২০২৪ সালে রাজনৈতিক দলের আয়ে শীর্ষে জামায়াত; বিএনপির তুলনায় দ্বিগুণ, জাতীয় পার্টির ১১ গুণ

২০২৪ সালের আয়-ব্যয়ের হিসাব নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জমা দিয়েছে দেশের ২৮টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল। এর মধ্যে বিএনপিসহ সব দলকে ছাড়িয়ে আয়ে শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
ইসিতে জমা দেওয়া অডিট রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৪ সালে জামায়াতের আয় হয়েছে ২৮ কোটি ৯৭ লাখ ২৯৯ টাকা, ব্যয় ২৩ কোটি ৭৩ লাখ ৩৮ হাজার ১৭৭ টাকা। বিএনপি আয় দেখিয়েছে ১৫ কোটি ৬৫ লাখ ৯৪ হাজার ৮৪২ টাকা, ব্যয় ৪ কোটি ৮০ লাখ ৪ হাজার ৮২০ টাকা। জাতীয় পার্টির আয় ২ কোটি ৬৪ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৮ টাকা, ব্যয় ১ কোটি ৭৯ লাখ ৮৮ হাজার ৪৪ টাকা।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার স্বাক্ষরিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালের শুরুতে দলটির প্রারম্ভিক স্থিতি ছিল ১০ কোটি ৪৯ লাখ ৪৫ হাজার ১০১ টাকা। আয় এসেছে কর্মী ও সদস্যদের চাঁদা থেকে ১৬ কোটি ৫৬ লাখ ৪২ হাজার ১৬২ টাকা, কার্যনির্বাহী কমিটি ও উপদেষ্টা পরিষদের চাঁদা থেকে ৩৭ লাখ ৮৭ হাজার ১৪৯ টাকা, বিভিন্ন ব্যক্তি বা সংস্থার অনুদান থেকে ১১ কোটি ৮৬ লাখ ৩৮ হাজার ৬১৯ টাকা, দলের পত্রিকা-বই বিক্রি থেকে ৯ লাখ ১১ হাজার ২৯০ টাকা এবং অন্যান্য চাঁদা থেকে ৭ লাখ ২১ হাজার ৭৯ টাকা।
ব্যয়ের মধ্যে রয়েছে কর্মীদের বেতন-ভাতা ও বোনাস ৬ কোটি ৫৭ লাখ ৬৭ হাজার ৮৭৩ টাকা, আবাসন ও প্রশাসনিক খরচ ২ কোটি ৬৮ লাখ ৭ হাজার ৪৯৫ টাকা, ইউটিলিটি বিল ২ লাখ ৪৬ হাজার ১৮ টাকা, ডাক-টেলিফোন-ইন্টারনেট ও পত্রিকা খরচ ৮ লাখ ৪৪ হাজার ৫২৬ টাকা, আপ্যায়ন ১০ লাখ ৯৫ হাজার ৯৬২ টাকা, প্রচারণা ও পরিবহন ২ কোটি ৭০ লাখ ৬ হাজার ৫৬৩ টাকা, যাতায়াত ১ কোটি ২৭ লাখ ১ হাজার ৭৭৬ টাকা, জনসভা-পথসভা-ঘরোয়া বৈঠক ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৫ টাকা, প্রার্থীদের অনুদান ১১ কোটি ৫ লাখ ১৫ হাজার ৪২০ টাকা, ধর্মীয় বিশেষ অনুষ্ঠান ৩২ লাখ ৭৬ হাজার ৮৫০ টাকা এবং অন্যান্য খরচ ১ কোটি ১২ লাখ ৫৬ হাজার ৯৮৯ টাকা।
এক যুগ পর নিবন্ধন ফিরে পাওয়া জামায়াত ২০২৪ সালে আয় ও ব্যয়ের হিসাবে সব দলকে ছাড়িয়ে গেছে। ২০১৩ সালে নিবন্ধন বাতিলের আগে সর্বশেষ আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দিয়েছিল দলটি।
অন্যদিকে, বিএনপির আয়-ব্যয়ের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৪ সালে দলের আয় ১৫ কোটি ৬৫ লাখ ৯৪ হাজার ৮৪২ টাকা এবং ব্যয় ৪ কোটি ৮০ লাখ ৪ হাজার ৮২০ টাকা। উদ্বৃত্ত ১০ কোটি ৮৫ লাখ ৯০ হাজার ১৯ টাকা ব্যাংকে জমা রয়েছে। বিএনপির আয়ের উৎসের মধ্যে ছিল জাতীয় নির্বাহী কমিটির চাঁদা, বইপুস্তক বিক্রি, ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের অনুদান ও ব্যাংক সুদ। ব্যয়ের খাতে ছিল আর্থিক অনুদান, ত্রাণ বিতরণ, পোস্টার-লিফলেট ছাপানো, সভার হল ভাড়া, দাপ্তরিক ক্রোড়পত্র ছাপানো, ইফতার মাহফিলসহ বিভিন্ন অফিস খরচ।
ইসির তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৫১টি হলেও আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত থাকায় ৫০টি দলকে চিঠি পাঠানো হয়। এর মধ্যে ২৯টি দল নির্ধারিত সময়ে হিসাব দিয়েছে, ১০টি দল সময় বাড়ানোর আবেদন করেছে এবং ১১টি দল সময়মতো প্রতিবেদন জমা দেয়নি। আইন অনুযায়ী, পরপর তিন বছর আয়-ব্যয়ের হিসাব না দিলে দলের নিবন্ধন বাতিল হবে।