রাশিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার কথা ‘ভাবছে’ যুক্তরাষ্ট্র: ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, ইউক্রেন সংকট সমাধানের পদক্ষেপ হিসেবে কৃষ্ণসাগর শস্য চুক্তি এগিয়ে নিতে মস্কোর ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার কথা ভাবছে ওয়াশিংটন।
মঙ্গলবার ক্রেমলিন ও হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, কৃষি ও সার রপ্তানির বৈশ্বিক বাজারে রাশিয়াকে প্রবেশের সুযোগ দিতে ইচ্ছুক যুক্তরাষ্ট্র। এ ধরনের পদক্ষেপের ফলে সামুদ্রিক বিমার মূল্যহ্রাসের পাশাপাশি এসংক্রান্ত বাণিজ্যের জন্য বন্দর ব্যবহারের সুযোগবৃদ্ধি এবং মূল্য পরিশোধব্যবস্থার সুযোগ বাড়বে মস্কোর।
পরবর্তীতে মস্কো আরও জানায়, চুক্তির আওতায় আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্য ও সার বিপণনে যুক্ত রুশ কৃষি ব্যাংকসহ অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবে। এছাড়া রুশ নৌযান ও বন্দর পরিষেবার ওপর থেকে অবরোধ তুলে নেওয়ার পাশাপাশি কৃষি যন্ত্রাংশ ক্রয় এবং এ-সম্পর্কিত পণ্য ক্রয়ের ওপর থেকে বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হবে।
অবশ্য এ নিয়ে হোয়াইট হাউস বিস্তারিত কিছু জানায়নি। তবে ট্রাম্প প্রশাসন নিশ্চিত করেছে, মস্কোর ওপর থেকে বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার কথা বিবেচনায় রয়েছে।
মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের উদ্দেশে ট্রাম্প বলেন, আমরা এখন তাদের [রাশিয়া ও ইউক্রেন] সবার কথা ভাবছি। পাঁচ-ছয়টি শর্ত দেওয়া হয়েছে তাদেরকে। আমরা তাদের সবার দিকে তাকিয়ে আছি [সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছি]।
এদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি ওয়াশিংটনের তীব্র সমালোচনা করে অভিযোগ করেন, নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নিয়ে কিয়েভকে যথাযথভাবে ব্রিফ না করেই রুশ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
তিনি বলেন, 'যৌথ দলিল থাকবে বলেই আমরা রাজি হইনি। আমরা বিশ্বাস করি এটি অবস্থানের দুর্বলতা এবং নিষেধাজ্ঞার দুর্বলতা।'
সোমবার সৌদি আরবে ইউক্রেন সংঘাত নিয়ে ১২ ঘণ্টার আলোচনার পর যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া বিলুপ্ত কৃষ্ণসাগর শস্য চুক্তি কার্যকর করতে সম্মত হয়েছে।
মূলত ২০২২ সালের জুলাইয়ে জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় হওয়া এই চুক্তিতে রাশিয়ার শস্য ও সার রপ্তানির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিনিময়ে নিরাপদে ইউক্রেনের কৃষিপণ্য রপ্তানির সুযোগের কথা বলা হয়েছিল।
তবে পশ্চিমারা তাদের বাধ্যবাধকতা পূর্ণ করতে ব্যর্থ হয়েছে দাবি করে মস্কো শেষ পর্যন্ত চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে অস্বীকৃতি জানায়।
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, এখন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে লৌহকঠিন গ্যারান্টি প্রয়োজন রাশিয়ার। ওয়াশিংটনের 'সরাসরি আদেশ' কিয়েভকে কোনো চুক্তি মেনে চলতে বাধ্য করতে পারে।