
  • বদরুদ্দীন উমর: অমরত্বের সন্তান 
  • বদরুদ্দীন উমর: কেন তাঁকে আমাদের মনে রাখতে হবে
  • অরুন্ধতী রায়: কিছু সাহসী মানুষের কারণে এখনো অন্ধকারে জোনাকির আলো দেখতে পারি 

মশক-কাহিনি: নতজানু চেঙ্গিস! মৃত্যুবাহক কলম্বাস!!

কবি যতই বিদ্রোহীর দামামা, কাড়া-নাকাড়া বাজিয়ে বজ্রসম আওয়াজ তুলুন না কেন—‘আমি চেঙ্গিস/ আমি আপনারে ছাড়া করি না কাহারে কুর্ণিশ’, ইতিহাস বলে ভিন্ন কথা। মশার দাপটে গতিপথ বদল করতে হয়েছে এই মহাবীরকে। মশার কাছে প্রকারান্তরে নতজানুই হয়েছে। এমনকি তার পুত্রকেও। তার নাতিকেও হতে হয়েছে। ‘নতুন পৃথিবী’ আবিষ্কারের দাবিদার, নাকি হানাদার, কলম্বাস মৃত্যুবাহক হয়ে উঠেছিলেন। আমেরিকা মহাদেশে ম্যালেরিয়াসহ মশাবাহী নানা রোগ ছড়ানোর দ্বার উন্মোচন করেন তিনি।  
সৈয়দ মূসা রেজা
28 August, 2023, 08:05 pm
Last modified: 28 August, 2023, 08:05 pm

'শুধু মশার গান দাদা আমি সইতে পারি না...হে মশা, ও মশা ভ্যানর ভ্যানর করে যখন কানের কাছে গান/ মনে হয় ফায়ার করি আনিয়া মেশিনগান।' নকুল কুমার বিশ্বাসের গানটি ইউটিউব ঘাঁটাঘাঁটি করার সময় শুনেছি। মশা নিয়ে একটা কার্টুনও দেখিয়েছে ফেসবুক। হাড়গিলে চেহারার এক গরিব মানুষ এক পাত্র রক্ত মশার ঝাঁককে ভেট দিতে দিতে বলছে, 'এই রক্তটুকু শরীর থেকে অনেক কষ্টে বের করে আনছি। এইখানে বইসা আরাম কইরা খান। আর আমারে একটু ভালোমতো ঘুমাইতে দ্যান। আইজ বহুদিন আপনাগো জ্বালায় ঘুমাইতে পারি না।' এই আকুল আবেদনের মশকনারীদের মন গলেছিল কি না, কার্টুনে তার কোনো ইঙ্গিত নেই।

একইভাবে আমাদের গালাগালিতেও মশককুলের কোনো উল্লেখ নেই। বাঘের মতো হিংস্র, জোঁকের মতো রক্তচোষা, সাপের মতো ধূর্ত অহরহ বলি। কিন্তু মশার মতো ঘাতক কাউকেই বলতে শুনিনি। কিংবা বলা হলেও তা গালি হিসেবে জমবে না। নমরুদের মতো দাপুটে, অস্তিত্ববিরোধী দুশমনের সুশিক্ষিত সেনাদলকে তছনছ করেছিল এই খুদে মশকবাহিনী। এমনকি স্বৈরাচারী নমরুদের দৃষ্টান্তযোগ্য মৃত্যুও নিশ্চিত করেছে এ পতঙ্গের এক দুর্বল সদস্য। তারপরও বীরত্ব বা হিংস্রতা বোঝাতে কথায় কথায় কেন মশাকে টেনে আনা হয় না। কিন্তু পবিত্র কোরআনের সুরা বাকারাহর ২৬ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, উদাহরণ দেওয়ার জন্য মশার মতো তুচ্ছ প্রাণীর কথাও উল্লেখ করতে তিনি লজ্জা বোধ করেন না। 

এ কথা সবাই জানেন, মানুষসহ স্তন্যপায়ী প্রাণিদের উষ্ণ রক্তপানের মহোৎসবে মাতে কেবল নারী মশারা। পৃথিবীতে প্রায় সাড়ে তিন হাজার প্রজাতির মশা আছে। সব মশাই রোগবাহী নয়। এ ছাড়া মশক পরিবারের পুরুষ সদস্যরা আগাগোড়া ভদ্র। পাখাওয়ালা ড্রাকুলা নয়। রক্তপানে কোনো উৎসাহই নেই পুরুষ মশার। গাছগাছালি, ফলফলাদির রস খেয়েই  জীবন পার করে পুরুষ মশককুল। 

তারপরও হিসাব নিলে দেখবেন, প্রতিবছর কথিত হিংস্র প্রাণিকুলের হামলায় যত মানুষ প্রাণ বলি দেয়, তার চেয়েও অনেক অনেক বেশি অবালবৃদ্ধবনিতা বেঘোরে মরে মশার আক্রমণে। মশকবাহিত রোগে ভুগে। মশকবাহিত রোগ এক ম্যালেরিয়ায় ভুগেই আধুনিককালে আফ্রিকা মহাদেশে প্রতিবছর অন্তত ৪ লাখ ৩৫ হাজার আদমসন্তান প্রাণ হারায়! মোঙ্গল সাম্রাজ্য যখন তুঙ্গে, সে সময়ে, ১৪ শতকে ম্যালেরিয়ার কবলে পড়ে অন্তত ৫ কোটি মানুষ মরেছে। 'দ্য মস্কুইটো: আ হিউম্যান হিস্ট্রি অব আওয়ার ডেডলিয়েস্ট প্রিডেটর' বইতে এ তথ্য দিয়েছেন টিমোথি সি ওয়াইগার্ড। উল্লেখযোগ্য এ বইটি প্রকাশিত হয় ২০১৯-এ। এতে মানুষের ইতিহাসের ভিন্ন এক দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরা হয়। দলে দলে মশা কীভাবে অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দিয়েছে, লড়াইয়ের ভাগ্য নির্ধারণ করেছে, সে কাহিনি তুলে ধরা হয়েছে বইটিতে। 

পৃথিবীতে আবির্ভাবের পর মানবজাতির অর্ধেকের মতো সদস্যই মশার হামলায় পরপারে পাড়ি জমাতে বাধ্য হয়েছে। বলা হয়, দুনিয়াকে বিশ্বগ্রাম হিসেবে ধরা হলে মানবজাতির পাশাপাশি এখানে জলে 'জলৌকা (জোঁক) হে নীল যমুনায়'সহ কুমির, হাঙর, অক্টোপাস, স্কুইড, ডাঙ্গায় বাঘ, ভালুক, সিংহ, মশা, মাছি, মৌমাছি, বোলতাসহ নানা প্রাণী ও কীটপতঙ্গ রয়েছে।  কিন্তু অন্য কোনো জীবিত প্রাণী বা কীটপতঙ্গের চেয়ে মানুষের ললাট লিখন নির্ধারণে একক ক্ষমতাশালী শক্তি হিসেবে দেখা দিয়েছে মশককুল। (এ সাথে 'তুমি না থাকলে তোমার চিঠি জমানোই হতো না'র সুরে সুরে বলতে ইচ্ছা হয়, মশা না থাকলে মশা মারার ওষুধ বা ব্যাকটেরিয়ার কোটি কোটি টাকার ব্যবসা বা জালিয়াতি কিছুই হতো না!)

