রংপুরে পরিবহন ধর্মঘট: রিকশাচালকদেরও পেটে টান

'বড় লোকেরা প্রতিদিন বসে থাকলে সমস্যা নেই। কিন্তু আমরা একদিন বসে থেকে খাওয়ার উপায় নেই। রিকশা চালিয়ে আয়ের টাকা দিয়ে প্রতিদিনের ভাত জোটে পেটে। কিন্তু বিএনপির সমাবেশে এখন আমাদের পেটে লাথি মারা দশা।'
রংপুর শিল্পকলা একাডেমী এলাকায় কিংবা রংপুরবাসীর কাছে পরিচিত 'টাউন হল' মোড়ে দাঁড়িয়ে কথাগুলো বলেন আব্দুর রহমান। ঢাকায় কয়েক বছর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি শেষে করোনার মধ্যে রংপুরে ফেরেন তিনি। এখন রিকশা চালিয়ে সংসার চালান রহমান।
স্ত্রী-সন্তানসহ পাঁচজনের সংসার তার। সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি। রহমান জানান, 'গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাত থেকে রিকশায় তেমন ভাড়া নেই। খালি রিকশা নিয়ে সারা শহরে ঘুরে বেড়াচ্ছি। বিএনপির সমাবেশে উত্তরবঙ্গের আট জেলায় বাস-ট্রাক বন্ধ। এ কারণে রংপুরে এখন জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ নেই। সাধারণত প্রতিদিন আমাদের ৮০০-৯০০ টাকা ভাড়া হতো। আজ এক দুপুরে ২০০ টাকার ভাড়াও মারতে পারিনি।'
মডার্ন মোড় এলাকায় ভাড়া থাকেন গাইবান্ধার সাজু নামের এক রিকশাচালক। বললেন, 'এর আগে একবার দেশে এমন হয়েছিল ২০১৩-১৪ সালের দিকে। তখন জ্বালাও-পোড়াও চলছিল। ওই সময়ে শহরে বের হতে খুব ভয় পাচ্ছিলাম। এখন গত দু'দিন ধরে রংপুরেও একই অবস্থা। ভয় নিয়ে সড়কে আছি। অথচ সারাদিন রিকশা চালিয়ে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা আয় করা কঠিন হচ্ছে। এই অবস্থা শুধু আমার নয়, গোটা রংপুরজুড়েই।'
তবে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) আবু মারুফ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, 'রাজনৈতিক এই সমাবেশে কোনো সমস্যা নেই। আর কারও কোনো পরিকল্পনা থাকলে আমরা কঠোর হস্তে সেটি দমন করব।'