ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলনেতা সাম্য হত্যা: উপাচার্য–প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলনেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার ঘটনায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা। এসময় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগের দাবি তুলেছেন।
আজ বুধবার (১৪ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে জড়ো হয়ে সাম্য হত্যার বিচার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সামবেশ করেন ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা।
এ সময় তারা উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান এবং প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদের পদত্যাগ দাবি করেন।
এর আগে, পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বেলা ১২টার দিকে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে মিছিল বের করে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। সে সময় তারা এই হত্যার বিচার দাবি করে করে এবং ভিসিবিরোধী নানা স্লোগান দেন। মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বরের সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা।
সমাবেশে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপনও প্রমুখ বক্তব্য দেন।
এসময় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, 'কোনো বিশেষ গোষ্ঠীকে সহায়তা করার জন্য এই অন্তর্বর্তী সরকারকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি।'
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, 'অতি দ্রুত আমরা এই ভিসি ও প্রক্টরকে সরানোর অনুরোধ করছি সরকারের কাছে। না হলে আমরা এই ইন্টেরিম সরকারকেই সরাতে বাধ্য হব।'
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপনও উপাচার্য-প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করেন।
প্রসঙ্গত, সোমবার (১৩ মে) গভীর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন রমনা কালীমন্দিরের সামনে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য (২৫) নিহত হয়েছেন।
তিনি ঢাবির শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন বলে জানান শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালিদ মনসুর।
সাম্য এ এফ রহমান হলের ২২২ নম্বর কক্ষের আবাসিক ছাত্র এবং সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার বাসিন্দা ছিলেন। সাম্য একইসঙ্গে ছাত্রদলের এ এফ রহমান হল শাখার সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন।
পুলিশের তথ্যানুসারে, সোমবার রাত ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে সাম্য তার বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধু আশরাফুল আলম রাফি ও মো. আব্দুল্লাহ আল বায়েজিদের সঙ্গে মোটরসাইকেল নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরার সময় রমনা কালীমন্দিরের উত্তর পাশে বটগাছের কাছে পৌঁছালে অজ্ঞাতনামা ১০-১২ জন ব্যক্তি মোটরসাইকেল দিয়ে সাম্যর মোটরসাইকেল ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়।
পুলিশ আরও জানায়, এ বিষয় নিয়ে তাদের সঙ্গে ওই ব্যক্তিদের তর্কবির্তক শুরু হয়। একপর্যায়ে ওই ব্যক্তিরা তাদেরকে কিল, ঘুষি ও ইট দিয়ে আঘাত করে আহত করে। পরে একজন অজ্ঞাত দুর্বৃত্ত সাম্যকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ডান পায়ের ডান রানের পেছনে উপর্যুপরি আঘাত করে গুরুতর জখম করে। তিনি মাটিতে পড়ে গেলে দুর্বৃত্তরা সাম্য ও ও তার বন্ধুদের ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
সহপাঠীরা সাম্যকে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।