মোগ্যাম্বো, গব্বর থেকে খিলজি: বলিউডের যে ৮ খলনায়ক ভয়কে পরিণত করেছিলেন তারকাখ্যাতিতে
বলিউড বরাবরই তার খলনায়কদের ভালোবেসেছে। তাদের চরিত্রগুলো শক্তিশালী, জটিল, বহুমাত্রিক এবং অনেক ক্ষেত্রে অবিস্মরণীয়। আশির দশকের নাটকীয় পাগলামি থেকে শুরু করে আধুনিক সময়ের মনস্তাত্ত্বিক অন্ধকার— প্রতিটি যুগে উঠে এসেছে এমন সব খলনায়ক, যারা পর্দায় 'অসুর' চরিত্রের ধারণাই বদলে দিয়েছেন।
নিচে তুলে ধরা হলো সেইসব অভিনেতাদের, যারা অন্ধকারকে রূপ দিয়েছেন রুপালি জাদুতে।
১. অমরিশ পুরি—মোগ্যাম্বো (মিস্টার ইন্ডিয়া, ১৯৮৭)
অমরিশ পুরি 'মিস্টার ইন্ডিয়া'তে 'মোগ্যাম্বো' চরিত্রে অভিনয় করে বলিউডে ভয়ের প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন। 'মোগ্যাম্বো খুশ হুয়া' সংলাপটি আজও দর্শকের মুখে মুখে। সোনালি পোশাক, অট্টহাসি ও কঠোর দৃষ্টি-সবমিলিয়ে তিনি মোগ্যাম্বোকে পরিণত করেছিলেন ক্ষমতা ও ভয়ের প্রতীকে।
২. আমজাদ খান—গব্বর সিং (শোলে, ১৯৭৫)
আমজাদ খান 'শোলে' সিনেমায় 'গব্বর সিং' চরিত্রের মধ্যে দিয়ে খলনায়কত্বের সংজ্ঞা বদলে দেন। 'কিতনে আদমি থে?' সংলাপে আজও কাঁপে দর্শক। তার নিষ্ঠুর হাসি ও কৌতুকমিশ্রিত খলচরিত্র গব্বরকে করে তুলেছিল কালজয়ী।
৩. আশুতোষ রানা—গোকুল পণ্ডিত (দুশমন, ১৯৯৮)
'দুশমন' সিনেমায় আশুতোষ রানার 'গোকুল পণ্ডিত' চরিত্রটি হিন্দি সিনেমার ইতিহাসে অন্যতম ভয় ধরানো অভিনয় হিসেবে স্মরণীয়। তার খলনায়কত্ব ছিল না উচ্চকণ্ঠ বা বাড়াবাড়ি ধরনের, তা ছিল বাস্তব ও গা-ছমছমে। শুধু চোখ ও কণ্ঠস্বর দিয়ে তিনি প্রমাণ করেছিলেন, আসল ভয় কখনও জানান দিয়ে আসে না।
৪. নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকী—রামান্না (রমন রাঘব ২.০, ২০১৬)
'রমন রাঘব ২.০' সিনেমায় বাস্তব এক খুনির অনুপ্রেরণায় তৈরি 'রামান্না' চরিত্রে নওয়াজউদ্দিন নীরব পাগলামিকে পরিণত করেছিলেন শিল্পে। তার শান্ত মুখ, অনিশ্চিত কণ্ঠস্বর ও অদ্ভুত রসবোধ রামান্নাকে করে তুলেছিল ভয়ঙ্কর অথচ মানবিক।
৫. সঞ্জয় দত্ত—কাঞ্চা চীনা (অগ্নিপথ, ২০১২)
'অগ্নিপথ' সিনেমায় সঞ্জয় দত্তের 'কাঞ্চা চীনা' চরিত্রটি ছিল একই সঙ্গে ভয়ংকর ও মোহময়। এতে তার ভয়াল হাসি ও শক্তিশালী পর্দা উপস্থিতি তাকে দশকের অন্যতম স্মরণীয় খলনায়কে পরিণত করেছিল।
৬. সাইফ আলি খান—ল্যাংড়া ত্যাগী (ওমকারা, ২০০৬)
উইলিয়াম শেকসপিয়রের 'ওথেলো' নাটক অবলম্বনে বিশাল ভরদ্বাজের নির্মিত 'ওমকারা' সিনেমায় সাইফ আলি খানের 'ল্যাংড়া ত্যাগী' চরিত্রটি সবাইকে চমকে দিয়েছিল। তার রুক্ষ উপভাষা, ধূর্ততা ও প্রতিশোধপ্রবণ মনোভাব তাকে অভিনেতা ও খলনায়ক হিসেবে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করেছিল।
৭. রণবীর সিং—আলাউদ্দিন খিলজি (পদ্মাবত, ২০১৮)
'পদ্মাবত' সিনেমায় ক্ষমতালোভী আলাউদ্দিন খিলজির ভূমিকায় রণবীরের অভিনয় ছিল অনবদ্য। শক্তিমান অভিনয়, অপ্রত্যাশিত আচরণ ও ভয়াল আবেগে তিনি নিষ্ঠুরতাকেও শিল্পে পরিণত করেছিলেন। খিলজি কেবল খলনায়ক ছিলেন না, তিনি ছিলেন মূর্তিমান বিশৃঙ্খলা।
৮. প্রকাশ রাজ—জয়কান্ত শিকরে (সিংঘাম, ২০১১)
'সিংঘাম' সিনেমায় চতুরতা, দাম্ভিকতা ও নিপূণ অভিনয়ে প্রকাশ রাজ 'জয়কান্ত শিকরে'কে করে তুলেছিলেন অবিস্মরণীয়। তিনি চিৎকার না করে হাসির মাধ্যমে ভয় দেখাতেন। তার সহজাত আত্মবিশ্বাস চরিত্রটিকে করে তুলেছিল স্মরণীয়।
৯. শাহরুখ খান—রাহুল মেহরা (ডর, ১৯৯৩)
'ডর' সিনেমায় 'রোমান্স কিং' শাহরুখ খানের 'রাহুল' চরিত্রটি প্রেম ও উন্মাদের মিশ্রণে দর্শককে একসঙ্গে ভয় ও সহানুভূতি অনুভব করিয়েছিল। এই ছবিই বলিউডে 'অ্যান্টি-হিরো' চরিত্রকে নতুন পরিচয় দেয়।
১০. রিতেশ দেশমুখ—রাকেশ মহাদকর (এক ভিলেন, ২০১৪)
'এক ভিলেন' সিনেমায় কমেডি চরিত্র থেকে বেরিয়ে রিতেশ অভিনীত খলচরিত্র 'রাকেশ মহাদকর' দর্শককে চমকে দিয়েছিল। সাধারণ এক মানুষের ভেতরের তিক্ততা ও নীরব ক্রোধের বহিঃপ্রকাশে তার সংযত অভিনয় ভিলেন চরিত্রে এনে দিয়েছিল বাস্তবতার ছোঁয়া।
