সেপ্টেম্বরের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরে বিদেশি অপারেটর নিয়োগের পরিকল্পনা: শফিকুল আলম

বাংলাদেশের অর্থনীতিকে নতুন উচ্চতায় নিতে হলে বন্দরের দক্ষতা (ইফিশিয়েন্সি) বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
তিনি বলেছেন, বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় যেসব কোম্পানি বিভিন্ন দেশে বড় বড় বন্দর পরিচালনার অভিজ্ঞতা ও সক্ষমতা রাখে, তাদেরই দায়িত্ব দিতে চায় সরকার। অন্তবর্তীকালীন সরকার আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যেই এ বিষয়ে চুক্তি করতে চায়।
শুক্রবার (২ মে) বিকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
শফিকুল আলম জানান, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনূসের মূল লক্ষ্য চট্টগ্রাম অঞ্চলকে একটি ম্যানুফ্যাকচারিং হাবে পরিণত করা। এটি শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, পুরো অঞ্চলের ৩০ থেকে ৪০ কোটি মানুষের জন্য উপকার বয়ে আনবে।
বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরের নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনালে বছরে ১২ লাখ ৭০ হাজার টিইইউএস কনটেইনার হ্যান্ডেলিং হয়। সরকারের লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে এটি ছয় গুণ বাড়িয়ে ৭৮ লাখ ৬০ হাজারে উন্নীত করা।
এ লক্ষ্যে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা চলছে। চুক্তি হতে পারে ওপেন টেন্ডার কিংবা জি-টু-জি পদ্ধতিতে। যেসব কোম্পানির বিশ্বের ৫০, ৬০ বা ৯০টি বন্দরের অপারেশন পরিচালনার অভিজ্ঞতা রয়েছে, তাদের মধ্য থেকেই বাছাই করা হবে। কোনো সুনামবিহীন কোম্পানিকে দায়িত্ব দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, "বাংলাদেশের অর্থনীতিকে দাঁড় করাতে হলে বন্দরের কার্যকারিতা বাড়াতেই হবে। এতে বিপুল কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। অধিক পরিমাণে পণ্য রপ্তানি করতে হলে উৎপাদনের পর দ্রুত বন্দর ব্যবহার করে সেগুলো পাঠানোর ব্যবস্থা থাকতে হবে। বন্দর উন্নয়ন মানে শুধু বন্দর নয়, এর সঙ্গে ইনল্যান্ড বা অভ্যন্তরীণ কাঠামোকেও সমন্বিতভাবে উন্নত করতে হবে। তবে প্রথম ধাপে বন্দরকেই কার্যকর করতে হবে।"
বিদেশি কোম্পানিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার বিষয়টি দেশীয় কোম্পানির প্রতি অবিচার কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, "দেশীয় কোম্পানিগুলোর বড় বিনিয়োগের সক্ষমতা নেই। আমরা বিশ্বের প্রতিষ্ঠিত কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা করছি, যারা বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ নিয়ে আসবে।"
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ এবং সাধারণ সম্পাদক সালেহ নোমান।
উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, "যদি কোনো দেশীয় প্রতিষ্ঠান মনে করে তারা এ কাজের যোগ্য, তাহলে তারা সরকারের কাছে প্রস্তাব নিয়ে আসতে পারে।"