কবি যতই বিদ্রোহীর দামামা, কাড়া-নাকাড়া বাজিয়ে বজ্রসম আওয়াজ তুলুন না কেন—'আমি চেঙ্গিস/ আমি আপনারে ছাড়া করি না কাহারে কুর্ণিশ', ইতিহাস বলে ভিন্ন কথা। মশার দাপটে গতিপথ বদল করতে হয়েছে এই মহাবীরকে। মশার কাছে প্রকারান্তরে নতজানুই হয়েছে। এমনকি তার পুত্রকেও। তার নাতিকেও হতে হয়েছে। 'নতুন পৃথিবী' আবিষ্কারের দাবিদার, নাকি হানাদার, কলম্বাস মৃত্যুবাহক হয়ে উঠেছিলেন। আমেরিকা মহাদেশে ম্যালেরিয়াসহ মশাবাহী নানা রোগ ছড়ানোর দ্বার উন্মোচন করেন তিনি।  

২. নতজানু চেঙ্গিস!

১২ শতকের এশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় স্তেপ অঞ্চল। ঝোড়ো বাতাস, বিস্তীর্ণ চারণভূমি এবং যুদ্ধংদেহী এবং চালবাজিতে পারঙ্গম উপজাতি-অধ্যুষিত ভূমি। শত্রু-মিত্র কেউ এখানে চিরকালীন নয়। জোয়ার-ভাটার পানির মতোই বা আকাশের মেঘের মতোই ক্ষণে ক্ষণে স্বরূপ বদলায়। এমনই নির্মম এক পরিবেশ-প্রতিবেশে জন্ম নিল তেমুজিন। ১১৬২ খ্রিষ্টাব্দের কথা। তার গোত্রের জন্য সময়টা মোটেও ভালো যাচ্ছিল না। প্রতিদ্বন্দ্বী গোত্রের হাতে বাবা আটক হওয়ার পর তেমুজিনের গোত্রের ওপর বালা-মুসিবতের তুফান নেমে আসে। সাথে সাথে নেমে আসে অসহনীয় দারিদ্র্য। ক্ষুধার দাপটে 'ঘাস ছিঁড়ে খাওয়া' ছাড়াও তাদের ভরসা হয়ে দাঁড়ায় বুনো ফলমূল, আজিব লতাপাতা। এমনকি  কাঠবিড়ালজাতীয় প্রাণী, ইঁদুর বা মরা পশু-পাখিও। 

এমনই এক সময়ে নিহত হলেন তেমুজিনের বাবা। মোঙ্গল উপজাতীয় ক্ষমতার কেন্দ্র থেকে সাথে সাথেই ছিটকে বের হয়ে এল তেমুজিনের গোত্র। সর্বহারা এ অবস্থায় তেমুজিনদের জীবন হয়ে ওঠে বিপরীত স্রোতে পড়া তাল হারা ডিঙির মতো। অথই সমস্যার এ অন্ধকার পাথার পাড়ি দিয়ে একদিন বিশ্বজয়ী রূপে তাকে দেখবে দুনিয়া—এ ভাবনা স্বপ্নেও দেখেনি তখন তেমুজিন। 

নিজ পরিবারের হারানো সম্মান ফিরিয়ে আনতে বদ্ধ পরিকর তেমুজিন তখন পনেরোতে পা দিয়েছে। বাবার সাবেক মিত্রদের এক হামলায় ধরা পড়তে হলো তাকে। দাসত্বের শৃঙ্খলে আটক হওয়ার বিধির বিধান ফাঁকি দিতে পারল সাহসিকতার সাথে ভেগে যাওয়ার মাধ্যমে। দুশমনদের কঠিনতম সাজা দেওয়ার রক্ত-প্রতিজ্ঞা করল কিশোর তেমুজিন। প্রতিশোধের আগুনে পোড়াবে সবাইকে। তার এই তালিকায় উঠল নিজ গোত্রের পুরোনো শত্রুদের নামধাম। পাশাপাশি রইল সাবেক মিত্ররাও। 

এবারে মোঙ্গল ধারা থেকে বের হয়ে এল তেমুজিন। বিজিতদের নির্বিচারে হত্যা করা বা তাদের দাস বানানোর ঐতিহ্যকে বাতিল করে দিল। বরং তাদের সুরক্ষার আশ্বাস দিল। ভবিষ্যতে যুদ্ধ জয়ের পর হাতিয়ে নেওয়া সম্পদের অংশও দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি শোনাল। সামরিক এবং রাজনৈতিক উচ্চ পদে নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রে বিচার করল দক্ষতা, মেধা ও আনুগত্য। এ ক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতি এবং গোত্রভুক্ত হওয়ার এতকাল চলে আসা নীতি-রেওয়াজকে থোড়াই পরোয়া করল। 

এভাবেই নিজ সমসাময়িক নেতাদের চেয়েও দক্ষ নেতৃত্ব এবং রণকৌশলী হয়ে উঠল কিশোর তেমুজিন। ১২০৬ খ্রিষ্টাব্দ। বিভেদ বা ভেদাভেদ সৃষ্টি নয় বরং মোঙ্গল উপজাতীয়দের মধ্যে নেতৃত্বের গুণে অটুট সংহতি গড়ে তুলতে সক্ষম তেমুজিন হয়ে উঠলেন বীর চেঙ্গিস খান বা সর্বজনীন শাসক। গড়ে তুললেন ইতিহাসের সর্ববৃহৎ সাম্রাজ্য। 

এবারে চেঙ্গিস নজর ফেরালেন পশ্চিমে। এশিয়া এবং ইউরোপের বিশাল অঞ্চলের মধ্যে সেতুবন্ধন গড়ে তোলার সাধ হলো তার। 'তোমাকে বধিবে যে গোকুলে বাড়িছে সে।' না গোকুলে নয়, ইউরোপের জলাভূমিতে বেড়ে উঠেছে। আর এমন শত্রুর প্রত্যাশাও করেননি দিগ্বিজয়ী এ বীর। এই ভয়াবহ শত্রু হলো মশকবাহিনী। দেড় হাজার বছর আগে এই বাহিনীই দিগ্বিজয়ী আলেকজান্ডারের জন্য দুঃস্বপ্ন ডেকে এনেছিল। এবারে তারা চেঙ্গিস খানের জন্য হয়ে উঠল দুঃস্বপ্ন।    

বিশ্বজয়ে মোঙ্গল বাহিনী বের হওয়ার পেছনে জলবায়ুর একটি ভূমিকা ছিল। সে সময় চলছিল খুদে বরফ যুগ। তাপমাত্রার পারদ তরতর করে নিচে নামছিল। চারণভূমিতে টান পড়ছিল। ঘোড়ার খাবার জোগাতে দিশেহারা হওয়ার জোগাড়। একই সাথে পার্বত্য এলাকায় যাযাবর জীবন বজায় রাখাও কষ্টকর। ভূসীমানার বিস্তার ঘটাও, না হয় বিলীন হয়ে যাও—এই হয়ে দাঁড়াল বরাত লিখন। 

তুফানের বেগে চেঙ্গিস বাহিনীর এগিয়ে যাওয়ার পেছনে অন্যতম নিয়ামকগুলো হলো—চেঙ্গিস খান ও তার সেনাপতিদের অতুলনীয় সামরিক দক্ষতা, সামরিক আদেশ ও নিয়ন্ত্রণ কাঠামোর মধ্যে চমৎকার সমন্বয়, সুসংগঠিত সেনাবাহিনী, বিশেষ রণকৌশল, শক্তিশালী ধনুকের ব্যবহার এবং সর্বোপরি ঘোড়া চালানোয় ঈর্ষণীয় দক্ষতা। 

