একীভূত হওয়ার সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপর ছেড়ে দিলেন এসআইবিএল চেয়ারম্যান, আপত্তি পরিচালকের

বাংলাদেশ ব্যাংকের পুনর্গঠন পরিকল্পনার আওতায় সম্ভাব্য একীভূত করা নিয়ে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডে (এসআইবিএল) ভেতরে ভিন্নমত দেখা দিয়েছে।
ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিকুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে পরিচালক মেজর (অব.) ড. মো. রেজাউল হক এই প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়ে বলেন, বর্তমান অবস্থায় এসআইবিএলকে একীভূত করার কোনো যৌক্তিকতা নেই।
আজ বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর), গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকসহ আরও চারটি ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গে পূর্বের আলোচনার ধারাবাহিকতায় এসআইবিএলের সঙ্গে একটি প্রাথমিক বৈঠক করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বৈঠকে ব্যাংকটির প্রতিনিধিরা একীভূত করার বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যেকোনো সিদ্ধান্তের সঙ্গে নীতিগতভাবে একমত থাকার কথা জানান।
বৈঠকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একাধিক ডেপুটি গভর্নর সরাসরি উপস্থিত ছিলেন এবং গভর্নর আহসান এইচ মনসুর অনলাইনে যুক্ত হন।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে চেয়ারম্যান সাদিকুল ইসলাম বলেন, 'আজকের বৈঠকে সরাসরি একীভূত করা নিয়ে আলোচনা হয়নি। আমরা আমাদের আর্থিক অবস্থা উপস্থাপন করেছি এবং বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের আর্থিক স্থিতিশীলতা সংক্রান্ত প্রতিবেদন আমাদের সঙ্গে শেয়ার করেছে। নীতিগতভাবে আমরা একমত, তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বাংলাদেশ ব্যাংক।'
তবে পরিচালক রেজাউল হক এক লিখিত বিবৃতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানান, উদ্যোক্তা শেয়ারহোল্ডারদের জন্য সুদমুক্ত তারল্য সহায়তা দিলে এসআইবিএল একীভূত করা ছাড়াই পুনরুদ্ধার সম্ভব।
একীভূত করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'আমাদের ব্যাংক কোনো খারাপ অবস্থায় নেই। তাহলে কেন একীভূত হব? আমার সময়ে, অর্থাৎ ২০১২ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে আমরা ২০ শতাংশ পর্যন্ত নগদ লভ্যাংশ দিয়েছি। পাশাপাশি দেশব্যাপী সিএসআর কার্যক্রমও পরিচালিত হয়েছে। আমি চেয়ারম্যানকে অনুরোধ করছি—একীভূত করার বিষয়ে সম্মতি না দিতে।'
বড় অংকের ঋণ সংক্রান্ত উদ্বেগ প্রসঙ্গে চেয়ারম্যান সাদিকুল ইসলাম স্বীকার করেন, 'এস আলম গ্রুপ এসআইবিএল থেকে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। তবে তিনি দাবি করেন, ব্যাংকটির জন্য এই ঋণ এখনও ব্যবস্থাপনার আওতায় আছে।'
তিনি বলেন, 'এই ঋণের বিপরীতে আমাদের প্রায় ৩৫ শতাংশ জামানত রয়েছে, যা অনেক ব্যাংকের তুলনায় শক্ত অবস্থান। আমাদের মোট খেলাপি ঋণের প্রায় ৬০ শতাংশই কিছু নিয়ন্ত্রক সহায়তা পেলে পুনঃতফসিলযোগ্য।'
তিনি আরও স্বীকার করেন, 'এস আলম গ্রুপের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কিছু লুকানো দায় পরে প্রকাশ পেয়েছিল, যা ব্যাংকের ওপর চাপ তৈরি করেছে। 'এগুলো এমন ধরনের চ্যালেঞ্জ, যেগুলো সমাধানে সময় লাগে। তবে আমরা বাংলাদেশ ব্যাংককে আমাদের বাস্তব পরিস্থিতি বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করেছি।'
অর্থ মন্ত্রণালয়ে একীভূত করা স্থগিতের অনুরোধ জানিয়ে পাঠানো একটি চিঠি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান বলেন, 'এটি কোনো আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নয়, বরং একজন ব্যক্তির ব্যক্তিগত আবেদন।'