ইউক্রেন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি করতে প্রস্তুত রাশিয়া: রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী

রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সিবিএস নিউজ-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ইউক্রেন সংঘাতের অবসান ঘটাতে একটি চুক্তি চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে মস্কো ও ওয়াশিংটন 'সঠিক পথে অগ্রসর হচ্ছে'।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কিয়েভের ওপর চাপ বাড়িয়েছেন যাতে তারা সংঘাত সমাধানে ওয়াশিংটনের 'চূড়ান্ত প্রস্তাব' মেনে নেয়। যদিও সেই প্রস্তাবের বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়নি। ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) আবারও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলে জানা গেছে।
ফেস দ্য নেশন অনুষ্ঠানে লাভরভ বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট মনে করেন— এবং আমার ধারণা, তিনি যথার্থই মনে করেন— আমরা সঠিক দিকেই এগোচ্ছি। প্রেসিডেন্টের বিবৃতিতে একটি চুক্তির কথা বলা হয়েছে, এবং আমরা তা মেনে নিতে প্রস্তুত। তবে এখনও কিছু বিষয় সূক্ষ্মভাবে নির্ধারণ করতে হবে, এবং আমরা সেই কাজেই ব্যস্ত।'
তিনি আরও জানান, গোপনীয়তার কারণে প্রস্তাবিত চুক্তির বিষয়বস্তু নিয়ে বিস্তারিত বলা তার পক্ষে সম্ভব নয়। 'যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বিষয়গুলো প্রকাশ করেননি, তাই আমার পক্ষ থেকেও তা বলা ঠিক হবে না,' বলেন লাভরভ।
ট্রাম্প অভিযোগ করেছেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি আলোচনার ক্ষতি করছেন। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, জেলেনস্কি তার পুরো দেশ হারাতে পারেন, কারণ কিয়েভ কখনোই ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে স্বীকার করবে না বলে জানিয়েছেন জেলেনস্কি। হোয়াইট হাউজও জেলেনস্কির বিরুদ্ধে 'মেগাফোন কূটনীতি'র অভিযোগ এনেছে, কারণ তিনি প্রকাশ্যে মার্কিন শান্তি প্রস্তাবের অন্যতম মূল শর্ত প্রত্যাখ্যান করেছেন।
মস্কো বহু আগে থেকেই আলোচনার পক্ষপাতী বলে জানিয়ে আসছে। তবে রুশ কর্মকর্তারা বারবার বলেছেন, দীর্ঘস্থায়ী শান্তিচুক্তির জন্য ইউক্রেনের নিরপেক্ষ অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে এবং বাস্তব পরিস্থিতি অনুযায়ী ভূখণ্ডের স্বীকৃতি দিতে হবে। ন্যাটোর সেনা ও অবকাঠামো ইউক্রেনে নিষিদ্ধ করাও রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা দাবি।
লাভরভ বলেন, 'সম্ভবত ট্রাম্পই একমাত্র বিশ্বনেতা, যিনি এই সংকটের মূল কারণগুলো সমাধানের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করেছেন।' তিনি এটিকে 'আমরা সঠিক পথে এগোচ্ছি'— এমন একটি লক্ষণ হিসেবে দেখেন।
ট্রাম্প ও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও দুজনেই ইঙ্গিত দিয়েছেন, দ্রুত অগ্রগতি না হলে যুক্তরাষ্ট্র শান্তি আলোচনার মধ্যস্থতা থেকে সরে যেতে পারে এবং অন্য বৈশ্বিক 'অগ্রাধিকার'-এর দিকে মনোযোগ দিতে পারে।
বিল্ড পত্রিকার তথ্য অনুযায়ী, এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা বন্ধ হয়ে যেতে পারে ধরে নিয়ে কিয়েভ 'সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি'র জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।