অনিয়মের অভিযোগ তুলে পদত্যাগ করলেন জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য মাফরুহী সাত্তার

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে পদত্যাগ করেছেন জাকসু নিবার্চন কমিশনের সদস্য মাফরুহী সাত্তার। আজ শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবনের সামনে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
মাফরুহী সাত্তার বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষক। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি।
মাফরুহী সাত্তার বলেন, 'নির্বাচন চলাকালীন, নির্বাচনের আগে এবং এই আজ পর্যন্ত বিভিন্নভাবে বিভিন্ন জায়গা থেকে যেসব অনিয়ম ও ত্রুটির কথা উল্লেখ করা হয়েছে এবং অনেকগুলো মারাত্মক ত্রুটি রয়ে গেছে, সেসব অনিয়ম ও ত্রুটি দূর করার জন্য আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। কিন্তু যেই পর্যায়ে এখন এসেছে, সেখানে আমি দেখছি এই ত্রুটিগুলো দূর করতে সংশ্লিষ্টরা ব্যর্থ হচ্ছেন। সেই কারণে আমি এই দায়ভার নিতে চাইনি। আর এই দায়ভার নেব না বলেই আমি পদত্যাগ করেছি।'
তিনি বলেন, 'আজ বিকেলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার সভা ডেকেছিলেন। আমরা দীর্ঘক্ষণ সভা করেছি। একপর্যায়ে যখন আমি উঠে নামাজ পড়তে গিয়েছি, এসে দেখছি ভোট গণনা শুরু হয়ে গেছে। আমি নির্বাচন কমিশনকে বারবার অনুরোধ করেছি অভিযোগগুলো, সমস্যাগুলোর দিকে দৃষ্টিপাত করে আপাতত গণনা স্থগিত রাখা হোক। সুষ্ঠু স্বচ্ছ জাকসুর দিকে এগিয়ে যাই। কিন্তু আমি তাতে ব্যর্থ হয়েছি।'
'আমি চাপের মুখে পদত্যাগ করিনি। আমাকে বরং চাপ দেওয়া হয়েছে যেন আমি পদত্যাগ না করি। এমনকি বিভিন্নভাবে আমাকে চাপ দেওয়া হয়েছে যেন আমি মেনে নেই। আমি কখনো কাউকে ভয় করিনি, এখনো করব না। আমার কাছে যেটা সঠিক মনে হয়েছে, আমি সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি...আমি কোনো দায় নেব না', যোগ করেন তিনি।
সুনির্দিষ্টভাবে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মাফরুহী সাত্তার সাংবাদিকদের বলেন, 'এই মুহূর্তে আমার পক্ষে বলা সম্ভব নয়। আমাকে এজন্য সময় দিতে হবে। ...আমি অবশ্যই আপনাদের সামনে বিষয়গুলো তুলে ধরব।'
এবারের নির্বাচনে জাকসু ও হল সংসদের ৩৪০টি পদের বিপরীতে ৬২০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এর মধ্যে হল সংসদের ৩১৫টি পদের মধ্যে ১৩১ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন এবং ৬৮টি পদ এখনও শূন্য রয়েছে। আর কেন্দ্রীয় সংসদে ২৫টি পদের বিপরীতে লড়ছেন ১৭৭ জন প্রার্থী, যার মধ্যে ১৩২ জন ছাত্র ও ৪৫ জন ছাত্রী।
নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ হাজার ৭৪৩ জন। ভোট পড়েছে ৬৭ থেকে ৬৮ শতাংশ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় ভোটগ্রহণ শেষ হয়। রাত সোয়া ১০টার দিকে ভোট গণনা শুরু হয়। তবে ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এখনো ফলাফল ঘোষণা করতে পারেনি নির্বাচন কমিশন।
সর্বশেষ তথ্যমতে, হল সংসদের ভোট গণনা শেষ হয়েছে। এখন কেন্দ্রীয় সংসদের গণনা চলছে। আজ শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জানান, আজ রাতের মধ্যেই জাকসু ও ২১টি হল সংসদের ভোট গণনা শেষে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হবে।