সড়ক উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের পর পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার

সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানের সঙ্গে বৈঠকের পর আট দফা দাবিতে ডাকা পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছেন পরিবহন মালিকরা। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) থেকে ৭২ ঘণ্টার এই ধর্মঘট শুরু হওয়ার কথা ছিল।
রোববার (১০ আগস্ট) পরিবহন মালিকদের সঙ্গে সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানের সঙ্গে বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা বলেন, আগামী ২ মাসের মধ্যে সড়ক আইনের খসড়া সংশোধন করা হবে। মালিক সমিতির আট দফার ভিত্তিতে আলোচনা হয়েছে। যেসব সমস্যা সমাধান সম্ভব, সেগুলো মেনে নেওয়ার জন্য তাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে।
তিন বলেন, পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনের যৌক্তিক দাবিগুলো সরকার বিবেচনা করবে। যেসব দাবি বাস্তবায়ন সম্ভব, সেগুলো দেখা হবে। সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনের একটি কমিটি আছে, তারা বিষয়টি পর্যালোচনা করবে।
তিনি আরও বলেন, পুরনো যানবাহন সরিয়ে নিতে ছয় মাসের সময় দেয়া হয়েছিল। ফিটনেসবিহীন গাড়িগুলোর ডাম্পিংয়ের জায়গা নেই, তাই যাতে শ্রমিক-মালিকরা ক্ষতিগ্রস্ত না হন, সেভাবেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে বৈঠক শেষে বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের সমন্বয়ক শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস সাংবাদিকদের বলেন, 'সরকারের সব সিদ্ধান্ত আইনানুগভাবে বাস্তবায়ন হবে। অবৈধ বা অচল গাড়ি চলুক, সেটাও আমরা চাই না। তবে সড়ক আইন পুরোপুরি প্রয়োগ করলে একবারে ৮০ শতাংশ গাড়ি সড়ক থেকে উঠে যাবে।'
তিনি আরও বলেন, 'পুরনো গাড়ি বদলে নতুন গাড়ি আনতে কিছু সময় প্রয়োজন, সেই সময় আমাদের দিতে হবে। আমাদের যৌক্তিক দাবিগুলো একাধিক বৈঠকে সরকারকে জানানো হয়েছে এবং সরকার তা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করেছে। এজন্য আমরা ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।'
এর আগে গত ২৭ জুলাই বাংলাদেশ পরিবহন মালিক-শ্রমিক সমন্বয় পরিষদ আট দফা দাবিতে ৭২ ঘণ্টার জন্য সব ধরনের বাণিজ্যিক পরিবহন চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছিল।
পরিবহন খাতের নেতারা যে মূল দাবিগুলো তুলেছেন, তার মধ্যে রয়েছে: চালকদের জামিনসংক্রান্ত সড়ক পরিবহন আইনের ধারাগুলো সংশোধন, বাণিজ্যিক যানবাহনের মেয়াদ ৩০ বছর করা এবং ততদিন পর্যন্ত ডাম্পিং বন্ধ রাখা, বাণিজ্যিক গাড়িতে অগ্রিম আয়কর বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার, ১২ বছর বয়সী রিকন্ডিশনড গাড়ি আমদানির অনুমতি, দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ি ৭২ ঘণ্টার মধ্যে মালিকদের ফেরত দেওয়া, মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ির জন্য স্ক্র্যাপ নীতিমালা তৈরি, মহাসড়কে থ্রি-হুইলার ও অবৈধ হালকা যানবাহনের জন্য আলাদা লেন চালু করা, ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়নের প্রক্রিয়া দ্রুত করা এবং শ্রমিক ফেডারেশনের বিদ্যমান ১২ দফা দাবি বাস্তবায়ন।