ডাকসু নির্বাচন সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ায় সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থী, গণমাধ্যমকর্মী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং নির্বাচনি প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান।
তিনি বলেন, 'ডাকসু নির্বাচন শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি ছিল। শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সম্মান জানিয়ে, বিভিন্ন অংশীজনের সহযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই নির্বাচন আয়োজন করে। এটিকে আমরা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের প্রতি এবং এর মূল্যবোধের প্রতি সম্মান জানানোর একটি সুযোগ হিসেবে দেখি।'
নির্বাচনের সব পর্যায়ে স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতির জন্য উপাচার্য বিশেষভাবে সাংবাদিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। কর্তব্যরত অবস্থায় মৃত্যুবরণকারী চ্যানেল এস-এর সাংবাদিক তারিকুল ইসলাম শিবলীর মৃত্যুতে উপাচার্য গভীর শোক প্রকাশ করেন এবং মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন।
উপাচার্য নির্বাচনের প্রতিটি পর্বে ব্যাপক সমর্থন ও সহযোগিতার জন্য শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, 'ডাকসুর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মতামত প্রকাশের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে কাজ করার যে সুযোগ তৈরি হয়েছে, সেটি তারা পুরোপুরি কাজে লাগাবে—এমনটাই আমরা আশা করি।'
নির্বাচন কমিশনসহ নির্বাচনি প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে উপাচার্য বলেন, 'নির্বাচন কমিশন প্রকৃত অর্থেই দিন-রাত পরিশ্রম করেছেন। কমিশনের একজন সদস্য সন্তানকে মুমূর্ষু অবস্থায় আইসিইউতে রেখে কর্তব্যের তাগিদে আমাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিকভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।'
তিনি বলেন, 'আমি এই উদাহরণটি দিলাম এই কারণে যে, ডাকসু নির্বাচন আয়োজনে বহু মানুষের কঠিন পরিশ্রম রয়েছে। গত এগারো মাসব্যাপী এই আয়োজনে আমার সহকর্মীরা অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছেন। তারা প্রতিটি পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যালোচনা করে বাস্তবায়ন করেছেন। তাদের ভূমিকা যেকোনো বিবেচনায় অনবদ্য।'
তিনি আরও বলেন, 'আমার এই আয়োজনে সাড়া দিয়ে অভিভাবক, বিভিন্ন শিক্ষক ফোরাম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পর্যবেক্ষক দলসহ বিভিন্ন পর্যায়ের অংশীজন এগিয়ে এসেছেন। আমরা তাদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। নির্বাচন পর্যবেক্ষণে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।'
উপাচার্য বিজয়ী ও বিজিত প্রার্থীদের শুভকামনা জানিয়ে বলেন, 'দুটি কারণে তাদের প্রত্যেকের গুরুত্বপূর্ণ অবদান উল্লেখ করা জরুরি। প্রথমত, তারা ডাকসুর মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠানকে সক্রিয়করণে ভূমিকা রেখেছেন।'
তিনি বলেন, 'দ্বিতীয়ত, নির্বাচনের প্রস্তুতি পর্ব থেকে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দিন পর্যন্ত পরমতসহিষ্ণুতা প্রদর্শনের মাধ্যমে বড় ধরনের সংঘাত ছাড়াই তারা একসঙ্গে ছিলেন। বিভিন্ন দল ও মত, অনেকরকম মতপার্থক্য সত্ত্বেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং দেশের প্রতি মমত্ববোধের কারণে আমরা যে এক হতে পারি, তার একটি চমৎকার উদাহরণ তারা তৈরি করেছেন।'
তিনি আরও বলেন, 'আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা বিশেষভাবে স্মরণ করতে চাই। কঠিন কিছু পরিস্থিতিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ প্রশাসন, পুলিশের বিভিন্ন শাখা ও গোয়েন্দা দপ্তরসমূহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। আমরা তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।'
উপাচার্য বলেন, 'একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি দেশের মানুষ যে আগ্রহ ও সমর্থন দেখিয়েছেন, সেটি আমাদের জন্য একটি বড় প্রাপ্তি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে থাকার জন্য আমি পুরো দেশবাসীকে অভিবাদন জানাই। আমাদের এখনও অনেক পথ বাকি।'
তিনি আরও বলেন, 'ডাকসুর সক্রিয়করণের মাধ্যমে দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের প্রক্রিয়া এবং বাংলাদেশ পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় আমরা দেশ ও জাতির সঙ্গে থাকতে চাই।'