১২২০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যেই মোঙ্গল সাম্রাজ্যের ব্যাপক বিস্তার ঘটল। কোরিয়া ও চীনের প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূল থেকে দক্ষিণে ইয়াংগিজ নদী এবং হিমালয় পর্বতমালা পর্যন্ত বিস্তৃত হলো। আর পশ্চিমে ফোরাত পর্যন্ত বিস্তৃত হলো এ সাম্রাজ্যের সীমানা। 'বিৎসক্রিগ' বা 'বিদ্যুৎগতির যুদ্ধ' চালানোর রণনীতির কথা বলেছে হিটলারের নাৎসি বাহিনী। কিন্তু এ বাহিনীর জন্মেরও বহু আগে তার সফল প্রয়োগ করেন চেঙ্গিস। 

১২২০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যেই নিজ বাহিনীকে দুটি ভাগ করলেন চেঙ্গিস। সে যুগের জানা পৃথিবীর দুটো গোলার্ধকে এক শাসনের আওতায় আনলেন। আলেকজান্ডারকেও এ কাজে ছাড়িয়ে গেলেন তিনি। এই প্রথম পূর্বের সাথে আনুষ্ঠানিকভাবে পশ্চিমের মিলন ঘটল। প্রথম ভাগের সেনারা পূর্বে ভারতের মধ্য দিয়ে মঙ্গোলিয়ায় ফিরে যায়। অন্য দলটি রাশিয়া মধ্য দিয়ে ইতালির বন্দর কালকায় (ফিওদোসিয়া) পৌঁছে। পথে পথে যুদ্ধ হয়েছে। ধ্বংসলীলা চলেছে। দাস বানানো হয়েছে। পোল্যান্ড ও হাঙ্গেরির কিছু অংশে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের ছোটখাটো অভিযান চালানোর পর এ দল মঙ্গোলিয়ায় 'সর্বজনীন শাসকের' সাথে যোগ দেয়। এর মধ্যে দিনপঞ্জি পরিবর্তিত হতে হতে ১২২৩ খ্রিষ্টাব্দে পৌঁছে গেছে। 

মোঙ্গল বাহিনী কেন ইউরোপে পুরাদস্তুর হামলা চালাল না, তা নিয়ে রয়েছে নানা মুনির নানা মত। সাধারণভাবে মনে করা হয়, প্রাথমিক অভিযান ছিল নিছক গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করার। ভবিষ্যতে পুরো সামরিক অভিযান চালানোর প্রস্তুতি হিসেবে হয়েছে এ অভিযান। ইতিহাসবিদরা এ-ও বলেন, ককেশীয় অঞ্চল এবং কৃষ্ণসাগরের তীরবর্তী নদীমাতৃক এলাকায় মশাবাহিত ম্যালেরিয়ার আক্রমণের মুখে পড়ে মোঙ্গল বাহিনী। টানা ২০ বছরের যুদ্ধের সাথে ম্যালেরিয়ার 'যোগসাজশে' এ বাহিনী দুর্বল হয়ে পড়ে। এ-ও জানা যায়, খোদ চেঙ্গিস খানও মাঝে মাঝে ভুগতেন ম্যালেরিয়া জ্বরে। সর্বজনীন বিশ্বাস, ম্যালেরিয়ায় ভুগে ভুগে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। যুদ্ধের আঘাত থেকে সৃষ্টি ক্ষত এ সুযোগে শরীরের জেঁকে বসে। মাত্র ৬৫ বছর বয়সে, ১২২৭ খ্রিষ্টাব্দে, পরলোকগমন করেন 'মহাখান' হিসেবে পরিচিত চেঙ্গিস খান বা সর্বজনীন শাসক।    

সে যুগের চল অনুযায়ী তাকে অজ্ঞাত স্থানে সমাধিস্থ করা হয়। আলেকজান্ডারের মতোই এই মহাখানের মরদেহ কোন ভূমিতে শেষ শয্যায় শুয়ে, তা নিয়ে নানা গল্পগাথা রয়েছে। চেঙ্গিসের সমাধি শনাক্ত করার সব তৎপরতার গন্তব্য হয়েছে একটাই—হতাশা। এরপরও কিন্তু মশার মোঙ্গল রক্তের তৃষ্ণা মিটে যায়নি। বরং প্রভাবশালী এ সাম্রাজ্যে মশার অভিযান চলেছে তীব্র বেগেই।

উত্তরাধিকার সূত্রে ক্ষমতায় বসেন চেঙ্গিসপুত্র ওগেদি। ১২৩৬ থেকে ১২৪২ পর্যন্ত ইউরোপ অভিযান চালান। এর সূচনা হয় পূর্বাঞ্চলীয় রাশিয়া থেকে। বাল্টিক দেশগুলো পার হয়ে ইউক্রেন এবং রোমানিয়ায় পৌঁছায় তার বাহিনী। ১২৪১-এর বড়দিনের মধ্যেই বুদাপেস্ট এবং দানিয়ুব নদীর তীরে পৌঁছে যায় তারা। অস্ট্রিয়া অতিক্রম করে বলকান অঞ্চল এবং বুলগেরিয়ার মধ্য দিয়ে দক্ষিণের দিকে যাত্রা করে। ১২৪২-এ ইউরোপ থেকে পিছু হটে আসে। আর কখনো তারা সেদিকে পা বাড়ায়নি। অজেয় মোঙ্গলরা মশকবাহিনীকে পরাজিত করতে পারেনি। ইউরোপে নারী মশককুলের প্রতিরক্ষা ব্যূহ ভেদ করাও তাদের ক্ষমতায় কুলায়নি। 

উইনস্টন চার্চিল বলেন, এক মুহূর্তের জন্য মনে হচ্ছিল, পূর্ব থেকে ধেয়ে আসা ভয়াবহ বাহিনীর কাছে পরাস্ত হবে ইউরোপ। এশিয়ার কেন্দ্র থেকে আসা বিধর্মী মোঙ্গলদের রয়েছে ধনুকসজ্জিত দক্ষ ঘোড়সাওয়ার।...(কিন্তু না) আক্ষরিকভাবেই মোঙ্গল নেতারা পশ্চিম ইউরোপ থেকে পিছটান দেয়, দ্রুত হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে কারাকোরামে তাদের রাজধানীতে ফিরে যায়। আর এ কাণ্ড ঘটেছে প্রতিকূল আবহাওয়া এবং মশকগোষ্ঠীর যুগপৎ সমন্বিত হামলায়। ১২৪১-এর বেশির ভাগ মোঙ্গল সেনা হাঙ্গেরির সমতল ভূমিতে পৌঁছে বিশ্রাম নিতে শুরু করে। সেখানকার আবহাওয়া আগের বছর কোনো কারণ ছাড়াই গরম এবং প্রায় খরার মতো অবস্থায় ছিল। কিন্তু সে বছর বসন্ত ও গ্রীষ্মকাল হয়ে ওঠে অস্বাভাবিক স্যাঁতস্যাঁতে। মাগিয়ার চারণভূমিগুলো জলাভূমির রূপ নেয়। আর হয়ে ওঠে ম্যালেরিয়ার মশার পরিপূর্ণ মৃত্যুফাঁদ। কিংবা এ যুগের ভাষায় বলা যায়, মাইনক্ষেত্র। জলাভূমির কারণে মোঙ্গল ঘোড়াগুলোর আহার জোটানো সমস্যা হয়ে ওঠে। দ্রুত হামলার বাহনগুলো এভাবে বসে গেল। স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়ায় তাদের ধনুকের ছিলা ঢিলা হতে থাকে। সাথে গেল তাদের নির্ভুল লক্ষ্যভেদী তির ছোড়ার ধনুকও। সামরিক দুর্গতির শেষ এখানেই নয়। এরপর এল মশার পাল এবং ম্যালেরিয়া।  

