‘লিপস্টিক ক্যু’র পর ব্রাজিলে এক নারীর ১৪ বছরের জেল

ব্রাজিলের ফেডারেল রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় বিক্ষোভ চলাকালে একটি মূর্তির গায়ে লিপস্টিক দিয়ে 'অপমানজনক বার্তা' লেখার পর এক নারীকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত।
ওই নারীর নাম দেবোরা রদ্রিগেজ। তিনি ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারোর সমর্থকদের সঙ্গে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন। বিক্ষোভ থেকে বলসোনারোর হাজার হাজার সমর্থক সরকারি ভবনে হামলা চালিয়েছিল।
বিচারপতি ক্রিস্তিয়ানো জেনিন জানান, রদ্রিগেজকে কেবল ওই গ্রাফিতির জন্য বিচারের মুখোমুখি করা হয়নি। তিনি একাধিক অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।
ব্রাজিলের বর্তমান প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভার বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তদন্তের জেরে রদ্রিগেজকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তিনি যেসব অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন সেগুলোর মধ্যে রয়েছে সম্পত্তি ধ্বংস, একটি অপরাধচক্রের সদস্য হওয়া এবং অভ্যুত্থানের চেষ্টায় অংশ নেওয়া।
৩৯ বছর বয়সি ওই নারী যে মুর্তির গায়ে লিখেছিলেন, সেটি ছিল বিচারপতির। এটি সুপ্রিম ফেডারেল কোর্টের বাইরে অবস্থিত।
তিনি লিখেছিলেন, 'তুমি হেরে গেছো, বোকা'। এ কাজের জন্য তিনি পরে ক্ষমাও চান। ঘটনাটি পরে 'লিপস্টিক ক্যু' বা লিপস্টিক অভ্যুত্থান নামে ছড়িয়ে পড়ে।
রদ্রিগেজের দাবি- তিনি কোনো ধরনের সহিংসতায় অংশ নেননি। আদালতের কাছে তিনি বলেছেন, তিনি 'একজন সুনাগরিক'।
তিনি বলেন, 'আমি প্রতিবাদ জানাতে গিয়েছিলাম। আমি ভাবিনি যে পরিস্থিতি এতটা অশান্ত হয়ে উঠবে। আমি জীবনে কখনোই বেআইনি কিছু করিনি।'
রদ্রিগেজের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, সহিংসতার সময় তিনি কোনো ভবনে প্রবেশ করেননি। তিনি আবেগের বশে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন। আর এ কাজের জন্য তিনি অনুশোচনা প্রকাশ করেছেন।
তবে মামলার প্রধান বিচারপতি আলেক্সান্দ্রে দে মোরায়েস বলেছেন, রদ্রিগেজ 'জেনেবুঝে ও ইচ্ছাকৃতভাবে' এমন বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন, যারা সরকারকে উৎখাত করতে চেয়েছিলেন।
তিনি আরও বলেন, রদ্রিগেজ পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন যে তিনি গণতন্ত্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়েছিলেন। আর তার ফোনের মেসেজ ডিলিট করে দেওয়া এটাই স্পষ্ট করে যে তিনি প্রমাণ লুকানোর চেষ্টা করেছিলেন।
এদিকে বলসোনারোর সমর্থদের দাবি, রদ্রিগেজ ন্যায়বিচার পাননি। বরং তিনি রাজনৈতিক নিপীড়নের শিকার।