গুলশানে চাঁদাবাজি: গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের বহিষ্কৃত নেতা অপুর দোষ স্বীকার

রাজধানীর গুলশানে সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে করা মামলায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম ওরফে অপু দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
বুধবার (৬ আগস্ট) চার দিনের রিমান্ড শেষে আসামিকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এসময় আসামি অপু স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোখলেছুর রহমান।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জামসেদ আলমের আদালত তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত ১ আগস্ট (শুক্রবার) সকালে রাজধানীর ওয়ারী এলাকা থেকে অপুকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন তার চার দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন ঢাকার একটি আদালত। ওইদিন রিমান্ড শুনানি চলাকালে অপু বলেছিলেন, 'রিয়াদ বাদে এ মামলায় আর কেউ জড়িত না। আমিও জড়িত নই। রিয়াদ বিপদে পড়েছে বলে আমাদের জানায়। রিয়াদ বলেছিল, তোরা দ্রুত আয়, আমরা সবাই গিয়ে ফেঁসে গেছি।'
তিনি আরও বলেছিলেন, 'এখানে চাঁদাবাজির কোনো ঘটনা আছে তা আমরা কেউই জানতাম না। ঘটনার দিন আমরা বাসার নিয়ে যাই। পরে চাঁদাবাজির ঘটনা শুনে চলে আসি। আমাদের লোকেশন ট্র্যাকিং করে দেখেন আমরা কোথায় ছিলাম। আমাকে কেন রিমান্ডে নেওয়া হবে? রিমান্ডের আবেদন সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। এজাহারে যা আছে, ফরোয়ার্ডিংয়ে এ বিষয়ে কিছু নেই। আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে।'
গত ২৭ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিনজন ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের একজনের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। আমিনুল নামে ছাত্রসংসদের আরেক নেতাকে গাজীপুরের কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানো হয়েছে৷ পরদিন শনিবার (২ আগস্ট) অপুর চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। ৩ আগস্ট রিয়াদ এ ঘটনায় দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। বাকি তিনজনকে কারাগারে পাঠানো হয়।
তারা হলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা মহানগরের আহ্বায়ক ইব্রাহিম হোসেন মুন্না, সদস্য মো. সাকাদাউন সিয়াম ও সাদমান সাদাব, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ১৭ জুলাই সকাল ১০টায় আসামি আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ, কাজী গৌরব অপু গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক এমপি শাম্মি আহম্মেদের বাসায় যান। তখন তারা হুমকি ধামকি দিয়ে ৫০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার দাবি করেন। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যায়িত করে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করানোর হুমকি দেন এবং টাকা চেয়ে চাপ দিতে থাকেন তারা। একপর্যায়ে শাম্মি আহম্মেদেরদ স্বামী সিদ্দিক আবু জাফর বাধ্য হয়ে তাদের ১০ লাখ টাকা দেন।
পরবর্তীতে ২৬ জুলাই বিকেল সাড়ে ৫টায় আসামি রিয়াদের নেতৃত্বে অন্য আসামিরা বাদীর বাসার সামনে যান। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে গিয়ে পাঁচজনকে আটক করলে পালিয়ে যান অপু। এ ঘটনায় সিদ্দিক আবু জাফর বাদী হয়ে গুলশান থানায় চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা করেন।