খ্যাতনামা ইতিহাসবিদ জন কেগান লিখেছেন, দুর্দান্ত লড়াকু ছিল মোঙ্গল বাহিনী। তাদের দক্ষ ঘোড়সওয়ার বাহিনী মরুভূমিতে পারদর্শিতা দেখাতে পেরেছে, পশ্চিম ইউরোপের বৃষ্টিবহুল অঞ্চলে এ বাহিনী সুবিধা করতে পারেনি। কাজেই তারা যুদ্ধে হেরেই যায়।

মোঙ্গল বাহিনী এবং তাদের সাথি মার্কো পলোর মতো বাণিজ্যিক বহরের যাত্রীরা পূর্ব ও পশ্চিমকে একসূত্রে গেঁথেছেন। তবে ইউরোপকে করতলগত করার মোঙ্গল স্বপ্ন মশার কারণেই থেকে যায় অধরা। 

এদিকে চেঙ্গিস খানের নাতি কুবলাই খান ১২৬০ খ্রিষ্টাব্দে পবিত্র ভূমি দখলের অভিযান পরিচালনা করেন। সপ্তম এবং অষ্টম ক্রুসেড বা খ্রিষ্টীয় ধর্মযুদ্ধের সময় এ অভিযান চালান হয়। ৫০ বছরে চার দফা গুরুত্বপূর্ণ অভিযান চলে। মুসলমান, খ্রিষ্টান এবং মোঙ্গলদের মধ্যে পক্ষ বদলের খেলা চলেছে। কখনো কখনো নিজ দলের সদস্যদের সাথেও লড়াই হয়েছে। অনেকটা মশার অপ্রত্যাশিত আচরণের মতোই। আজ বন্ধু মনে হচ্ছে। আগামীকাল হয়ে যাচ্ছে শত্রু। 

মোঙ্গলরা এসব সত্ত্বেও সীমিত সফলতার আনন্দ ভোগ করে। আলেপ্পো এবং দামেস্কতে খুব অল্প সময়ের জন্য দখল করতে পেরেছিল। কিন্তু ম্যালেরিয়াসহ অন্যান্য অসুখের ধকল সামাল দেওয়া সম্ভব হয়নি। ফলাফল? 'থাকিতে চরণ মরণে কি ভয় মুহূর্তে যোজন ফর্সা।' বাধ্য হয়েই পিছু হটতে হলো।  

ইউরোপ এবং লেভান্ট হিসেবে পরিচিত বৃহত্তর সিরিয়ার জয়ের স্বপ্ন ধরা দিতে গিয়ে ফসকে গেল। রণকৌশলের ভুল বা সেনাদলের সাহসিকতার অভাবে নয়; বরং তুচ্ছ মশার কারণেই। এ ব্যর্থতার যন্ত্রণা ভুলতে কুবলাই খান এবারে নজর দিলেন হিমালয় পর্বতমালার পূর্ব প্রান্তের এশিয়ার স্বাধীন রাষ্ট্রগুলোর ওপর। 

প্রায় ৯০ হাজার সেনা নিয়ে ১২৮৫ খ্রিষ্টাব্দে শুরু হলো দক্ষিণাঞ্চলীয় এ অভিযান। কিন্তু মশকবাহিনীর হামলার মুখে 'চাচা আপন প্রাণ বাঁচা' নীতি নিয়ে ১২৮৮ খ্রিষ্টাব্দে এর ইতি টানা হলো। মোঙ্গল বাহিনীর মাত্র ২০ হাজার সেনা বেঁচে স্বদেশের পথ ধরল। এ দলের অনেকেই অসুখে ভুগছিল। ওদিকে হিন্দু-বৌদ্ধ খেমার সভ্যতার পতনও ঘটায় মশা। ১৪০০ সালের মধ্যে খেমার সভ্যতার নাম-নিশানা ধুয়ে মুছে যায়। খেমার সভ্যতার স্মৃতি হয়ে বেঁচে থাকে আংকো ওয়াট এবং বায়ন। 

ব্যর্থ সেনা অভিযানের পথ ধরে বিশাল মোঙ্গল সাম্রাজ্যের ক্ষয়ের রাস্তায় চলে যায়। পরবর্তী মাত্র এক শতাব্দীতেই, টুকরা-টুকরা হয়ে যায় এ সাম্রাজ্য। ১৪০০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যেই রাজনৈতিক ও সামরিকভাবে পুরোপুরি গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে। 

মোঙ্গল সাম্রাজ্য নেই। কিন্তু তাদের ঐতিহ্য এখনো মানবজাতির ডিএনএতে টিকে আছে। প্রজননতত্ত্ববিদ বা জেনেটিসিস্টরা মনে করেন, সাবেক মোঙ্গল সাম্রাজ্যের মানুষগুলোর ৮ থেকে ১০ শতাংশই মোঙ্গল সম্রাট চেঙ্গিস খান বা 'সর্বজনীন শাসকের' সরাসরি বংশধর। অন্যভাবে বলা যায়, আজকের বিশ্বের চার থেকে সাড় চার কোটি মানুষই এই 'সর্বজনীন শাসকের' সরাসরি বংশধর! 

প্রায় তিন শ বছর ধরে চলমান মোঙ্গল অভিযান বিশ্বকে বিভিন্ন উপায়ে বদলে দিয়েছে। মোঙ্গলরাই এমন স্থলপথ তৈরি করে, যার মাধ্যমে চীন এবং পূর্বকে ইউরোপীয়, আরবীয়, পারস্যবাসীদেরসহ আরও অনেক দেশ-জাতি-গোত্রকে প্রথমবারের মতো একসূত্রে গেঁথে দেয় বা  সংযুক্ত করে। 'পথ বেঁধে দিল বন্ধনহীন গ্রন্থি'। এই পথরেখা ধরেই বৌদ্ধ এবং হিন্দু ধর্মের মতো পূর্বের ধর্ম-অধ্যুষিত অঞ্চলে এসে পৌঁছায় খ্রিষ্টান এবং মুসলমানসহ নতুন নতুন ধর্ম এবং সংস্কৃতি। এই সব সড়কপথ পূর্বের দূরবর্তী ভৌগোলিক অঞ্চলগুলোকে বিশ্বসমাজের অংশ করে তোলে। বিশ্বসমাজ ছোট হয়ে আসে। 

এই পথেই মসলা, রেশমসহ চমকদার নানা পণ্যের সমাহার ইউরোপীয় বাজারগুলোকে ভরপুর করে দেয়।  

এই সময়ের সবচেয়ে বিখ্যাত কাহিনিগুলোর অন্যতম মার্কো পোলোর  সফরনামা। ভেনিসের কারাগারে বন্দী থাকার সময় নিজ কারাসঙ্গীকে ১২৭১ থেকে ১২৯৫ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত মধ্য এশিয়ায় নিজ দুঃসাহসিক ভ্রমণের কাহিনি শোনান। পরে 'দ্য ট্রাভেলস অব মার্কো পোলো' নামে প্রকাশিত হয়েছিল সে গাথা। মার্কো পোলো সত্যিই নিজেই সব জায়গা সফর করেছেন, নাকি অন্যের মুখে শোনা গল্পকে নিজের বলে চালিয়েছেন—এমন তর্কও প্রচলিত আছে। যা-ই হোক, বেশির ভাগ বিশেষজ্ঞ এ বিষয়ে একমত যে এই সব কাহিনিতে সেই সময়কে সঠিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। ক্রিস্টোফার কলম্বাসের কাছে পোলোর বইয়ের একটি অনুলিপি ছিল। কলম্বাসের সমুদ্র অভিযানের অনুপ্রেরণা হয়ে কাজ করে মার্কোর কেতাব। 

৩. মৃত্যুবাহক কলম্বাস!!  

