জাপানের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিরল খনিজ চুক্তি সই যুক্তরাষ্ট্রের, সম্পর্কের 'সোনালী যুগের' সূচনা করলেন ট্রাম্প-তাকাইচি
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জাপানের নতুন নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি সদ্য দুটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন। তার মধ্যে একটি প্রথম চুক্তির মাধ্যমে জাপান যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক নতুন মাত্রা পেয়েছে। এ চুক্তিকে তাদের সম্পর্কের 'সোনালী যুগ' বলে অভিহিত করছেন দুই নেতা। অপরদিকে দুই দেশের মধ্যে বিরল খনিজ সম্পদ নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি হয়েছে। খবর বিবিসির।
দুই নেতা কিছুক্ষণ আগেই এই চুক্তিগুলোতে স্বাক্ষর করেছেন এবং স্বাক্ষরিত নথি হাতে ছবি তুলেছেন।
প্রথম চুক্তিটি দীর্ঘদিনের মিত্র এই দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা আরও জোরদারের লক্ষ্যে করা হয়েছে। আর দ্বিতীয় চুক্তিটি বিরল খনিজ উপাদানের সরবরাহ নিশ্চিত করতে একটি কাঠামো নির্ধারণ করেছে, যা উভয় দেশের শিল্প ও কৌশলগত স্বার্থের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি গত মঙ্গলবার টোকিওতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রথম বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র-জাপান জোটকে ঘিরে একটি 'নতুন সোনালী যুগ' গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেছেন।
বৈঠকের শুরুতে তাকাইচি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক এখন 'বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী জোটে' পরিণত হয়েছে। তিনি এসময় মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ট্রাম্পের ভূমিকার প্রশংসাও করেন।
জাপান সরকারের এক সূত্র জানায়, তাকাইচি ট্রাম্পকে জানানোর পরিকল্পনা করেছেন যে তিনি তাকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করছেন।
যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের মধ্যে সদ্য স্বাক্ষরিত 'নতুন সোনালী যুগ'-এর চুক্তিতে বলা হয়েছে, এটি এ বছরের শুরুর দিকে দীর্ঘদিনের দুই মিত্রদেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত পূর্ববর্তী চুক্তিগুলোর ওপর ভিত্তি করে গঠিত, যেগুলো কৌশলগত বিনিয়োগ ও যৌথ জাতীয় স্বার্থ নিয়ে ছিল।
এই চুক্তিপত্রে দুই নেতা—ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সানায়ে তাকাইচি—দুই দেশের 'দ্রুত ও ধারাবাহিক প্রচেষ্টায় সন্তোষ' প্রকাশ করেছেন এবং এই 'গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি' বাস্তবায়নে তাদের দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
চুক্তিটি দুই দেশের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা জোরদার, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত এবং বিশ্বব্যাপী সমৃদ্ধি বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
এছাড়া এতে উল্লেখ করা হয়েছে, ট্রাম্প ও তাকাইচি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও সচিবদের নির্দেশ দিয়েছেন যেন তারা ক্রমবর্ধমান যুক্তরাষ্ট্র-জাপান জোটের এই 'নতুন সোনালী যুগ' এগিয়ে নিতে আরও পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের মধ্যে বিরল খনিজ উপাদানের সরবরাহ ও উৎপাদন বাড়াতে একটি নতুন চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি।
এই চুক্তির মাধ্যমে দুই দেশ নীতিমালা, বাণিজ্যিক ব্যবস্থা ও সমন্বিত বিনিয়োগের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উৎপাদনে সহযোগিতা করবে।
ওয়াশিংটন বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ খনিজের সরবরাহের আরও বিকল্প উৎস খুঁজতে কাজ করছে, যাতে চীনের ওপর নির্ভরশীলতা কমানো যায়। চীন বর্তমানে এসব খনিজ প্রক্রিয়াকরণে প্রায় একচেটিয়া আধিপত্য ধরে রেখেছে এবং সম্প্রতি সেগুলোর রপ্তানিতে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে একই ধরনের একাধিক চুক্তি করেছে—যেসব খনিজ উপাদান অধিকাংশ ইলেকট্রনিক্স, বৈদ্যুতিক গাড়ি ও সামরিক সরঞ্জাম উৎপাদনের জন্য অপরিহার্য।
অন্যদিকে, জাপানে বিরল খনিজ উপাদানের পর্যাপ্ত মজুত থাকলেও তার বেশির ভাগই সমুদ্রের তলায় অবস্থিত, যার খনন কঠিন ও ব্যয়বহুল।
