জুলাই আন্দোলনে নিহত সোহেলের ডিএনএ পরীক্ষার নির্দেশ

রাজধানীর রায়ের বাজার বধ্যভূমিতে জুলাই আন্দোলনের অজ্ঞাতনামা লাশ হিসেবে দাফনকৃত মো. সোহেল রানার পরিচয় শনাক্তে ডিএনএ পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিএম ফারহান ইসতিয়াকের আদালত গত ৩০ জুলাই এই আদেশ দেন।
সোমবার (৪ আগস্ট) বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানায়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, গত বছরের ১৮ জুলাই যাত্রাবাড়ী থানার দক্ষিণ কাজলা এলাকায় শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে অংশগ্রহণকালে নিখোঁজ হন মো. সোহেল রানা। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন স্থান ও হাসপাতালে খোঁজ করেও তার কোনো সন্ধান পাননি।
পরবর্তীতে সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিও থেকে তারা সোহেলের মৃতদেহ শনাক্ত করেন। কিন্তু লাশের খোঁজ পাননি। একদিন হঠাৎ একটি অপরিচিত ফোন কলের মাধ্যমে তারা জানতে পারেন, আঞ্জুমান মফিজুল ইসলামের সহায়তায় অনেকগুলো মৃতদেহ দাফন করা হয়েছে। যার মধ্যে মো. সোহেল রানার ছবিও দেখা গেছে।
পরে আঞ্জুমান মফিজুল ইসলামে গেলে সেখানকার সংরক্ষিত তথ্য থেকে তারা জানতে পারে যে গত বছরের ২৩ জুলাই শাহবাগ থানা মো. সোহেল রানার মৃতদেহ আঞ্জুমান মফিজুল ইসলামে পাঠান এবং ২৪ জুলাই তার মৃতদেহ রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানের ৪নং ব্লকে দাফন করা হয়।
নিহত সোহেল রানার পরিবারের সদস্যরা তার কবর শনাক্তের উদ্দেশ্যে কবরস্থানে গিয়ে দেখতে পান যে গণকবরে তার মৃতদেহসহ মোট ১১৩টি মৃতদেহ দাফন করা হয়েছে। মৃতদেহ সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করার জন্য কবরে কোনো প্রকার চিহ্ন না থাকার কারণে তাদের পক্ষে মো. সোহেল রানার কবর শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
মৃতদেহ উদ্ধারের জন্য নিহতের ভাই বাদী হয়ে একই বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানার আমলী আদালতে একটি মামলা করেন।
তবে, দীর্ঘসময় অতিবাহিত হলেও এই মামলায় কোন তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল না হওয়ায় সোহেল রানার পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ব্লাস্ট মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে সোহেল রানার মৃতদেহসহ অজ্ঞাতনামা অবশিষ্ট ১১২ জন ব্যক্তির মৃতদেহ উত্তোলন করে ময়না তদন্ত এবং পরিচয় সনাক্তের লক্ষে ডিএনএ প্রোফাইল সংরক্ষনের ব্যবস্থা গ্রহণ করার একটি আবেদন আদালতে উপস্থাপন করেন।
পরবর্তীতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাও আরেকটি আবেদন আদালতে উপস্থাপন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ৩০ জুলাই আদালত দুটি আবেদন মঞ্জুর করেন।