চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে ধর্মঘট, ঈদের আগে ৯০% ছাড় কার্যক্রম বন্ধ

কাস্টমস কর্মকর্তারা টানা দ্বিতীয় দিনের মতো পূর্ণদিবস ধর্মঘটে অংশ নেওয়ায় চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে ছাড় কার্যক্রম প্রায় পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। রোববার (২৫ মে) সকাল ৯টায় ধর্মঘট শুরু হয়েছে এবং তা বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলার কথা।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্ত করার সরকারের প্রস্তাবিত পরিকল্পনার প্রতিবাদে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ এই ধর্মঘটের আয়োজন করেছে। গতকাল শনিবারও একইভাবে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করা হয়।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের মুখপাত্র ও উপকমিশনার সাইদুল ইসলাম চলমান ধর্মঘটের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কাস্টমস এজেন্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৯০ শতাংশ ছাড় ও মূল্যায়ন কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। এর ফলে আমদানিকৃত পণ্য বন্দরে জমে রয়েছে এবং ঈদ সামনে রেখে পণ্য ডেলিভারি কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
চট্টগ্রাম কাস্টমস এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক মহাসচিব কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে (টিবিএস)- জানান, 'সাধারণত প্রতিদিন ১,২০০ থেকে ২,৫০০টি কনসাইনমেন্ট চট্টগ্রাম কাস্টমসে মূল্যায়ন করা হয়। এর মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ একই দিনে ছাড় হয়ে যায়। কিন্তু চলমান ধর্মঘটের কারণে আমদানি করা পণ্যের কাস্টমস ছাড় পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।'
তিনি বলেন, 'আমরা আমদানিকারকদের কাছে ঈদের আগে পণ্য সরবরাহ করতে পারছি না, ফলে বাজারে সরবরাহব্যবস্থায় বড় ধরনের বিঘ্ন ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।'

তিনি আরও জানান, বর্তমানে প্রায় ২,৮০০টি সিএন্ডএফ (ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং) এজেন্ট রয়েছে, যার মধ্যে সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন প্রায় ১,২০০ জন। এসব এজেন্টের অধীনে প্রায় ১০,০০০ শ্রমিক ও কর্মচারী কাজ করেন।
বিলু বলেন, 'কার্যক্রম বন্ধ থাকায় শুধু বাণিজ্যই অচল হয়ে পড়েনি, সিএন্ডএফ এজেন্টরাও তাদের কর্মীদের বেতন দিতে হিমশিম খাচ্ছেন।'
চলমান অচলাবস্থা নিয়ে ব্যবসায়ী মহল গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং সরকার ও রাজস্ব কর্মকর্তাদের মধ্যে বিরোধের একটি যৌক্তিক ও দ্রুত সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে।
ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা, অচলাবস্থা দীর্ঘস্থায়ী হলে বাজারে পণ্যের ঘাটতি এবং ভোক্তাদের জন্য ব্যয়বৃদ্ধি অনিবার্য হয়ে উঠবে।
এর আগেও কাস্টমস কর্মকর্তাদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা গেছে। গত ১৩ মে থেকে ১৯ মে পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ধর্মঘট পালিত হয়, যার ফলে বন্দরে জটিলতা ও পণ্যজট সৃষ্টি হয়।
সাধারণভাবে চট্টগ্রাম বন্দর প্রতিদিন প্রায় ৩৫ হাজার টি ইইউ (টোয়েন্টি ফুট ইকুইভ্যালেন্ট ইউনিট) সামাল দেয়। কিন্তু চলমান অচলাবস্থার কারণে কনটেইনার জট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪১ হাজার ৩১৪ টি ইইউ-তে।