পুবে অঢেল সম্পদ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে—সেসব ধন-দৌলত আহরণের লোভ নিয়ে সাগর অভিযানে নামেন কলম্বাস। ১৪৯২ খ্রিষ্টাব্দে সম্পদশালী সেই পুবের খোঁজে পশ্চিমমুখী যাত্রা শুরু করেন তিনি। লয়োলা ইউনিভার্সিটির ঐতিহাসিক বারবার রোজেনওয়েন মনে করেন, মোঙ্গলরা বিরল পণ্য পাওয়ার এবং ধর্মমত প্রচারের সুযোগের লক্ষ্য নিয়ে সড়কপথ খুঁজে বের করার তাড়নায় মেতেছিল। ইউরোপীয়দের নতুন পৃথিবী আমেরিকা 'আবিষ্কারের' মধ্য দিয়ে তাদের সে তাড়নাই চূড়ান্ত রূপে আত্মপ্রকাশ করে।  

কলম্বাসের এই ঘটনাক্রমে নতুন পৃথিবী 'আবিষ্কার' চড়া মূল্য দেয় আমেরিকার ভূমিসন্তানেরা। বিচ্ছিন্ন এই মহাদেশে কলম্বাস বয়ে নিয়ে যান মশার ঝাঁক। কলম্বাসের আগে আমেরিকার জলাভূমিতে রোগবাহী অ্যানোফিলিস বা এডিস মশার কোনো অস্তিত্ব ছিল না। ইউরোপীয়রা এমন কিছু কিছু অসুখ-বিসুখও বয়ে নিয়ে যায়, যা আগে সেখানে ছিল না। যা আগে কখনোই ছিল না, কাজেই এসব রোগ মোকাবিলার কোনো শরীরের ভেতরের প্রস্তুতি, দেহ প্রতিরক্ষাব্যবস্থার সতর্কতাও আমেরিকার ভূমিসন্তানদের ছিল না। ফল হলো,  ইউরোপীয়রা মহাদেশটিতে ঐতিহাসিকভাবে নজিরহীন মৃত্যুর সুনামি বইয়ে দিল। ইউরোপীয়দের আগমনের অন্তত ২০ হাজার বছর আগে আমেরিকায় জনবসতি গড়ে ওঠে। ১৪৯২-এ ইউরোপীয়রা পা রাখার আগপর্যন্ত গোটা মহাদেশ সে সময় বিদেশি হানাদার বা অভিযাত্রী যা-ই বলুন, পুরোপুরি মুক্ত ছিল। ইউরোপীয়রা নতুন এই মহাদেশে ভয়াবহ এক 'জীবাণুযুদ্ধের' সূচনা করে। 

প্রাণে বেঁচে যাওয়া মায়া গোত্রের এক ব্যক্তি জানান, লাশ পচা গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলাম। পরিবারের প্রবীণজনেরা মারা যাওয়ার পর তাদের স্বজনদের অনেকেই মাঠ-ঘাটে ভেগে যায়। কুকুর এবং শকুন লাশগুলো খেয়েছে। ভয়াবহভাবে মরছিল মানুষ। আমাদের মনে হচ্ছিল—কেবলমাত্র মরার জন্যেই জন্মেছি আমরা!

কলম্বাসের শেষ সমুদ্রযাত্রার পর ১৫০২ খ্রিষ্টাব্দে হিস্পানিওলা (এখনকার ডোমিনিকান রিপাবলিক এবং হাইতি) আসেন স্পেনীয় যাজক বার্তোলোম দে লাস কাসাস। তাহিনো জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে স্পেনীয়রা যেসব বদকাজ করেছে, তা তুলে ধরেন তার লেখা প্রতিবেদন 'আ ব্রিফ অ্যাকাউন্ট অব দ্য ডেস্ট্রাকসন অব দ্য ইন্ডিস'-এ।  স্পেনের রাজা ফার্দিনেন্দ এবং রানি ইসাবেলা এ প্রতিবেদন পড়ে শিউরে ওঠেন। ১৫১৬ সালে বার্তালোমকে রানি ইসাবেলা 'প্রটেক্টর অব দ্য ইন্ডিয়ানস' হিসেবে নিয়োগ দেন। স্পেনীয় উপনিবেশের প্রথম দশক থেকে সৃষ্ট ম্যালেরিয়া এবং গুটিবসন্তের মতো অসুখ-বিসুখ কী ব্যাপক ক্ষতি ডেকে এনেছে, তা-ই তুলে ধরেন বার্তালোম।  

বার্তালোম জানান, হিস্পানিওলার ভূমিসন্তানদের প্রতি স্পেনীয়রা চরম অত্যাচার, অবিচার এবং সহিংসতা চালিয়েছে। নিজেদের ভূমিতেই তাদের স্পেনীয়দের দাস হিসেবে খাটতে হয়েছে। অসুখ-বিসুখ তাদের লেগেই থাকত। তারপরও মাফ পেত না। স্পেনীয়রা স্থানীয় মানুষগুলোর কথাকে পাত্তাই দিত না। বরং আলসেমি করছে কিংবা কুত্তা বলে অভিহিত করত। লাথি-কিল-থাপ্পড় ছাড়া তাদের সাথে কথাই বলা হতো না। এভাবে মাত্র আট বছরের মধ্যে ভূমিসন্তানদের ৯০ শতাংশ মারা যায়। মৃত্যুর এই কালো ছায়া সান হুয়ান, জ্যামাইকা, কিউবাসহ গোটা আমেরিকা মহাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। মৃত্যুর এই সুনামি সৃষ্টির উল্লেখযোগ্য কৃতিত্ব দিতে হয় ম্যালেরিয়া বাহক মশাগোষ্ঠীকে। (তবে মশাকে আমেরিকায় পৌঁছে দেওয়ার সমস্ত কৃতিত্ব কলম্বাসের বলতে হয়।)

