পাকিস্তানে ভারী বর্ষণে একদিনেই নিহত ৬৩, মোট প্রাণহানি ১৫৯

পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে ভারী মৌসুমি বৃষ্টিপাতে গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৬৩ জন নিহত এবং প্রায় ৩০০ জন আহত হয়েছেন।
দেশটির প্রাদেশিক কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন। জুনের শেষ দিক থেকে শুরু হওয়া প্রবল বৃষ্টিপাতে দেশজুড়ে এখন পর্যন্ত মোট মৃত্যু বেড়ে দাঁড়িয়েছে অন্তত ১৫৯ জনে।
বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন অঞ্চলে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে এবং বহু ভবন ধসে পড়েছে।
অধিকাংশ প্রাণহানিই ঘটেছে ঘরের ছাদ ধসে পড়ায়। রাজধানী লাহোরে ১৫ জন, ফয়সালাবাদে ৯ জন এবং ওকারা, সাহিওয়াল ও পাকপত্তনসহ আশপাশের কৃষিপ্রধান শহরগুলোতে আরও কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে।
পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলে নদীপাড়ের গ্রামগুলো থেকে বৃহস্পতিবার সকালে নৌকা ব্যবহার করে বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়। তবে দুপুরের দিকে পানির উচ্চতা কিছুটা কমতে শুরু করে।
লাধিয়ান গ্রামের ৫১ বছর বয়সী কৃষক তারিক মেহবুব ভট্টি বলেন, 'শিশুরা সাহায্যের জন্য চিৎকার করছিল, আর নারীরা ছাদের ওপর দাঁড়িয়ে ওড়না নাড়িয়ে সাহায্য চাচ্ছিলেন।'
রাওয়ালপিন্ডি শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নাল্লা লাই নদীর পানি হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় নিচু এলাকায় বসবাসকারী বাসিন্দাদের জরুরি ভিত্তিতে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার একজন মুখপাত্র জানান, 'উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রাখতে আমাদের দল প্রস্তুত রয়েছে।'
এদিকে পরিস্থিতি বিবেচনায় রাওয়ালপিন্ডি প্রশাসন বৃহস্পতিবার সকল সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে জনসাধারণকে ঘরে থাকার নির্দেশ দিয়েছে।
পাকিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এনডিএমএ) জানিয়েছে, ২৫ জুন থেকে শুরু হওয়া মৌসুমি বৃষ্টিতে দেশজুড়ে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৫৯ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এক হাজারের বেশি ঘরবাড়ি।
পাকিস্তান আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, উত্তরের মাংগলা শহরের জেলাম নদীতে পানির প্রবাহ বিপজ্জনকভাবে বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় সেখানে উচ্চমাত্রার বন্যা সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আশপাশের ছোট ছোট নদী ও খালও প্লাবিত হতে পারে এবং আগামী ২৪ ঘণ্টায় পার্শ্ববর্তী জনপদগুলোর ওপর ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
মৌসুমি বৃষ্টি দক্ষিণ এশিয়ার আবহাওয়ার একটি স্বাভাবিক অংশ এবং কৃষিকাজ ও পানির মজুত পূরণে তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দ্রুত নগরায়ণ, দুর্বল ড্রেনেজ ব্যবস্থা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এসব বৃষ্টিপাতে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে গেছে।