মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: সন্দেহভাজন সেই গৃহকর্মী গ্রেপ্তার
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বাসায় মা-মেয়েকে হত্যা মামলার সন্দেহভাজন সেই গৃহকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বরিশালের ঝালকাঠি থেকে তাকে আটক করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার জুয়েল রানা।
তিনি জানান, "বরিশাল থেকে ওই গৃহকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার প্রকৃত নাম আয়েশা। তাকে ঢাকায় আনা হচ্ছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।"
এদিকে, ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক খুদে বার্তায় জানান, রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জোড়াখুনের ঘটনায় জড়িত গৃহকর্মী আয়েশাকে ঝালকাঠি থেকে গ্রেপ্তার করেছে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।
গত সোমবার (৮ ডিসেম্বর) মোহাম্মদপুরের শাহজাহান রোডের ৩২/২/এ নম্বর বাসার সপ্তম তলায় নিজ বাসায় গৃহিনী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তার মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে (১৫) ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে মোছাম্মৎ আয়েশা নামের ওই গৃহকর্মীর বিরুদ্ধে। ওইদিন বেলা পৌনে ১২টার দিকে ওই বাসা থেকে লায়লা আফরোজের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। গুরুতর আহত অবস্থায় নাফিসা বিনতে আজিজকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এই ঘটনায় গৃহকর্মী আয়েশাকে আসামী করে একইদিনে ডিএমপির মোহাম্মদপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহত নাফিসার বাবা আ. জ. ম. আজিজুল ইসলাম। তিনি উত্তরার সানবিমস স্কুলের শিক্ষক।
মামলার এজাহারে আ. জ. ম. আজিজুল ইসলাম বলেন, 'গত ৪ দিন আগে আসামি আমার বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করে। সোমবার সকাল অনুমানিক ৭টার দিকে সময় আমি আমার কর্মস্থল উত্তরায় চলে যাই। আমি আমার কর্মস্থলে উপস্থিত থাকা অবস্থায় আমার স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হই। পরবর্তীতে আমি নিরুপায় হয়ে বেলা অনুমানিক ১১টার দিকে বাসায় ফেরত এসে দেখি, আমার স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছে এবং আমার মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় বাসার মেইন গেটে পড়ে আছে। আমার মেয়ের এই অবস্থা দেখে দ্রুত আমি তাকে উদ্ধার করে পরিছন্নকর্মী মো. আশিক এর মাধ্যমে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করি। আমার মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।'
এজাহারে তিনি আরও বলেন, 'আমি বাসার সিসি ফুটেজ পর্যালোচনায় দেখতে পাই যে, আসামি ওইদিন সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে কাজ করার জন্য বাসায় আসে এবং সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আমার মেয়ের স্কুল ড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যায়। যাওয়ার সময় ১টি মোবাইল, ১টি ল্যাপটপ, স্বর্ণালঙ্কার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যায়।'
