জাতীয় নির্বাচন কবে হবে এ সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের: ইইউ রাষ্ট্রদূত

বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার বলেছেন, জাতীয় নির্বাচন কবে হবে এ সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের। দ্রুত কিংবা বিলম্বে নির্বাচন, যাই হোক না কেন— সেটি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোনও মতামত নেই। আমরা সংস্কার প্রক্রিয়া দেখছি এবং বাস্তবায়নে সহযোগিতা করছি।
আজ বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বিকেলে রাজশাহী মহানগরীর একটি অভিজাত হোটেলে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দাবি করলেও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বলছে, প্রয়োজনীয় সংস্কারের ওপর ভিত্তি করে ভোট ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে তা হতে পারে।
এই প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন, 'বাংলাদেশের রূপান্তর প্রক্রিয়াকে আমরা সমর্থন করি এবং তা সফল হোক, এই কামনা করি।'
তিনি বলেন, "বাংলাদেশের জনগণ গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চায় খুবই সক্রিয়। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কোন দলগুলো নির্বাচনে অংশ নিবে—সেটি তারা সিদ্ধান্ত নেবেন। আমরা আশা করব, গণতন্ত্রের আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।"
তিনি আরও বলেন, "অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জটিল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে তাদের কার্যক্রম শুরু করেছিল। সরকারকে প্রশংসা করতে হয়, কারণ পরিস্থিতি স্থিতিশীল হচ্ছে, অর্থনৈতিক অবস্থা ভালোর দিকে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি চাপমুক্ত হয়ে উন্নতি করছে।"
মাইকেল মিলার বলেন, মিথ্যা তথ্য-উপাত্ত দেয়া, ডকুমেন্টশন সঠিক না হওয়ার কারণে ইইউ-ভুক্ত দেশগুলোতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসার আবেদন প্রত্যাখ্যাত হচ্ছে। তবে আবেদন করে সফল হওয়ার সংখ্যাও কম নয়।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই রাষ্ট্রদূত বলেন, আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বার্তা হলো– রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অর্থায়ন নিয়ে কোনো চাপ নেই। যেকোন মূল্যে আমরা পাশে আছি। স্থিতিশীল অবস্থা থাকবে বলে আশা করি।
আন্তর্জাতিক বাজারে রাজশাহীর আমের সম্ভাবনা
ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, রাজশাহীর আম ইউরোপীয় বাজারে বিশাল সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে। শুধু আম নয়, এখানকার আরও অনেক পণ্য রয়েছে যেগুলো আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানি করা যেতে পারে।
এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতেও ইইউ সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত বলে জানান তিনি।
মিলার জানান, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্সের সঙ্গে ইতোমধ্যে একটি ফলপ্রসূ বৈঠক হয়েছে, যা বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদারে সহায়ক হবে।
এ ছাড়া রাজশাহী শহরের পরিকল্পিত অবকাঠামো ও পরিবেশেরও প্রশংসা করেন রাষ্ট্রদূত মিলার। বলেন, 'রাজশাহী শহর খুব পরিষ্কার ও সুপরিকল্পিত। এখানকার মানুষের আন্তরিকতা ও আতিথেয়তায় আমি মুগ্ধ।'
তিনদিনের সফর শেষে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত রাজশাহী থেকে ঢাকায় ফেরেন। আগের দুদিন তিনি পুঠিয়া মন্দির, জেলা নির্বাচন অফিস, চেম্বার অব কমার্স, বরেন্দ্র জাদুঘর পরিদর্শন করেন।