দাম বাড়ানোর পরিবর্তে ‘শুল্ক খাও’: ওয়ালমার্টকে ট্রাম্প

বিশ্বের সবচেয়ে বড় রিটেইল শপ ওয়ালমার্টকে দাম বাড়ানোর পরিবর্তে 'শুল্ক খাও' বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গতকাল শনিবার (১৭ মে) তিনি এ কথা বলেন।
সম্প্রতি ওয়ালমার্ট তাদের আমদানিকৃত পণ্যের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিলে ট্রাম্প এ মন্তব্য করেন। ওয়ালমার্ট জানিয়েছে, উচ্চ শুল্কের কারণে তারা চলতি মাসের শেষের দিকে পণ্যের দাম বাড়াতে বাধ্য হবে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের একটি পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, "শুল্ককে পণ্যের দাম বাড়ানোর কারণ হিসেবে দেখানো 'বন্ধ' করতে হবে ওয়ালমার্টকে। গত বছর ওয়ালমার্ট 'বিলিয়ন বিলিয়ন' ডলার আয় করেছে।"
তিনি আরও বলেন, "ওয়ালমার্ট ও চীনের উচিত, ক্রেতাদের কাছ থেকে এক পয়সাও দাম বেশি না নিয়ে 'শুল্ক খাওয়া'।"
এ প্রসঙ্গে ওয়ালমার্ট জানায়, তারা সব সময় পণ্যের দাম যতটা সম্ভব কম রাখার চেষ্টা করেছে এবং এই নীতিতে তারা অটল থাকবে।
ওয়ালমার্ট রয়টার্সকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেছে, "আমরা আমাদের খুচরা মুনাফা বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে যতটা সম্ভব এবং যতদিন পারি, পণ্যের দাম কম রাখার চেষ্টা করব।"
ওয়ালমার্টের প্রধান নির্বাহী ডগ ম্যাকমিলন বৃহস্পতিবার বলেন, খুচরা বিক্রয়ে লাভের পরিমাণ সীমিত হওয়ায় তারা শুল্কের সব খরচ বহন করতে পারছে না। তবে তিনি আশ্বস্ত করেন, চীন থেকে আসা সাধারণ পণ্যের ওপর শুল্কের কারণে খাদ্যপণ্যের দাম যেন না বাড়ে, সে বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
যুক্তরাষ্ট্র ও তার বাণিজ্য অংশীদারদের, বিশেষ করে চীনের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার কারণে অনেক মার্কিন কোম্পানি তাদের পূর্ণ বছরের মুনাফার পূর্বাভাস কমিয়ে দিয়েছে বা পুরোপুরি প্রত্যাহার করে নিয়েছে, কারণ ভোক্তারা ব্যয় হ্রাস করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তা অবস্থার একটি সূচক হিসেবে বিবেচিত ওয়ালমার্ট যখন শুল্কের প্রভাব নিয়ে স্পষ্ট বক্তব্য দেয়, তখন সেটি বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে খুচরা খাত কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে—তার একটি নির্দেশক হয়ে ওঠে। কম দামে পণ্য সরবরাহ করতে খরচ নিয়ন্ত্রণে অন্য যেকোনো প্রতিষ্ঠানের চেয়ে বেশি দক্ষ হওয়ার জন্য ওয়ালমার্ট সুপরিচিত।
প্রতি সপ্তাহে বিশ্বজুড়ে ২৫৫ মিলিয়ন মানুষ ওয়ালমার্টের দোকানে কেনাকাটা করে বা অনলাইনে অর্ডার দেয়, এবং যুক্তরাষ্ট্রের ৯০ শতাংশ মানুষ ওয়ালমার্ট থেকে ১০ মাইলের (১৬ কিলোমিটার) মধ্যে বাস করে।
ওয়ালমার্টের এই ঘোষণা এসেছে আনুমানিক তিন সপ্তাহ পর, যখন একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, আমাজন তাদের পণ্যের মূল্যের ওপর ট্রাম্প প্রশাসন আরোপিত শুল্ক কতটা প্রভাব ফেলেছে তা তারা প্রকাশ করবে। এই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে হোয়াইট হাউস আমাজনের কঠোর সমালোচনা করে। এতে পরবর্তীতে আমাজন সেই প্রতিবেদন দ্রুত প্রত্যাখ্যান করে।