শুধু ঝুঁকিপূর্ণ জেলাগুলোয় সেনা সদস্য মোতায়েন করা হবে
শুধু ঝুঁকিপূর্ণ জেলাগুলোয় সেনা সদস্য মোতায়েন করা হবে বলে জানান দেশের উত্তরাঞ্চলের একজন পুলিশ সুপার।
তিনি জানান, নির্বাচনের আগে মাঠ পর্যায়ে সেনা সদস্যদের মোতায়েনের ক্ষেত্রে কিছু পরিবর্তন আনা হবে। যেসব জেলার পুলিশ সুপাররা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিজেদের স্বয়ংসম্পূর্ণ মনে করবেন, সেসব জেলার যৌথ বাহিনীর তেমন ডেপ্লয়মেন্ট থাকবে না। ওইসব জেলা থেকে সেনাবাহিনীর সদস্যদের বেশি ঝুঁকিপূর্ণ জেলায় মোতায়েন করা হবে। তবে এক্ষেত্রে পুরোপুরি জেলার পুলিশ সুপারদের মাঠের পরিস্থিতিকে প্রাধান্য দেওয়া হবে।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) সকালে পুলিশ সদর দপ্তরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ইউনিট প্রধান ও জেলার পুলিশ সুপারদের সঙ্গে বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে।
এসময় ওই পুলিশ সুপার জানান, আসছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুলিশকে গুরুত্ব দিয়ে নির্বাচনি আইনশৃঙ্খলা সাজাতে চায় অন্তবর্তী সরকার।
বৈঠকের পর অন্তত তিনটি জেলার পুলিশ সুপার দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে (টিবিএস)- বলেন, নির্বাচনের আগে আর নতুন করে কোনো আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স না দিতে পুলিশকে নিদের্শ দেওয়া হয়েছে।
একইসঙ্গে জুলাই অভ্যুত্থানের আগে পরে লুট হওয়া পুলিশের আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারে জোর তৎপরতার তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
সীমান্তবর্তী একটি জেলার পুলিশ সুপার অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের অবৈধ প্রবেশ ঠেকাতে নির্দেশনা চাইলে এসব বিষয়ে যৌথবাহিনীও পুলিশকে সহযোগিতা করবে বলে জানানো হয়।
এছাড়া নির্বাচনের আগে কোনোভাবেই কোনো রাজনৈতিক দলের সম্ভাব্য প্রার্থী বা প্রার্থীকে কোনো ধরনের বাড়তি সুবিধা না দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এমনকি একই দলের দুজন প্রার্থী মাঠে থাকলেও পুলিশকে পুরোপুরি নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখার আদেশ দেওয়া হয়।
বৈঠক থেকে বের হয়ে বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, এসব নির্দেশনা পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা গেলে তারা একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে পারবেন।
ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি), বাংলাদেশ বাহারুল আলম বলেন, 'আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাংলাদেশ পুলিশের জন্য এক চ্যালেঞ্জ। তবে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার সক্ষমতা পুলিশের রয়েছে।'
তিনি বলেন, 'অতীতে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পুলিশ সম্পর্কে জনমনে যে নেতিবাচক ইমেজ তৈরি হয়েছে, তা থেকে বেরিয়ে আসার একটা বড় সুযোগ আগামী নির্বাচন। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে জনগণের আস্থা অর্জনে সবাইকে সচেষ্ট থাকতে হবে।
আইজিপি আজ দুপুরে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের হল অব প্রাইডে অনুষ্ঠিত বিশেষ অপরাধ পর্যালোচনা সভায় সভাপতির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
সভায় ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী, র্যাব মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান, এসবি প্রধান মো. গোলাম রসুল, অতিরিক্ত আইজিগণ, ঢাকাস্থ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের প্রধানেরা, সব পুলিশ কমিশনার ও রেঞ্জ ডিআইজি উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া সব জেলা পুলিশ সুপার ভার্চুয়ালি সভায় যুক্ত ছিলেন।
সভায় অতিরিক্ত আইজি (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) খোন্দকার রফিকুল ইসলাম দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা ও অপরাধ পরিস্থিতির চিত্র তুলে ধরেন। তবে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা ও হানাহানির সম্ভাবনা আছে বলে জানানো হয়।
পুলিশ প্রধান নির্বাচনকে সামনে রেখে পুলিশের লুণ্ঠিত অস্ত্র উদ্ধার তৎপরতা বাড়ানোর নির্দেশনা দেন। তিনি এক্ষেত্রে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি অস্ত্র উদ্ধারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোষিত পুরস্কার সম্পর্কে প্রচারণা বাড়ানোর ওপর জোর দেন।
আইজিপি বাংলাদেশ পুলিশের চলমান নির্বাচনি প্রশিক্ষণ নিবিড়ভাবে পরিচালনা্র জন্য ইউনিট প্রধানদের নির্দেশ দেন।