বার্তালোম পানামার দারিয়েন উপনিবেশ পরিদর্শন করেন ১৫৩৪ খ্রিষ্টাব্দে। মশাবাহিত রোগে ভুগে মৃত স্পেনীয়দের গণকবর দেখতে পান তিনি। মৃত্যুর হার আতঙ্কজনক থাকায় এসব গণকবরে লাশ মাটি চাপা দেওয়ার অবকাশ ছিল না। প্রতি ঘণ্টায় ঘণ্টায় স্পেনীয়রা প্রাণ হারাচ্ছে আর তাদের নিয়ে ফেলা হচ্ছে গণকবরে। মাটি চাপা দেবে কখন? মধ্য আমেরিকার পানামা যোজকের কাছের দরিয়েন উপকূল দিয়ে কলম্বাসের শেষ অভিযানের সময় তার নাবিকেরা দলে দলে মশাবাহিত রোগের শিকার হতে থাকে। ফলে ওই অঞ্চলকে 'মশক উপকূল' নাম দেওয়া হয়। কলম্বাসের সফর শেষে ১৫১০ খ্রিষ্টাব্দে এই উপনিবেশ স্থাপন করা হয়। আমেরিকার মূল ভূমিতে এটাই হলো স্পেনীয়দের প্রথম উপনিবেশ। স্কটদের সার্বভৌমত্বের ইতি টানতেও ভূমিকা পালন করেছে মশা। বার্তালোমসহ সমসাময়িক অন্যান্য প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক 'মশকুইটো কোস্টে'ই ১৫১০ থেকে ১৫৪০-এর মধ্যে ৪০ হাজারের বেশি স্পেনীয় মারা গেছে। চমকে উঠবেন না। ভূমিসন্তানদের মৃত্যুর সংখ্যা তার আগে একবার শুনুন। দরিয়েন উপনিবেশ স্থাপনের ১৫ বছর পরে পানামায় অন্তত ২০ লাখ ভূমিসন্তান মারা গেছে। এদের বেশির ভাগেরই প্রাণ গেছে ম্যালেরিয়ায়। 

১৫৪৫-এ মেক্সিকো ক্যাম্পেচে যান বার্তালোম। সেখানে দাস-শ্রমিক দিয়ে সুগার প্লানটেশন স্থাপন করেছে স্পেনীয়রা। ওই অঞ্চলে আসল অধিবাসী মায়ারা হয় মারা গেছে, না হয় পালিয়ে গেছে। কিংবা দাস হতে বাধ্য হয়েছে। সেখানেও মশার তাণ্ডব দেখতে পান বার্তালোম। গোটা স্পেন সাম্রাজ্যের যেখানেই পরিদর্শন করেছেন, সেখানেই স্পেনবাসী ও ইন্ডিয়ান উভয়ের মৃত্যুহার দেখে বেদনা অনুভব করেন তিনি। ভূমিসন্তানেরা অবশ্য দুটি দুর্যোগের মুখে পড়েছে। একদিকে তাদের মোটেও মানুষ হিসেবে গণ্য করত না বিদেশি ঔপনিবেশিক শেতাঙ্গরা। অন্যদিকে ঝাঁকে ঝাঁকে ম্যালেরিয়াবাহী মশা। জলে কুমির ডাঙায় বাঘের চেয়ে মারাত্মক বিপদ। বেশির ভাগ ভূমিসন্তানের প্রাণ কেড়ে নেয় ম্যালেরিয়া, যার বাহন হলো মশা।   

বার্তালোম জানতেন না, মৃত্যুপথযাত্রী তাদের স্বদেশিরাই ব্যাধির বাহক মশাকে সরাসরি স্পেন থেকে নিয়ে এসেছে। কিংবা ক্যারিবিয়ান হয়ে আসার পথে আফ্রিকার দোকানগুলো থেকে স্পেনীয় জাহাজে চড়েছে। জাহাজের পানির পাত্রগুলো ২ থেকে ৩ মাস বংশবিস্তারের কর্ম চালিয়ে গেছে নির্বিবাদে। রোগবাহক মশাহীন ভূখণ্ডে তাদের প্রথম বয়ে আনার পুরো কৃতিত্ব ক্রিস্টোফোর কলম্বাস স্যারের, আগেই বলেছি।  

সমস্যাসংকুল উসমানিয়া সাম্রাজ্যকে পাস কাটিয়ে দূরপ্রাচ্যে সরাসরি বাণিজ্যপথ খুঁজে বের করার অভিযানে নেমেছিলেন পাগলাটে ক্রিস্টোবাল কোলন। ১৪৯২ খ্রিষ্টাব্দে ও নামেই পরিচিত ছিলেন কলম্বাস। এ অভিযানে টাকার জোগান দিতে ইউরোপের রাজরাজড়াদের দ্বারে দ্বারে ছয় বছর ধরে হন্যে হয়ে ঘুরেছেন তিনি। তারপর স্পেনের রাজা ফার্দিনেন্দ এবং রানি ইসাবেলা অনিচ্ছা সত্ত্বেও রাজি হন। 

রাজা-রানি মোটেও মুক্তহস্তে অভিযানের অর্থের জোগান দেননি। সে যুগে সাগর অভিযান ছিল খুবই খরুচে। নিজ কন্যার বিয়েতে যে খরচপাতি করেছেন, তার তেরো ভাগের মাত্র এক ভাগ সমতুল্য অর্থ দিয়েছেন রাজা-রানি। বাকি টাকা? ২৫ শতাংশের জোগান দিয়েছে কলম্বাস। নিজ ইতালীয় বণিক ভাইদের কাছ থেকে চেয়েচিন্তে জুটাতে হয়েছে। সব মিলে মাত্র তিনটি জাহাজ এবং ৯০ জন নাবিক সম্বল করে অভিযানে নামেন কলম্বাস। হিসাবে পাকা না হয়েও বলা যায়, এ ছিল কাণ্ডজ্ঞানহীন এবং আর্থিকভাবে বিপর্যয়ের অভিযান। 

১৪৯২ খ্রিষ্টাব্দে কলম্বাস দূরপ্রাচ্যে যাওয়ার পথ খুঁজে বের করার অভিযানে নামেন। পাল তুলে দেন পশ্চিমে। পৃথিবী খুবই ছোট, বিশ্বের বেশির ভাগ, ছয়-সপ্তমাংশই স্থলভাগ বলে ধারণা জন্মেছিল তার। এশিয়ার সম্পদের দিকে চোখ রেখে তিনি অবতরণ করেন আজকের দিনের আমেরিকায়। ভেবেছিলেন ইস্ট ইন্ডিজে পৌঁছে গেছেন। পুলিৎজারজয়ী টনি হরউইউৎজ বলেন, কলম্বাস বিশ্বকে বদলে দিয়েছেন তার কারণ এই নয় যে তিনি সঠিক ছিলেন বরং গবেটের মতো ভুল করার কারণেই এমনটি ঘটে। ডিসেম্বরে কলম্বাসের হিস্পানিওলায় পদার্পণের ঘটনা মানবজাতির জন্য হয়ে ওঠে এক বৃহত্তর উল্লম্ফন!

