চার দফা দাবিতে ২০ জুলাই চট্টগ্রামে পরিবহণ মালিক-শ্রমিকদের ২৪ ঘণ্টা ধর্মঘটের ডাক

চট্টগ্রামে পরিবহণ মালিক ও শ্রমিকরা ২০ জুলাই ২৪ ঘণ্টার ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছেন। তাদের চারটি প্রধান দাবির মধ্যে রয়েছে বাণিজ্যিক যানবাহনের সর্বোচ্চ কার্যকাল নির্ধারণের সরকারি সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার।
গতকাল (১২ জুলাই) চট্টগ্রাম নগরীর কদমতলী আন্তঃজেলা পরিবহণ মালিক সমিতির কার্যালয়ে চট্টগ্রাম পাবলিক অ্যান্ড গুডস ট্রান্সপোর্ট ওনার্স ফেডারেশনের এক জরুরি সভা শেষে এ ঘোষণা দেওয়া হয় বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
নেতারা জানান, সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয় গত ১৯ জুন সড়ক পরিবহণ আইন ২০১৮-এর ৩৬ ধারার আওতায় একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এতে বাস ও মিনিবাসের অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল সর্বোচ্চ ২০ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে এবং পণ্যবাহী যানবাহনের জন্য আলাদা সময়সীমা ঠিক করা হয়েছে।
পরিবহণ মালিকদের দাবি, এই নির্দেশনা কার্যকর হলে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বাঁশখালী, আনোয়ারা ও রাউজানসহ আশেপাশের এলাকায় প্রায় ৮,০০০ যানবাহন অচল হয়ে যাবে।
তাদের বক্তব্য, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট, যন্ত্রাংশের দাম বৃদ্ধি এবং অসম করের বোঝার কারণে অনেক পরিবহণ মালিকই পুরোনো যানবাহনের পরিবর্তে নতুন গাড়ি কেনার আর্থিক সক্ষমতা রাখেন না।
তারা সতর্ক করে বলেছেন, সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে কোনো আলোচনা ছাড়া যানবাহনের আয়ুষ্কাল সীমাবদ্ধ করার নিয়ম জোর করে প্রয়োগ করা হলে পরিবহণ খাত চরম সংকটে পড়বে।
নেতারা আরও জানান, ৩০ জুন এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ছয়টি দাবি উপস্থাপন করা হলেও এখন পর্যন্ত কোনো অগ্রগতি হয়নি।
এর প্রেক্ষিতে ফেডারেশন এবার চারটি জরুরি দাবি উত্থাপন করেছে এবং ২০ জুলাই সকাল ৬টা থেকে ২৪ ঘণ্টার ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে।
দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে বাণিজ্যিক যানবাহনের আয়ুষ্কাল নির্ধারণের সিদ্ধান্ত বাতিল করা এবং পরিবহণ খাতের অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে নতুনভাবে তা নির্ধারণ করা।
তারা আরও দাবি করেছেন, সড়ক পরিবহণ আইন ২০১৮ সংশোধন করে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতি, বাস-ট্রাক মালিক সমিতি এবং ফেডারেশনের প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
এর পাশাপাশি, পূর্বে আরোপিত আনুমানিক আয়কর প্রত্যাহারের দাবিও তাদের অন্যতম প্রধান দাবি।
নেতারা বলেছেন, 'ম্যানেজমেন্ট'-এর নামে বেসরকারি কোম্পানির হাতে পরিবহণ খাতের নিয়ন্ত্রণ তুলে দেওয়ার যেকোনো উদ্যোগের তারা বিরোধিতা করেন। তাদের মতে, কোনো একক সংস্থা বা কোম্পানিকে পরিবহণ মালিক-শ্রমিকদের নিয়ন্ত্রণের সুযোগ দেওয়া যাবে না।
তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, যদি তাদের দাবিগুলো উপেক্ষা করা হয়, তাহলে চট্টগ্রাম ও আশেপাশের জেলাগুলোতে পরিবহণ চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যাবে এবং এর দায় সরকারকেই নিতে হবে।
সভায় জ্যেষ্ঠ পরিবহণ নেতা ও শ্রমিক প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।