সুবর্ণ মনে করে গ্রিন সিগন্যাল, নাঙ্গলকোটে থামল না চট্টলা!

কুমিল্লার নাঙ্গলকোট স্টেশনের কাছে চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেন। একটু পর দেবে যাত্রাবিরতি। এদিকে চট্টগ্রাম যাওয়ার জন্য নাঙ্গলকোট স্টেশনে অপেক্ষমান যাত্রীরা। কিন্তু বিধি বাম! কিছু সময় ধরে ব্যাগ গোছানো যাত্রীরা নামতে পারলেন না, উঠতে পারলেন না অপেক্ষমানরাও। চোখের সামনেই ট্রেন চলে গেল অন্য স্টেশনে। এতে ওই স্টেশনে শোরগোল বেধে যায়।
রোববার (১৩ জুলাই) সন্ধ্যা ৭টা ২৬ মিনিটের দিকে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সহকারী স্টেশন মাস্টার, গার্ড ও দুই ট্রেন চালককে বুক অফ (সাময়িক বরখাস্ত) করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, চট্টগ্রামগামী চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেনের নম্বর ৮০২। সুবর্ণ এক্সপ্রেসের নম্বর ৭০২। চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেন ছয়টা ২১ মিনিটে নাঙ্গলকোট স্টেশন ছেড়ে যায়। গত কয়েক মাস ধরে নির্ধারিত সূচিতে ট্রেনটি চলাচল করছে না। প্রায় প্রতিদিনই এক থেকে তিন ঘণ্টা বিলম্ব হচ্ছে। রোববার এক ঘণ্টা ৫ মিনিট বিলম্বে সাতটা ২৬ মিনিটে নাঙ্গলকোট স্টেশন অতিক্রম করে। যদিও এটি নাঙ্গলকোট যাত্রাবিরতি দেওয়ার কথা।
অপরদিকে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী বিরতিহীন সুবর্ণ এক্সপ্রেস সাড়ে ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে নাঙ্গলকোট স্টেশন অতিক্রম করে। যার কারণে তালগোল পাকিয়ে ফেলেন স্টেশন মাস্টার। তিনি ভুলে গ্রিন সিগন্যাল দিয়ে দেওয়ায় চট্টলা চলে যায় পরের স্টেশন হাসানপুরে।
এদিকে ভুলের কারণে নাঙ্গলকোটে স্টপেজ দেয় বিরতিহীন সুবর্ণ এক্সপ্রেস। অপেক্ষমান যাত্রীরা ওই ট্রেনে করেই শেষমেশ চট্টগ্রাম পৌঁছান।
চট্টলা এক্সপ্রেসে কুমিল্লা থেকে নাঙ্গলকোট যাচ্ছিলেন আলী হায়দার নামে এক যাত্রী। তিনি বলেন, 'নামার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। বগির ভেতর থেকে দরজার কাছাকাছি চলে এসেছি। হঠাৎ দেখি ট্রেন আর থামেনি। ট্রেনে নাঙ্গলকোটের অনেক যাত্রী ছিলেন। তারা চেঁচামেচি শুরু করেন। এদিকে এ সময়ে ফিরতি কোনো ট্রেন ছিল না। বাড়তি ভাড়া দিয়ে সিএনজি অটোরিকশায় করে আবার নাঙ্গলকোট ফেরত আসি।'
ফেসবুকে চট্টলা ট্রেনের নিয়মিত যাত্রী মোহাম্মদ রনি লেখেন, 'আমি বিমানবন্দর থেকে সবসময় ৮০২ চট্টলাতে করেই নাঙ্গলকোট যাই। ওইখান থেকে সিএনজি অটোরিকশা ভাড়া করে জোড্ডা বাজার, তারপর অটোরিকশায় করে নিজ বাড়ির সামনে যাওয়া লাগে। সাথে ব্যাগ, বউ-বাচ্চা আর লাগেজ তো থাকেই। তাহলে রাতের ৮টা বা সাড়ে ৮টা বাজে যদি নাঙ্গলকোট না দাঁড়িয়ে হাসানপুর নামিয়ে দেয়, তাহলে এই রাতের বেলা গ্রাম এলাকায় বউ বাচ্চাওয়ালা একটা মানুষের কী অবস্থা হবে চিন্তা করেন।'
নাঙ্গলকোটের স্টেশন মাস্টার মো. জামাল হোসেন বলেন, 'দুটি ট্রেনের নম্বরের শেষে দুই আছে। ওই সময়ের দায়িত্বরত সহকারী স্টেশন মাস্টার ৮০২-কে ৭০২ মনে করে লাইন ক্লিয়ার দিয়ে দেন। ওই সময়ে চালক ও গার্ড দক্ষতার পরিচয় দিলে এমন ভুল হতো না। মোটকথা, সহকারী স্টেশন মাস্টার, চালক ও গার্ড—সবার অসাবধানতার কারণে এমন ভুল হয়েছে।'