‘প্রশ্ন করার জন্য সাংবাদিকদের চাকরি যায়, বিচার দেব কোথায়’: মতিউর রহমান চৌধুরী

দৈনিক মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী বলেছেন, 'যে দেশে সাংবাদিকদের শুধু প্রশ্ন করার জন্য চাকরি হারাতে হয়, সে দেশে আমরা মুক্ত গণমাধ্যম দিবস পালন করছি—এই বিচার কোথায় দেব?'
আজ রোববার (৪ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস-২০২৫ উপলক্ষে সম্পাদক পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি আরও বলেন, 'গণমাধ্যম ছাড়া গণতন্ত্র চর্চা সম্ভব নয়। আমাদের প্রশ্ন করতে দিতে হবে, লিখতে দিতে হবে, কথা বলতে দিতে হবে। তাহলেই গণমাধ্যম মুক্তির স্বাদ পাবে।'
সভায় সভাপতিত্ব করেন সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ও দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম। সঞ্চালনায় ছিলেন সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ।
সূচনা বক্তব্যে নিউ এজ সম্পাদক ও সম্পাদক পরিষদের সহসভাপতি নুরুল কবির বলেন, 'বিশ্বজুড়ে যখন ঘটা করে গণমাধ্যম দিবস পালন করতে হয়, তখন বুঝতে হবে স্বাধীনতা সংকুচিত হয়েছে। তবে বাংলাদেশে কিছু ইতিবাচক পরিবর্তনের আভাস দেখা যাচ্ছে। তবুও স্বাধীনতার সূচকে দেশের অবস্থান এখনও নিচে। রাজনৈতিক দলগুলোই গণমাধ্যমের প্রধান বাধা।'
তিনি আরও বলেন, 'আমরা দেখছি যারা আন্দোলন করেছে, তারা ১৬ ডিসেম্বর মানে না, নারী সংস্কার কমিশন মানে না—এর দায় কাদের? সংস্কারের ভিত্তি হবে স্বাধীনতা ও '৭১-এর চেতনা।'
আলোচনায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামসহ রাজনৈতিক নেতারা বক্তব্য রাখেন।
জোনায়েদ সাকি বলেন, 'গণমাধ্যম যেন একচেটিয়া মালিকানার হাতে না থাকে, সেজন্য নীতিমালা জরুরি। তবে এমন কোনো আইন করা যাবে না, যা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করে। সাংবাদিকদের জন্য এথিক্যাল জার্নালিজম নিশ্চিত করতে হবে। ভয়ভীতির কারণে চাকরি হারাচ্ছেন অনেকে। মব আক্রমণ বন্ধ না হলে রাষ্ট্রের অস্তিত্বই প্রশ্নের মুখে পড়বে।'
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও কালের কণ্ঠ সম্পাদক হাসান হাফিজ, প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, সমকালের শাহেদ মুহাম্মদ আলী, ইনকিলাবের এ এম এম বাহাউদ্দীন প্রমুখ।