ব্যাংক একীভূতকরণ অধ্যাদেশের কয়েকটি বিধান কেন অসাংবিধানিক নয়, জানতে চেয়ে হাইকোর্টের রুল
ব্যাংক একীভূতকরণ সংক্রান্ত 'ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ-২০২৫'-এর কয়েকটি বিধান কেন বেআইনি ও সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
পাঁচটি ব্যাংকের কয়েকজন সেকেন্ডারি শেয়ারহোল্ডারের করা এক রিট আবেদনের ওপর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মো. হাবিবুল গনি ও বিচারপতি এসকে তাহসিন আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রুল জারি করেন।
ব্যাংকগুলো হলো—সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংক।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম ও ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার আরশাদুর রউফ।
রিট আবেদনকারীরা হলেন—মো. শাহ আলম বাবু, মো. আফসার উদ্দিন সরকার, মো. সিদ্দিকুর রহমান (লিটন), মো. মুস্তাইন বিল্লাহ, মার্ক লয়েড গোমেজ, মো. আব্দুল কাদের সরকার এবং এম এ সাইদুর রহমান।
পরে ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান, ব্যাংক রেজোলিউশন অধ্যাদেশ-২০২৫-এর ১৬(এম), ২৮(৬), ২৮(৭) এবং ৩০, ৩১, ৩৩, ৩৪, ৩৬, ৪৮, ৪৯, ৫০ ও ৫১ ধারা কেন সংবিধানের ২৭, ৩১, ৪০ ও ৪২ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না—রুলে আদালত তা জানতে চেয়েছেন।
আইন সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ সংশ্লিষ্টদের চার সপ্তাহের মধ্যে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, দুর্বল পাঁচ ব্যাংককে একীভূত করার উদ্যোগের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক সপ্তাহব্যাপী শুনানির আয়োজন করেছে। আর একীভূত করে গঠিত হতে যাওয়া 'ব্রিজ ব্যাংক'-এর পক্ষে এখন পর্যন্ত সমর্থন জানিয়েছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংক।
এক্সিম ব্যাংক এই প্রক্রিয়ায় এখনই অংশ নিতে রাজি হয়নি। ব্যাংকটির পর্ষদ জানিয়েছে, অন্তত দুই বছর সময় প্রয়োজন তাদের।
অন্যদিকে সম্ভাব্য একীভূতকরণ নিয়ে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডে (এসআইবিএল) ভেতরে ভিন্নমত দেখা দিয়েছে।
ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিকুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে পরিচালক মেজর (অব.) ড. মো. রেজাউল হক এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে বলেন, বর্তমান অবস্থায় এসআইবিএলের একীভূতকরণের কোনো যৌক্তিকতা নেই।
শুনানিতে চেয়ারম্যানরা তাদের ব্যাংকের আর্থিক পরিস্থিতি তুলে ধরেন। জানা যায়, একীভূত প্রক্রিয়ায় থাকা পাঁচ ব্যাংকের সম্মিলিত মূলধন ঘাটতি ও খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছাড়িয়েছে ২ লাখ ৮৬ হাজার কোটি টাকা। ব্যাংকগুলোকে একীভূত করতে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠনের পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সরকারের সম্মতি পেলে এতে অর্থায়ন করবে বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান।