এদিকে কলম্বাসের এই প্রথম যাত্রা নতুন এক বিশ্বব্যবস্থার সূচনাও করে। একে 'কলম্বিয়ান একচেঞ্জ' বা 'কলম্বাসীয় বিনিময়' নামে অ্যাখ্যা দেওয়া হয়। এ শব্দগুচ্ছ প্রথম ব্যবহার করেন ইতিহাসবিদ আলফ্রেড ডব্লিউ ক্রসবির তার লেখা বই 'দ্য কলম্বিয়ান একচেঞ্জ: বায়োলজিক্যাল অ্যান্ড কালচারাল কনসেকোয়েন্স ১৪৭২'-এ। বেরিং প্রণালি পার হয়ে সাইবেরিয়া থেকে শিকার মানবগোষ্ঠী আমেরিকায় ঢোকে। কিন্তু পরিবেশ হিমশীতল হওয়ার কারণে প্রাণী থেকে মানুষে ছড়ায় এমন রোগ বিস্তার ঘটতে পারেনি। ১০০০ খ্রিষ্টাব্দের কাছাকাছি সময়ে ভাইকিংরা নিউফাউন্ডল্যান্ডে আবাস গাড়লেও একই কারণে সেখান থেকে রোগ ছড়াতে পারেনি।

কিন্তু কলম্বাসের বিনিময়ের সূচনালগ্নেই নতুন পৃথিবীর অ্যানাফেলিস মশার জাত এবং আফ্রিকা ও ইউরোপ হতে আসা একই মশার জাতে মিশ্রণ ঘটে। আমেরিকায় মশকবাহিত রোগের বিশাল চক্রের সূচনা হয়। আমেরিকায় কলম্বাস আসার আগেও অ্যানাফেলিস মশা ছিল। তবে সে মশা ব্যাধিবাহক ছিল না। সাড়ে ৯ কোটি বছর ধরে তারা নিজেদের বিবর্তনের ধারাক্রম অনুসরণ করেছে। কখনো পরজীবী বহনের মতো কাজ করেনি। 

এই বিনিময়কে মানব ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে মনে করা হয়। নতুন নতুন পণ্য, উদ্ভিদ, প্রাণীর বিনিময় ঘটেছে নতুন এবং পুরোনো বিশ্বে। সবচেয়ে মারাত্মক বিনিময় হয় রোগব্যাধির।

মশা এবং ম্যালেরিয়া উভয়েরই বিস্ময়কর অভিযোজন ঘটেছে। খ্যাতনামা লেখক চার্লস মানকে হার্ভার্ডের কীটতত্ত্ববিদ অ্যান্ড্রু স্পিলম্যান বলেন, তাত্ত্বিক দিক থেকে একজন মাত্র ব্যক্তিই গোটা মহাদেশে পরজীবী ছড়িয়ে দিতে পারে। এ অনেকটা ডার্ট ছোড়ার মতো। পর্যাপ্তসংখ্যক রোগীর রক্ত মশাকে খেতে দিন। তারপরই কেল্লা ফতে, চাঁদমারিতে সফল হয়ে যাবেন, ম্যালেরিয়া ছড়িয়ে পড়বে মহাদেশে। গোটা পশ্চিম গোলার্ধে এ রোগ ছড়িয়ে পড়ে। দক্ষিণ আমেরিকা থেকে ক্যারিবিয়ান হয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে কানাডার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজধানী ওটোয়া পর্যন্ত বিস্তার ঘটে এ রোগের। কলম্বাসের প্রথম সমুদ্রযাত্রায় ম্যালেরিয়ার রোগীকেই এ রোগে আক্রান্ত প্রথম ব্যক্তি হিসেবে গণ্য করতে হবে।

কলম্বাস পূর্ব আমেরিকায় সীমিত কৃষিকাজ এবং বড় গৃহপালিত পশু না থাকায় একধরনের পরিবেশ ভারসাম্য ছিল। অনেক অসুখই দেখা দেয়নি বা ছড়িয়ে পড়তে পারেনি।  

আমেরিকায় মৃত্যু ঝাঁপি খুলে দেয় প্রাণিদেহ থেকে মানবদেহে সংক্রমিত হতে পারে যেসব রোগ, তাদের সবার উৎস ইউরোপ বা আমেরিকা—গুটিবসন্ত, যক্ষ্মা, হাম এবং ইনফ্লুয়েঞ্জা। ১৪৯২ খ্রিষ্টাব্দে কলম্বাস যে অভিযানের বা সাম্রাজ্যবাদের যুগের সূচনা করেন, সে সময় এসব রোগেরও মারাত্মক মহামারি দেখা দেয়। 

একই রোগে ভুগে ভুগে কিছু কিছু রোগ সহ্য করার দৈহিক সক্ষমতা অর্জন করেছিল অনেক ইউরোপবাসী। তাদের এ সক্ষমতা দুনিয়ার বড় অংশ জয় করতে এবং সেখানে উপনিবেশ পত্তন করতে সহায়তা করে। একই ঘটনা ঘটে আমেরিকার ক্ষেত্রেও। ইউরোপীয়দের বিশ্ব জয়ের সুবিধা করে দেয় রোগ সহ্য করার এ সক্ষমতা। জারড ডায়মন্ডের বই 'গানস, জার্মস অ্যান্ড স্টিল'-এ এই প্রসঙ্গে কথা বলেন। তিনি লিখেছেন, জীবাণু ইউরোপীয়দের উপনিবেশ স্থাপনের সবচেয়ে বড় অস্ত্র হয়ে ওঠে। ইউরোপীয় অনেক উপনিবেশের আশপাশে ভূমিসন্তানেরা আগ্রাসীদের কাছ থেকে পাওয়া রোগে ভুগতে থাকে এবং তাদের জনসংখ্যা দ্রুত কমতে থাকে। 

সম্পদ, সম্মান এবং ভূমির তালাশে এসে ইউরোপীয়রা রোগের ঢেউ বইয়ে দেয়। নতুন পৃথিবীর সাংস্কৃতিক, জনসংখ্যা এবং সামাজিক গঠন চিরতরে বদলে দেয় এই সর্বনাশী ঢেউ। আজও কলম্বাসের সূচনা করা সেই ধারার ভোগান্তি চলছে। 

এ কথা ঠিক যে কলম্বাস প্রথম আমেরিকা 'আবিষ্কার' করেননি। ওই মাটিতে তিনি পা রাখার আগেই সেখানে হাজার হাজার বছর ধরে ভূমিসন্তানেরা বসবাস করছেন। এ ছাড়া আমেরিকার মাটিতে প্রথম বিদেশিও তিনি নন। তবে ইউরোপবাসী, আফ্রিকার থেকে দাস হিসেবে ধরে আনা মানবগোষ্ঠী এবং তাদের বয়ে আনা অসুখ-বিসুখের জন্য আমেরিকার দরজা স্থায়ীভাবে খুলে দেন যে ব্যক্তি, তার নামই কলম্বাস।

বিশেষ করে ম্যালেরিয়া এবং হলুদ জ্বরে ভুগে অকালে মরেছে আমেরিকার ভূমিসন্তানেরা। পরিসংখ্যান বলছে, এভাবে সেকালের বিশ্ব জনগোষ্ঠীর ২০ শতাংশই নির্মূল হয়ে যায়। অন্যদিকে আমেরিকা 'আবিষ্কারের' মধ্য দিয়ে কৃষিক্ষেত্রে নজিরহীন সুফল পেয়েছে ইউরোপ। এই সুফলের তালিকায় পড়ে তামাক ও কফি। এ কেবল বিলাসপণ্য হয়েই থাকে না। বরং অর্থনীতি, সমাজ এমনকি রাজনীতি বদলের গুরুত্বপূর্ণ পণ্য হয়ে ওঠে এসব।    

৪. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় সোমবারকে কলম্বাস দিবস হিসেবে পালন করা হয়। আমেরিকায় তার আগমনের সম্মানে এ দিবস পালন করা হয় এবং দিনটি সরকারি ছুটি। ১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দে কর্মমুক্ত এ দিবসে ভূমিপুত্র সিওক্স সক্রিয়বাদী বা অ্যাক্টিভিস্ট, আমেরিকান ইন্ডিয়ান মুভমেন্টের নেতা রাসেল মিনস কলম্বাসের মূর্তির ওপর রক্ত ঢেলে দেন। তিনি বলেন, কলম্বাসের 'নতুন বিশ্ব' আবিষ্কারের ঘটনার সাথে তুলনা করলে 'হিটলারকে বড়জোর কিশোর অপরাধীই মনে হবে।' 

ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, জিকা বা চিকনগুনিয়ার মতো রোগের প্রকোপ দেখে মনে হতে পারে, দুনিয়া থেকে মশককুল নির্মূল করা হলে উপকারই হবে। না, এ ভাবনা ঠিক নয়। পরিবেশে মশার সুভূমিকা রয়েছে। পরিবেশবিজ্ঞানীরা এমন কথা বলেন। পুরুষ জাতের মশা এমনকি কোনো কোনো প্রজাতির নারী মশাও ফুলের মধু এবং গাছগাছালির রস খেয়ে জীবন কাটায়। রক্তখেকো বা রোগবাহক নয়। এর মধ্য দিয়ে হাজার হাজার উদ্ভিদের পরাগায়নের কাজটি করছে মশকবাহিনী। 

অন্যদিকে অনেক জাতের মাছ ও পাখির আহারের অন্যতম উৎস মশা। ডোবা, পুকুর, দিঘি বা হ্রদের মতো বন্ধ পানিতে মশার ডিম কাছিম এবং উভচর প্রাণিকুলকে খাদ্য জোগায়। শূককীট ফড়িং-জাতীয় পতঙ্গের খাদ্য। এদিকে গিরগিটি, টিকটিকি, ব্যাঙ, মাকড়শার ক্ষুধা মেটায় প্রাপ্তবয়স্ক মশার ঝাঁক। কাজেই সব মশা নয়, ধ্বংস করতে হবে রোগবাহী মশা। 

রোগবাহী মশা না থাকলে এই মশককুলকে নিকেশ করাকে কেন্দ্র করে যুগ যুগ ধরে গড়ে ওঠা চাকরি এবং লোভনীয় ব্যবসাও যে থাকবে না। জালিয়াতির কথা না-ই বা বললাম। আলাইবালাই ষাট, কারও পেটে লাথি মারা যাবে না। মশা মারার ধুয়ো তুলে বা ধোঁয়া ছড়িয়ে কারও কারও সদ্য টাকশাল থেকে বের হয়ে আসা নতুন টাকার মতো চকচকে জীবনযাপন দেখে ঈর্ষায় ভোগা মোটেও জায়েজ হবে না! 

ইতিহাস পিন পিন করে কয়, ঢাকাইয়া মশার গোষ্ঠীনাশ করেছিলেন হাবিবুল্লাহ বাহার। এখন আর কজন তার কথা মনে করেন! বরং প্রতিবছর মশা মারতে ঢাকঢোল পিটিয়ে সগৌরবে যে হরেক 'কামান' দাগা হয়, তার সংবাদই সচিত্র প্রকাশ করেন আজকের দিনের সব খবর মহাজনেরা!)

Related Topics

টপ নিউজ

মশা / মশক / ইজেল

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • মারিয়া ব্রানিয়াস মোরেরা ১১৭ বছর বয়স পর্যন্ত বেঁচে ছিলেন। সূত্র: ড. ম্যানেল এস্টেলার
    ১১৭ বছর বেঁচে থাকা বিশ্বের প্রবীণতম নারীর জিন বিশ্লেষণে দীর্ঘায়ুর রহস্য বের করলেন বিজ্ঞানীরা
  • সুভাষ ঘাই। ছবি : সংগৃহীত
    সুভাষ ঘাই: ১৫ বছরে তৈরি করেন ৭ ব্লকবাস্টার! চার অভিনেতাকে বানিয়েছেন সুপারস্টার; ‘তারকা তৈরির কারিগর’
  • আবুধাবিতে পরিকল্পিত নেট-জিরো মসজিদের প্রবেশদ্বারের নকশা। সূত্র : অরুপ
    কাদামাটি আর সৌরশক্তিতে গড়া বিশ্বের প্রথম 'নেট-জিরো এনার্জি' মসজিদ
  • নিষেধাজ্ঞা পেছাতে ১৫ সদস্যের জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়া ও চীনের পক্ষে আনা প্রস্তাবে মাত্র চারটি দেশ সমর্থন দেয়। ছবি: রয়টার্স
    রাশিয়া, চীনের চেষ্টা ব্যর্থ, ইরানের ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল হচ্ছে
  • কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে আমিরুল ইসলাম (ডানে)। ফাইল ছবি
    ৪১ জন আত্মীয়-পরিজনকে আনতে ভিসার তদবির, যুক্তরাজ্যে তদন্তের মুখে লেবারদলের মেয়র
  • ছবি: সংগৃহীত
    ভারতে থালাপতি বিজয়ের জনসভায় পদদলিত হয়ে নারী-শিশুসহ অন্তত ৩৯ জন নিহত

Related News

  • আইজ্যাক বাবেলের গল্প | বুড়ো শ্লয়মি
  • সোভিয়েতরা কীভাবে হেমিংওয়েকে গুপ্তচর বানাল
  • বদরুদ্দীন উমর: অমরত্বের সন্তান 
  • বদরুদ্দীন উমর: কেন তাঁকে আমাদের মনে রাখতে হবে
  • অরুন্ধতী রায়: কিছু সাহসী মানুষের কারণে এখনো অন্ধকারে জোনাকির আলো দেখতে পারি 

Most Read

1
মারিয়া ব্রানিয়াস মোরেরা ১১৭ বছর বয়স পর্যন্ত বেঁচে ছিলেন। সূত্র: ড. ম্যানেল এস্টেলার
আন্তর্জাতিক

১১৭ বছর বেঁচে থাকা বিশ্বের প্রবীণতম নারীর জিন বিশ্লেষণে দীর্ঘায়ুর রহস্য বের করলেন বিজ্ঞানীরা

2
সুভাষ ঘাই। ছবি : সংগৃহীত
বিনোদন

সুভাষ ঘাই: ১৫ বছরে তৈরি করেন ৭ ব্লকবাস্টার! চার অভিনেতাকে বানিয়েছেন সুপারস্টার; ‘তারকা তৈরির কারিগর’

3
আবুধাবিতে পরিকল্পিত নেট-জিরো মসজিদের প্রবেশদ্বারের নকশা। সূত্র : অরুপ
আন্তর্জাতিক

কাদামাটি আর সৌরশক্তিতে গড়া বিশ্বের প্রথম 'নেট-জিরো এনার্জি' মসজিদ

4
নিষেধাজ্ঞা পেছাতে ১৫ সদস্যের জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়া ও চীনের পক্ষে আনা প্রস্তাবে মাত্র চারটি দেশ সমর্থন দেয়। ছবি: রয়টার্স
আন্তর্জাতিক

রাশিয়া, চীনের চেষ্টা ব্যর্থ, ইরানের ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল হচ্ছে

5
কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে আমিরুল ইসলাম (ডানে)। ফাইল ছবি
আন্তর্জাতিক

৪১ জন আত্মীয়-পরিজনকে আনতে ভিসার তদবির, যুক্তরাজ্যে তদন্তের মুখে লেবারদলের মেয়র

6
ছবি: সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক

ভারতে থালাপতি বিজয়ের জনসভায় পদদলিত হয়ে নারী-শিশুসহ অন্তত ৩৯ জন নিহত

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net